রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৮

পৃথা রায় চৌধুরী



পৃথা রায় চৌধুরী

কুয়াশা ধরে রাখি

শুনলাম অনেক ভাঙ্গার গল্প ছিলো গতরাতে
সেখানে ছিলো দগদগে নখের আঁচড়
তোমার স্নান উঃ বলে ওঠার কালে অভিশাপ এলো


ভাঙ্গার রাতশব্দ গিলতে গিলতে চেয়ে নিলে আবৃত্তি
দরাজ 'আমি আর উইলিয়াম' দিলে লাল ওড়নায়
সেখানে প্রশ্নসুতো... এমন সে শোনে?


ঘৃণায় পড়িনি সে বই জেনে উপড়ে নিলে দাতার ঠিকুজি
ঝড়ের বেগে শিখে নিলে শিশু মনস্তত্ত্ব
বিশ্রামের প্রাচুর্যে টেনে নিলে বিভাজিকার প্রশান্তি


ভুলে গেলে পোড়া দেশলাই নেভা ধোঁয়া
বিবির শীতের মোজা
খেয়াল করে বহুযুগ পর লক্ষ্মীঝাঁপিতে এলো তিলসঞ্চয়।





ডায়েরি লিখি না

পুচকি পুচকি পাতাতারিখ
জমানো রাগ নাকি লিখে রাখতে হয়


প্রিয় ডাক সবার নয় বোঝাতে
একই সুরে সবাইকে প্রিয় ডাকি?


সবার সামনে তোমার ভাঙ্গা চলে না
আমার জীর্ণতা তাই সযত্নে পর্দানশীন


আমি ধানজমি
কখনো আপেল বাগিচা
হই আঙ্গুর-খেত...।





না-ইতিহাস তোমার প্রিয়

যে দেওয়াল ধরে টলমল উঠেছি
তা ভেঙ্গে ফেলা বা না ফেলা,
ভুলে গেছি ভাবতে
অপরাধ


খুঁড়ে ফেলো সে দেওয়ালের ভিত
যা যা দেখা দেয়নি আমার ভ্রষ্ট চোখে,
ইচ্ছাকৃত


সেখানে নিষিদ্ধ চেপে রাখা বিকৃতি
রোগগ্রস্ত ঘৃণ্য কোনো লিবিডো খুঁজে
হ্যাঁচকায় তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে
দেখাও, ঠিক কতোটা পচে গেছি অজান্তে


প্রাচীনের পরের আমল থেকেই থেমেছি
ছায়াবিহীন তুমিগাছের তলায়


পঙ্গু জানলায় রেখো প্রাচীনেরও আগের আমাকে।





স্থায়ী নিবেশ

আপাদমস্তক ভিজে যাচ্ছি একই বৃষ্টিতে
হঠাৎ ধারা বদলে ফেলতে বললে কি সহজে বদলে যায়
তামাদি নদী, গাছের অনাগত পাতা বা স্নেহের আলিঙ্গন?


আমার শহরে একই নামের বৃষ্টি আসে
বুড়ো বটের ঝুরি বেয়ে বা বক্স জানলার গ্রিলে
গড়িয়ে পড়ে ধূসর রোমাঞ্চ


কখনো অবাক বলে ওঠো,
অন্য ধারাকে একটিবার অন্তত ছুঁয়ে দেখো
যারা গল্প শোনার ভিড় জমিয়েছে, তাদের দায়ে


এপারে গুজব ফিসফিস একান ওকান
ওদিকে নির্বিচারে মেলার মাঝে চেঁচিয়ে বলেছি,
তকমা দেবার আগে হিম্মৎ দেখি তোমাদের!





নিম্নচাপ ঘনীভূত

রোববার যখন বললে, আগামী দুদিন বানভাসি
আকাশের দিকে চেয়ে ঝগড়ুটে ভঙ্গিতে বললাম
তবে ছাদ এক হলো না কোন ষড়যন্ত্রে?


আবার, তোমার চারপাশেই ঘুরে ঘুরে
সাজালাম কর্পূর আঁচ, জ্বর নিলাম নিঃশ্বাসে


ভোরের আগমুহূর্তের ভয়কালোয়
একা জ্বলন্ত দাবিদাওয়ায় নেমে এলাম
কর্পূরদানির গর্ভে অঙ্গারে মন্ত্রতন্ত্রে


এদিকে মেঘ জমলো না, তুমি আগুন হলে...
আমাকে 'ভালোবাসি' বলা এক ধূসর পায়রার বুকে
বুনে দিলে বিশাল শরবন।