মতিউল
ইসলাম
মুক্তির দৌড়
পুরুষ নয় মানুষ হতে চেয়েছি সকাল
সন্ধ্যা,
হিন্দু নয়, মুসলমান নয়, আমি তো
রাত জাগি নিজেকে জানার জন্য,
কামনা বাসনার আগে আমি খুঁজেছি
বোধ.
তবু বেলাশেষে আমি ধর্মীয় জালে
পৌরুষত্ত্বের শৃঙ্খলে বন্দী
ধর্ষকের সৎভাই.
সমাজ সেঁটে দিয়েছে তকমা,
নম্বর ঘাড়ে নিয়ে ছুটছি
অবিশ্বাসের কফিনের দিকে,
পুরুষ নয় নারী নয়
আমি জড় হতে চলেছি
মুক্তির জন্য.
ভালোবাসা
ভালোবাসলেই রূঢ় কথা বলা যাবে না,
কষ্ট দেওয়া যাবে না এমন নয়,
ভালোবাসলে চাঁদ তারা নদীর স্রোত,
এমনটি ও লেখা নেই প্রেমের সহজ
পাঠে।
চোখ কে পটল আর মুখ কে পানপাতা
চুলে আকাশ, হাসিতে ঝর্ণা,
না ওরা ভালোবাসেনি কখনোই।
ভালোবাসা আর বাস্তবের মাঝে যারা
চিনের প্রাচীর তোলে
তারা আর যাই হোক প্রেমিক নয়।
ভালোবাসা হলো কষিয়ে ঝগড়া করে
মনে মনে কষ্ট পাওয়া,
কিন্তু সেটা প্রকাশ পাবে না
কখনোই,
ভালোবাসা হলো ই এম আই টা বাকি
রেখে
আটপৌরে গহনা,
ভালোবাসা হলো তুমি আমি ঠিক যেন
আদা আর কাঁচকলা।
খোঁজ
শতছিন্ন পোশাকের মতো ছিন্ন তোমার স্মৃতি,
নষ্ট জন্মের মতো কবেই হারিয়ে
গেছো
ডাস্টবিনের অন্ধকারে,
এলোমেলো বাতাসে ঘুরপাক খায়
পুরোনো
প্রতিশ্রুতি.
বসন্তের বেহায়া কোকিল নষ্ট মেয়ের
মতো
খরিদ্দার ধরার বৃথা চেষ্টাই রত,
বন্ধ্যা পলাশ শিমুল পারে না নতুন
প্রানের
সৃষ্টি করতে.
বসন্ত বন্দী হয়েছে গ্রীষ্মের
হারেমে.
তবু হৃদয় খুঁড়ে ভালোবাসা জাগাতে
চেয়ে
উঠে আসে কিশোরীর লাশ,
আবেগের কঙ্কালে ঘুণ ধরেছে কবেই,
আবির আর সিঁথির মাঝে আজো সিঁদুর
ব্যবধান গড়ে সীমান্তের প্রহরী
মতো.
তবু কিছু পাগল তাকে খুঁজে চলে
বর্ষা আর শরতের অভাবী সংসারে,
বিস্মৃতির অন্ধকারে হয়তো এখোনো
...
আইনের ফেরে
নদীটা কখনো মেয়ে কখনো অভিমান,
তিরতিরে জলে খেলা করে হাজার
স্বপ্ন,
প্রতিটি ছোট্ট স্রোতে সমুদ্র
মাখার ইচ্ছে
নদীটা কখনো মেয়ে কখনো চুপকথা।
পাগলী নিজেও জানে কি
সমুদ্রের নোনাজলে হাজার নদীর
সলিলসমাধি,
বহুগামীতাটা কখনোই পুরুষের
একচেটিয়া নয়,
সমুদ্র কখনোই কোন নদীকে আহ্বান
করেনি,
সমুদ্র চরিত্রহীন হয়েই রয়ে গেল।
বৃষ্টি
মতিউল ইসলাম
প্রশ্বাসে ঈশ্বর, নিশ্বাসে
শয়তান,
আবেগে জড়িয়ে আছে কামনায় বিষ,
নিয়নআলোয় অপ্সরার মোহময়
বিভাজিকা।
গ্লাসের শীতল পানীয়তে
মর্ত্য থেকে স্বর্গের প্রলোভন।
প্রতিমূহুর্তে আধুনিকতা খাচ্ছি
চিবিয়ে,
আঙ্গুলের ফাঁক বেয়ে ঝরে পড়ছে
উচ্ছিষ্ট রুপী হাজার কবিতা।
তোমরা যাকে বৃষ্টি বলো।