শ্রাবণী
সিংহ
সুখপাখি
চারকোনা বর্গক্ষেত্র
থেকে দেখি রুমাল সাইজের আকাশ---
নিত্যদিন জলভাত গেলার মত
এরও কোনো গল্প নেই।
জীবন মানেই কি বুজরুকি? মানি
না
অ-সুখেরও অসুখ হয়,
ব্লু -হোয়েলের নাম করে
কারা করে আত্মপ্রতারণা?
ভেবে পাই না।
ইন্সমনিয়া নামের এক আহত
পশু গজরায়
আঁচড়ে কামড়ে শেষ করে দেয়
রাতের জঠর,
সুখ নামের হরবোলা পাখি
ডেকেই যায় রিট্রিট্ রিট্রিট্
শহরের প্রাণকেন্দ্রে
বিজ্ঞাপণের মেয়েটা আজকাল
বাড়ি ফেরে না।
অথ জীবনপ্রবাহ
বিগত বর্ষায় চিনির বয়ামে
দু-চারটে মরা পিঁপড়ে ছাড়া
আর কোন হত্যা নেই আমার।
খুন-খারাপির থেকে
বহুদুরে হয় তল্লাশি,
নিজের সত্য ঢেকে
গালগল্পে পড়শীর মিথ্যে
বড্ড বেশী ভালো লাগে যাদের
যারা নীচু হয়ে
খোঁজে গোলাপের ভার্জিনিটি,
কচুরীপানার চাইতে কাদাজল
তাদের প্রতি আগ্রহ নেই
আমার।
শোক পেরিয়ে সান্ত্বনা, অতঃপর রাত্রিবাস আমার
শুয়ে শুয়ে চাঁদ রচনা করে
মসলন্দ মাদুরে...
ধনেপাতার সাথে কব্জি-ডোবানো লাল মাংস-রুটি,
আমার বিরহ ঘুম , তপস্যা,ব্রতী
রাত পেরোলেই
লক্ষ মাইল দূরে সুর্য
অনুকূল হাসে,
মঠের সকাল শুরু জীবনপ্রবাহে ...
ভোরজাগানিয়া গান
চন্দ্র- সুর্য গতি
পাল্টেছে অসংখ্যবার,
আর এক অগ্রহায়ণ নদীর চর
পড়ে,
তুমি প্রকৃতই তুমি
বালিশের কোল ভিজে যায়
যখন দেখি
রাতের হোয়াটস্ অ্যাপে
ভোরজাগানিয়া গান।
ভুল শোধরাতে এসো না
পুরনো ভালোবাসায় ফিরে
যাওয়া পাকস্থলীর অসুখের মত।
একদিন ভুল
যতিচিহ্নে
কাগুজে চিঠির বয়ানগুলো কবিতা হয়ে উঠেছিল,
সেই থেকে দূরেই রাখি কবি
ও কলম
বিজ্ঞজনের জ্যামিতি ও
ব্যাকরণ।
যদি পারো শূন্যস্থানে
বসো দেখি,
দুটি লাইনের মাঝে ফাঁক
রেখেছি যাতে আলো পড়ে।
তন্দ্রামগ্ন ঝুপড়িও জানে
কোলঘেঁষা মাঠের মগ্নতা।
হারানো স্বর
সব গল্পই ক্লিশে হয়ে ওঠে একদিন-----
পোড়ামাটি শহরের ভাঙ্গা
টিউবওয়েলের ক্লান্ত
শ্বাস পেরিয়ে যাচ্ছি...
পাথরের ফাঁকে সাদা বেলের
চারা,
ঘুটের প্রদর্শনী, গোবর-চোনা-
জাবনার কাঠের পাত্রে মুখ
ডুবিয়ে ধবলী গাই,
হাঁড়ির কালি দিয়ে দেয়াল
লিখছে হাফ নেকেড শিশুরা
এহেন দেয়ালশিল্পের ওপর
প্রাচীন কিছু মেঘের বায়নাক্কা।
ফেরিওয়ালা ডেকে ডেকে চলে
যায় লিচুগাছের আড়ালে,
আমজামকাঁঠালের মিশ্র গলি
বেয়ে শিশুরা দুপুরের কু-ঝিক ঝিক
মালগাড়ীটার ঔদ্ধত্যে ...
অপেক্ষায় পাথর ছুঁড়বে কখন
জড়ো করছে।
মনেহয় এ আধা শহর আমার
চিরচেনা, হারানো স্বর
খুঁজে পাই
মাটির পাতাল ডাকে।
আগন্তুক
সবারই একটা কুয়ো-চাঁদ
থাকে,
ঢিল ছুঁড়ে ছুঁড়ে তার
ভাঙ্গাচোরা দেখে
আশ্বস্ত হওয়া, কিঞ্চিৎ ...
অতঃপর নষ্ট সময়টুকু আয়ুতে বাড়ে,
গল্প উপসংহারে এসে
ঠেকেছে ...
কই আমার রাজকুমার তো এখনও এল না?
শীতের প্রাক্কালে
চলমান ঘুঘুডাকটাও বুঝি
ফাঁদ ছিল!!
কিংবদন্তী আলোয়
সরলরেখাটি পার হয়ে
ঘুম-ভাঙ্গা আমি শুকোতে
দিয়েছি নিজেকে বিছানা ও বালিশে
একচিলতে রোদ্দুর ফিক্
করে হাসে
পাটক্ষেতের আগুনে ধোঁয়ার
কুণ্ডলী,
কেউ নতুন গুড়ের পাটালী
চাইই-ই' বলে হাঁক দেয়...
সম্মোহনী!