ইন্দ্রাণী
বিশ্বাস মণ্ডল
রোজ
সিটবেল্ট বেঁধে ওপর থেকে তোমাকে
দেখলাম
তুমি আলোয় সেজেছো কথামালা
তোমায় ধরতে গেলে বর্ণ বিছোতে হয়
আর হল না পূর্ণ ষোলোকলা।
আকাশ থেকে আকাশ দেখেছি রোজ
ওপর থেকে তোমার জলের স্রোত
সবই আমি হেলায় করেছি পার
ওড়ার পথে স্বপ্ন আসে আবার।
মেঘের রঙে তোমার মুখ ভার।
এসেছি তাই তোমায় নিতে খোঁজ
সাইবেরিয়া-ইরাক-ইরাণ বেয়ে
মেঘের ভাঁজে আলোয় চেয়ে চেয়ে
আর হবে না, তোমায় দেখবো
রোজ।
বর্ণিল
গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে নামে সংশয়
সোনালি বিকেল ভেজে শরতে
কংক্রিটে ঝরে পড়ে শিউলি
কানে ভাসে বানভাসি মহালয়।
উঠোনে নিকোনো আলপনা
ময়দানে ঘোরে ছেঁড়া জামা
খিদের মুখেও ফোটে কাশ
জলে গুলে রাখি কল্পনা।
নিথর আলাপ জমে জমে
কালও ছিল দিন ফুলে ফুলে
আজও উমা আসে প্রতি ঘরে
জীবন পড়েনা তবু সমে।
শিশিরের জলে লেগে পঙ্কিল
ব্যথাগুলো হোমানলে জ্বলছে
সুখদাং বরদাং বরাভয়
পটুয়ার টানে হোক বর্ণিল।
বসন্ত পঞ্চমী
অনেক ভিড় ঠেলে শুধু তোমারই জন্য
শরীরে তাপ, মনে উষ্ণতার
অরণ্য
ধুলো মেখে প্রেম ছুঁয়ে আসিনি
হারতে
আমি এসেছি, ভালো হত যদি
তুমি আসতে।
আনন্দ-উতল হাওয়া, তোমার যেন
কোন স্টল?
ঘাম মুছি, মনে করি,গলায় ঢালি
জল।
মাইক ডাকছে ' দেখা করুন ' হারিয়েছেন যারা
যাব নাকি খোঁজ নিতে, বাড়ছে বেদনার
পারা
হ্যালো শুনতে পাচ্ছো?
ভুলেছি স্টল নম্বর
কার এত তাড়া, পায়ে দিল
পাড়া লেখক না বর্বর?
এসবিআই-এর কাঁচের দরজা দিয়ে দেখি
ভেতরে জ্যোতিষ্ক
কথা আসে কানে, বুঝি তার
মানে। বোকাকে বানায় কনিষ্ক।
হঠাৎ পড়ল মনে, তোমার লেখনী ছুঁয়েছে
ভাঙা টেবিল
তবু তুমিতো আছো বসন্ত পঞ্চমীর
মিছিলে সামিল।
সিকিম থেকে
অনেকদিন মেঘ এসে বসেনি
তোমার উঠোনে।
তোমার যাবতীয় ক্ষোভ, প্রেম
পুঁটলি করে বুকে বেঁধে চলেছে
কোনও অজানা ঠিকানায় উড়ে উড়ে।
তোমার হাত-বাক্সে রাখা
অনেক চিঠি।
তোমাকে লুকিয়ে অনেক খুঁজেছি
পাইনি আষাঢ়স্য প্রথম দিবসের
প্রেমকথা।
মেঘের কাছে আমি চিঠি লিখে
পায়রা উড়িয়ে দিলাম।
তুমি তাকে সাহায্য করে
তোমার শরীরে শরীর মিশিয়ে
ঠিকানা লিখে দিও।
মেঘকে আমি সিকিম থেকে
নামিয়ে রেখেছি।
শুধুই গোলাপ
জানো কি কেমন লাগে গোলাপ কাঁটা
লাগলে পড়ে
শ্রাবণ চোখে লাগলো যে আজ বসন্ত
রে
খোঁপায় আমার আগুন ফাগুন পলাশছটা
আকাশে আজ ছড়িয়ে দিলাম সকল ব্যথা
থাকনা দুরে ভুলের খাতা, গদ্য জীবন
একটি গোলাপ দিলাম না হয়, কি হয় এমন?