তাপসকিরণ রায়
ইতিহাস
অতীত হয়ে যাচ্ছে
সমস্ত টোকা মারা শব্দ গুলির অবস্থান,
সরে যাচ্ছে সময় ও তার গভীরতার মাপদন্ড--
ধনুর টঙ্কারে উঠে আসছিল সে সব ঐতিহাসিক যোদ্ধার দেহ
সাজিয়ে সাজিয়ে অবন্তীর ইতিহাস জুড়ে নিচ্ছিলাম।
হস্তিনাপুর থেকে এক হাতির জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল,
অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়াগুলি ছুটতে ছুটতে
আজ তারা বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
এই তো তোমার দরজায় যে কড়া নাড়ছিল
সে আজ ইতিহাস হয়ে গেছে।
সিপাহী ঘোড়ার
দৌড়
এখনও সিপাহী ঘোড়ার দৌড় চলছে,
হ্রেষাধ্বনি আর তরবারির ঝনঝনিতে মাঝরাত জেগে উঠছে।
তুমি দেখো, কত না গুপ্ত মন্ত্রণার বাঞ্ছিত জীবনগুলির
নামহীন মস্তক মাটিতে লুকিয়ে আছে !
তীব্র কোলাহলগুলি সরে যেতে দেরি হচ্ছে,
তীব্রতার তারতম্য ততটাই ধরে রাখছে মন
যতটা তোমার প্রত্যক্ষ--
এইমাত্র যে আপেল টুক করে ভূমিষ্ঠ হল--
মাতৃ-জঠর এখন শূন্য--
আগামীর একটা আগুন কখন যে ভরে নেবে তাকে
সে উঠে আসবে জঠর ভেঙে
সে দাবি করবে তার সমস্ত কেড়ে নেওয়া সামগ্রী,
পাহাড় ভেঙে ভেঙে উঠে আসবে রক্তমাখা সে তরবারি--
সে প্রাচীন ধ্বজা, নতমস্তক নিঃস্ব প্রবর, ঋত ঋষিদের দল।
রক্ত গোলাপ
ভালবাসার একটি রক্ত গোলাপ ছিল কাঁটার বিরহ মাঝে তুমি বেঁচে আছো
আমার নৈকট্যে তোমার মৃত্যু হয়, প্রতিদিনের ঘেঁটে যাওয়া একটা জীবন--
সাঁঝ ফুলের মত ভালবাসা মরে যায়।
অংকুর
তুমি উড়ে যাচ্ছ, অন্যদিকে কবিতার ভাসান হচ্ছে,\
এক প্রেমিক কবির বিরহে পাতা পাতা অশ্রু জমা হয়ে গেলো,
আর সে অশ্রুজল মাটির সান্নিধ্যে এসে
বাতাসের সংস্পর্শে আবার অঙ্কুরিত হয়ে গেলো।
শরীর বিলাস
ধরি বাস্তবে তুমি প্রেম ধরে আছো, প্রেম মানে
শরীর বিলাস,
চিবুক ছুঁয়ে আছো, গভীরতার স্পর্শ খানিক যদিও পেলে,
তবুও ক্ষণকাল পরে দেখো, চকমকি ভাসে ডুবে গেছ তুমি,
সেখানে স্বপ্নাতুর দৃশ্যগুলি জীবন্ত হাত-পা নাড়ার মত
অন্য এক বাসনাঘর।
বস্তুত মগ্নতায় ডুবে থাকা,
শুরুর শূন্যতা
ভেঙ্গে রং
জন্ম নেয়, পাতার সবুজে তোমার বিবসন,
যখন কিছুই ভাবনা নেই--স্খলন পুলক ছেড়ে তুমি বাতাসে ভাসছ।
ভাসছ, ভাসছ, জীবনের আরও কিছুটা সময়, তোমার ভেসে যাওয়া।
পৃথিবী, তুমি আকাশ
হয়ে গেছো
বারবার একই কথা, আবাহন ও বিসর্জন হচ্ছে দেখো।
ক্ষণ কারো ধরা নেই, তাই বারবার অন্বেষণ, এই খুঁজে ফেরা,
ওমের আলাপে কিছু ভালবাসা আছে,
তাপ উত্তাপের মাঝে পলকপাতহীন--
সমগ্র পৃথিবী, তুমি আকাশ হয়ে গেছো,
বাস্তবে এক আকাশ পরমায়ুতে আমরা প্রবহমান মিশে আছি।