শর্মিলা
ঘোষ
গণদেবতা
প্রদীপের তলার কালিটুকু দিয়ে
এঁকেছি ঈশ্বরের পদচিহ্ন,
জরায়ুতে ডালিম রঙা পদ্ম
সমস্ত দেহ জুড়ে মঙ্গলচিহ্ন
তবুও খিদের আধপোড়া রুটি
সেঁকে ফুটপাত,
ফেরেস্তারা হাঁটে ক্লান্ত অবসন্ন
খিদের ঈশ্বর খালি পেটে চুলে বিলি
কাটে ,
আর বারুদ বুকে নিয়ে মানুষ
জপযন্ত্রের যাঁতাকলে
ফাঁদ পাতে ।
কুলি কামিনের ভাষা বোঝার জন্য
গণদেবতা সৃষ্টি করেনি কেউ!
তাই কাঁটাতার ঘেরা পৃথিবীটা
অন্তঃসারশূন্য রক্ত মাংসের
শিলালিপি;
পর্যটক ঐতিহাসিক মূল্য নিয়ে
চিন্তা করে,
কবি পরমাণু প্রজন্মের ভবিষ্যত
লেখে ।
বর্গক্ষেত্র
অপ্রকাশিত থেকে গেছে
সব বেদনা ,
অপ্রসারিত হয়েছে আনন্দ
তবুও কবিতা যাপন
রঙিন সুতোর মতো মাঞ্জা দেওয়া
কবিতা,
যে কবিতা ধারালো তীক্ষ্ণ
বুকের তীরের মতো বেঁধে !
তবে কি প্রেম ছিলনা কিছু!
ছিল তো সমস্ত ধমনী জুড়ে
একপক্ষের আবির রঙা
বিশ্বাস ,নিটোল গাঢ়
অন্যপক্ষে শুধুই চোরাস্রোত
যতবার ফিরে যায়
হৃদয়ের বর্গক্ষেত্র ছোট হয়।
অশ্বমেধ
সমস্ত রক্তদাগ মাড়িয়ে চলেছি
অশ্বমেধের ঘোড়া নিয়ে
অসংখ্যবার আড়াই ঘরের
চাল দিয়েছি ,
কিছু স্বপ্ন লাগা গুঁড়ো কাচ
রঙিন হয়ে বাতাসে ভাসছে
আমি জয়ী হবার আশায়
লাগাম ধরেছি শক্ত করে
সীমান্ত পেরিয়ে পৃথিবীর একপ্রান্তে
দাঁড়িয়ে আছি
মহাশূন্যের ছায়াপথ ধরে হাঁটবো ,
আমার অশ্বমেধের ঘোড়া
সাদা কালো ঘর মাড়িয়ে
গ্যালাক্সি ভেতরে সৃষ্টিতত্ত্ব
খুঁজবে;
আমি তখনও লাগামটা ধরে রাখবো
দুহাতে শক্ত মুঠোতে
একা ........
ইচ্ছে
আমার ভেতর কুন্ডলী পাকানো ইচ্ছে
গুলো
দরজা খুলে সামনে দাঁড়ায়,
আমি বাঁশিওয়ালার বাঁশি শুনি,
প্রতিটা রোমকূপে জমাট ইচ্ছে
বাসা বাঁধে;
সেই বাসার জানলাগুলো ভারী পলকা ,
রোজনামচার হাতকড়িটা চাটাই পাতে ;
আর ইচ্ছেগুলো ফুড়ুৎ করে দিগন্তে
মেলায়।
ভালো আছি
বিষাদকে গুলে খেয়েছি
কিছু ধার করা শব্দ দিয়ে ,
কেমন আছো!
উওরটা তৈরি ছিল ভালো আছি,
যতটা ভালো থাকলে আপনি
দুশ্চিন্তায় থাকেন ততটা আর
ভালো থাকা হলো না বোধহয়,
আমি বেঁচে আছি অক্ষত,
ছাইয়ের স্তুপ থেকে নাভি খোঁজার
বিষন্নতা আমাকে এখনো গ্রাস করেনি,
আমি চক্রব্যূহে আছি;