পল্লবী দাস
জন্মছবি
ভাগ্যিস ,মেয়ে
হয়েছি, রঙ
বানাতে পারি, গোলাপী
আকাশি ছাই রঙ,
রঙ ছড়াতেও পারি, বেরং আকাশে -
নোনতা জল শুকিয়ে ভাঙ্গা হাঁড় জোড়া লাগাতে পারি
রূপকথা সাজিয়ে
প্রদীপ জালাই, তোমার অন্ধকূপে,
তোমার বেমিল বাতাসে, তোমার ধূসর ক্যানভাসে
মায়ের মায়া, স্বর্ণখামার ছেড়ে তোমার মায়ায় বাঁধি, অনায়াস ;
একটা ভারী হাতুড়ি, রোজ কপালে মারি, ভাত গলানোর দায়ে,
ছিবড়ে ছেঁড়া নীতিবাক্য আওরাই, ময়লা মালা গাঁথী,
টুঁটি চেপে রাখি, তবুও সটান সোজা আমার মেরুদণ্ড
কোনো কমতি নেই, চিতাঘাট অবধি -
নিজের তেজে ঘরে মশাল জ্বালাই,
ভাগ্যিস, জন্মের আগে শ্বাসরোধ হয়নি!
তর্পণ
জ্বালিয়ে দিয়েছি --
হাঁড় পাঁজর স্বপ্ন তারা, সব জ্বালিয়ে দিয়েছি
কই, নেভাতে এলেনা যে?
ছাই নিলে ঠিকই, তর্পণে ভাসাবে বলে --
কাঁচ বেয়ে জল আর মাটি ছুঁতে দেইনি,
তুমি যে মুক্তি চেয়েছিলে --
অনুভুতির ঊর্ধ্বে!
ক্ষত
ক্ষত সারানোর সন্ধ্যা ঘনিয়ে যায়, রাত ঢেকে ভোর হয় -
নিকোটিনের প্রলেপও স্তরে স্তরে লুকিয়ে পড়ে -
জানালা তবুও খুলা থাকে,
নিঃশ্বাসের ভাঁজে ভাঁজে প্রেম যে তপ্ত, অন্তসলিলা;
প্রতিটা হৃদ্স্পন্দন আঙ্গুলে আঙ্গুলে জড়ানো,
তবুও আবেগগুলো বড্ড জেদি, পুরোনো ধংসস্তূপের মত -
লাল-নীল সংসারের বিশ্রী স্বপ্ন আঁকে,
নিজেকেই চিবিয়ে সার বানায়;
এ ক্ষত যে সারবার মত নয়!
ছাইপাশ
রাত বাড়লে শোবার ঘরের দেওয়ালটা স্থিত হয়,
এক দৃষ্টিতে দেখি,
কবিতারা ঘুরাঘুরি
করে, খামবন্দি
করি এক এক করে,
আর প্রতিটা খামকে
করি বাক্সবন্দি -
তারপর আবার রাত আসে, শোবার ঘরের দেওয়ালের বাপাশে!
ছন্দবাণী
জানিনা আর কত রাত পেরোলে না গিলতে পারা কষ্টগুলো গলায়
আটকাবে না,
কত কিলোমিটার গেলে স্মৃতিগুচ্ছ পিছু ছাড়বে
কতটা কাঠ পোড়ালে মন চিতায় দাউদাউ করবে
সত্যি জানিনা -
ইচেছর বিকেলে পাখি অল্পই উড়ে, ডানা মেলা যে
ব্যয়সাধ্য,
ন্যাড়া শীতে চুপ থাকার উষ্ণতাও হিমাংক ছাপিয়ে গেছে,
আজ বড্ড অনিয়মিত
আমি, সবটুকুই
ঘন অন্ধকার;
ক্যালেন্ডার এঁকে হিসেব রাখছি, অনেকগুলো ছন্দ মেলানো বাকি, কবিতায় সুর ভরা বাকি -
জানিনা আর কত ডুব দিলে বিষশুদ্ধি হবে, সূর্য উঠবে;
সবটাই অদৃশ্যমান, আকস্মিক!