রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৮

শাহানারা ঝরনা



শাহানারা ঝরনা

কেউ বুঝিনা

স্বপ্নগুলো আগুন রোদে পুড়ে পুড়ে হয়যে তামা
ভাবান্তরের ইচ্ছে নিয়ে কেউ লেখেনা হলফনামা

তেঁতুলগাছে পায়রা নাচে হাতছানি দেয় কিশোরবেলা
মইষালে গায় বাউল সুরে বুকের ভেতর স্মৃতির খেলা

সপ্তডিঙায় অভিসারে কোকিলা যায় কোন সে দেশে!
গুণ টানেনা পবনমাঝি নদী কাঁদে কাঙাল বেশে

জলসাঘরে সানাই বাজে নর্তকী গায় বিষাদগীতি
আর কতকাল কাটবে সময় নিয়ে এমন বৈরি নীতি?

মেঘবালিকা কতোই কাঁদে জমিন তবু খরায় পোড়ে
বোধবুদ্ধির রঙমহলে অন্ধ - বধির স্বপ্ন ঘোরে

ভাবুকজনে ব্যস্ত খুবই কাটায় নিয়ে দৈববাণী
মূর্খগুলো সুযোগ বুঝেই দিচ্ছে পেতে আসনখানি

বোকাবাবু রাত-বিরাতে পাল্টে স্বভাব হচ্ছে রাজা
অতি চালাক মোহের বশে ধরা পড়ে পাচ্ছে সাজা

বুদ্ধিজীবীও যাচ্ছে ভুলে মানবতার সহজ রীতি
সকলখানেই চলছে কেবল ইচ্ছেমত স্বজনপ্রীতি

পাচ্ছে যারা তাদের শুধু পাওয়ার আশা বাড়ছে আরো
মানবতার দরপতনেও নেই বুঝি তাই ভাবনা কারো

বিদ্যা ভরা মেমোরিতে সেভ করা নেই বোধের আলো
লোভের ধোঁয়ায় অন্ধ সবাই, কেউ খুঁজিনা মন্দ ভালো!





জীবনের ইতিহাস

বৈকালিতে বসে দেখি পড়ে আছে অপার খেয়াঘাট,
ধীরগতিতে রাত নামে, বন্ধ হয়ে যায় নিয়তির কলাপসেবল গেট
অনেক কিছুই কিংবদন্তি হয়,
শিরোনামহীন পড়ে থাকে মুর্খামির জীবন পঞ্জিকা

হৃদয়ের দূষণ রোধে কেউ যদি হয় মনস্তত্ত্ববিদ
দলছুট মেঘের মত আমিও হারিয়ে যাব একা
বস্তুত অধনমিত কোন অপসিদ্ধান্তের কারিক্যুলাম
হীনমন্যতাকে বর্ধিত করে আজীবন!
ট্যুরিজমবিদ্যার আপগ্রেড পাণ্ডিত্যও ঢেকে যায় খোলসের আবরণে -
লোপ পায় মনিটরিং ক্যাপাসিটি

যখন কেউ মধ্যবয়েস পেরিয়ে পৌঁছে যায় বার্ধক্যের ঘাটে
সুনসান নীরবতায় পোড়ে শেষকৃত্যের পাণ্ডুলিপি
সংবিধিবদ্ধ নিয়তির বিজ্ঞাপন বারবার পাল্টায় রঙ
মায়ামঞ্চের উপঢৌকন নিয়ে ভাবের মানুষ চলে যায় অনেক দূর
আমিরি আভিজাত্য ধারণ করে দেখি
মননের সেন্সর বোর্ডও দুর্নীতির আওতামুক্ত নয় ---!
লেখা হয় তবু জীবনের ইতিহাস
পুরোহিত আবহেই করি সেলফি সমাবেশ!





ইচ্ছের অজান্তেই

কী আছে আর কী যেন নাই, বলছে কে যে হায়!
নাই কুশিলব, নাই বিনোদন, স্বপ্ন মরে যায়

হচ্ছে নিলাম আঙুর বেদন, লজ্জারাঙা টিপ
নাবিক বিহীন যাচ্ছে জাহাজ নিঝুম কোন দ্বীপ

মনের মাঝেই স্বর্গ নরক সাধক পাপীর বাস
লাভ লোকসান হিসেব তারাই করছে বারোমাস

সুখমহলের মালিক বোঝে সুখের কতো দাম
তার সঙ্গেই সখ্য পেতে বাড়াই নিজের নাম

আমি অবোধ -তুইও কী তাই! আয় বেঁধে নিই জোট
শুদ্ধ হতে আয় পরে নিই, শুদ্ধি মোহর কোট

মন অভিধান না যদি হয় সঠিক সমন্বয়
দেহঘড়ি ঘটায় তবে বৈরি বিপর্যয়

প্রাণ ভোমরা খেলছে পাশা চক্ষু ভরা জল
অন্তরেতে বিষাদ নদী বইছে ছলাৎছল

যেতে হবে একদিন ঠিক, সত্যটা তো এই
দিন ফুরোলেই হারিয়ে যাব ইচ্ছের অজান্তেই!!





আমাদের ভুলগুলো

শব্দেরা বড় বেশি ঘূর্ণায়মান এখন প্রচণ্ড আর্তি নিয়ে
বসে আছি  নিরক্ষবলয়ে অভিযোজনের পদ্ধতিগুলো নিরঙ্কুশ হলে
মরুময় জীবনও একসময় পাল্টে যায় আত্মবেদীর মেরুতন্ত্রে
সার্থক হয় নকশাজীবন
বিধিবদ্ধ সময় পরিক্রমায় যুগযন্ত্রণার প্রভাব পড়লেও, শেকড়ের
অধ্যাবসায় ভুল হবার কথা নয় আমার  পূর্বপুরুষেরা শুদ্ধ পথের
ভাঁজ ভেঙে আজো অপেক্ষায় থাকে সার্বভৌম ইচ্ছের  সুতন্বী ফন্টে
গুচ্ছকথার পদাবলি সাজাই, ভুলে যাই রঙধনু আকাশের নিসর্গতা
সংবিধিবদ্ধ আদর্শের ভেতরেই যুগোপযোগী নিরীক্ষণ চলে
আমরা হই আত্মীকরণ গ্রহের পুঁজিবাদী অধিপতি
আমাদের ভুলগুলোও একদিন বিপ্লবী হয় চৌঘুড়ি বাস্ততায় কাটে
স্বপ্নদ্রষ্টা গেরস্থালী প্রহর
ঢেউময় জ্যোতিষীবিদ্যা কখনো মুছে দেয় চারুশিল্পের ছাপ
কতোকী অসংগতি নিয়েই বেনোজল যাত্রা আমাদের!
দায়বদ্ধতার নাফ নদী পার হয়ে ছুটে যাই দারুচিনি দ্বীপে
চিরায়ত ব্যবচ্ছেদ নিয়ে জাগতিক  বিনিময় করি
আয়ুজীবীর সেগমেন্ট বড় বেশি ক্ষত করে মন
আবেগের  রদবদলেও কাটেনা বনেদি স্থবিরতা!





কবি তুমি

কবি তুমি কবিতাকে ছুঁয়ে দেখ, নিসর্গ রাত দেবে  প্রজাপতি আদর
বুকের বাঁশি শুনে যদি ফিরে যায় বিরহী সময়, নর্তকী আবেশে গেঁথো
বুনোফুলের মালা কী লাভ জ্যামিতিক ভালবাসার সনাতনী প্রথা মেনে?
যখন প্রথাগত রুচি বৈরাগ্যে ভুগি, অকস্মাৎ পাল্টে যায় কর্মজীবী জীবনের
রূপরেখা হিম হিম কর্মসূচির আওতাভুক্ত হয় অনেক কিছু
 শীতের চাদরে ঢাকা মানবিক ওম, চলে যায় নষ্ট মানবতার দখলে
অপার মানুষ হয়ে নিঃশব্দে বসে দেখি আগামির ইতিহাস