রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৮

সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য্য




সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য্য

গাধার পিঠের সওয়ারিরা

একটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
মাত্রাবৃত্তে এসে
ক্রমশ ক্লিষ্ট
এই আকস্মিকতা কাটিয়ে
বাচ্চাটি যেদিন বেবুশ্যে মাতার
হাত ছুঁড়ে ফেলে দেবে ঘেন্নায়
ছুঁড়ে ফেলে দেবে তাঁর আনস্মার্ট ফোনটি
ধর্ষকপিতা বনে যাওয়া
হাঘরে হাড়হাভাতে হাঙর রূপের
বরাহনন্দন শ্বেতার ক্লেদাক্ত স্বামীর
চালাক উপহারটি-
সেদিন ওই জড়ুয়া ভাতৃযুগলের
মুখ লুকোনোর জায়গা
দেবে কি নীল স্যারের ছেলেরা?
শুনুন বন্ধুগণ,
জড়ুয়ারা অপগন্ড
জড়ুয়ারা যৌনভাবে অসৎ
জড়ুয়ারা অর্থনৈতিকভাবে চরিত্রহীন
জড়ুয়ারা মেয়ের বয়সী প্রতিবন্ধী মেয়েদেরও
অঙ্কশায়িনী করতে ছাড়ে না
যেমন শ্রমনা।
জড়ুয়াদের নামে তাই এফ আই আর অনেক
অন্তরা থেকে সুদক্ষিণা
শ্রমণাদেরও এই রাস্তা নিতে দেরি নেই
সাহায্য দেবে
কালিঘাটের দাদারাই
মানিক নয়নতারাদের
অনেক দায় নিতে হবে পূর্বপুরুষ - জীবনের
কান্নার মূল্যে ফেরৎ পাবে না কোনও বুলবুলি
তার ধানের হিসেব
চরিত্রহীন, ক্লীবকু ষ্ঠরোগী জড়ুয়া পুং বেশ্যাদের বলছি,
হ্যাঁ বলছি
শোনো,
ম্যাট্রিমনিয়ালের আইওয়াশ দিয়ে
আটকানো যাবে না
লবণহ্রদ থেকে দমদমপার্ক বা গোলপার্কের
শেষ ঠিকানা সপরিবারে
লালদিঘির পাড় ঘেঁষা
কোতোয়ালি হেডকোয়ার্টার।
হতে পারে সপরিবারে মহিলাদের
মতান্তরে পুরুষদের
টোপ দিয়ে কেপমারি,পকেটমারির
নয়াকৌশলের ট্যালেন্ট হান্ট
সৌজন্যে--ও'ব্রায়ান দের বোকা বানিয়ে
প্রশস্ত ভিভিআইপি পত্রিকার স্কুলগোয়ার্সদের ইংরেজী ট্যাবলয়েড
তবুও
একটা মারও আর বাইরে পড়বে না জেনো
বেচারি বুলবুলি,
শ্বেতার চক্রান্তের
এক ও একমাত্র দুধুভাতু শিকার।
বউকে কনফিডেন্সে নিয়ে
সোমদত্তর বিশ্বদরবার
আটকাতে পারবে না
তার ধর্ষক-মাধুকরীর শেষ অঙ্গসজ্জা
ধিক
ধিক তোকে
তোদেরকে
এবার আয় দেখি
কার পিঠে বসাবি আমূল
তোদের ভোঁতা তরবারি
শেষ আস্ফালনের?





একটি অসামাজিক উপস্থাপনা

মাঝদুপুরের খটখটে রোদ্দুরে
শাস্ত্রাণি অধিত্যাপি ভবন্তি মূর্খাঃর
স্বস্তিবচনে 'মহাস্থবির জাতক'
মাথা তুলে বলছেন
প্রলেতারিয়েতের বেবুশ্যেরা সাবধান
শ্রবণ অসুখকর ভাগের জটিল আবর্ত জুড়ে
কিন্তু মেঘ রাগ বাজছে
নিজ ও পর সম্বন্ধের ভদ্রতা ছাড়িয়ে
অধর্মের ধার্মিক উপস্থিতি
স্বৈরতন্ত্রের একমাত্রিক টানকে
রাজমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে আজ
হয়ত
একই আখরপত্রে আত্মজনএর আত্মহত্যা
একই জ্যামিতিক পথে
একইভাবে অসৎ উপস্থাপনায়
ব্রাত্যজনের রুদ্ধ সংগীত
পার হয়ে
একটি অসামাজিক উপস্থাপনায়





শব্দভ্রমণ

মনে তরঙ্গমালা ভাসিয়ে
শব্দে শব্দে যে ভ্রমণ
আমি তার সঙ্গে সহবাস
করতে করতে
ডাক শুনতে চাইনি তোমার
ডাক শুনেও ফিরিয়ে দিয়েছি
কাকাতুয়া ময়নামতীর
তীব্র আহ্বান

তরঙ্গের আবেগ
তরঙ্গের দোদুল
তরঙ্গের বেগবান ধ্বনি
তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে আগুন ধরায়
আমার
উত্তরের হাওয়ায়
আগুনের শিখা অপলক
সোনারঙা দুপুরে
স্বপ্ন ভাঙতে ভাঙতে জন্ম দেয়
নতুন শরীর
অস্থির হয়ে ওঠে চাঁদনি রাতের খোঁজে
রোজ

সমস্ত বাঁধন
পাথুরে জঙ্গলের শক্ত রশির
থেকেও অটুট রেখে
সঁপে দেয় নতমুখী টানে
জিভ থেকে ঠোঁট,
ঠোঁট থেকে শ্বাস ও
শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া খাদ্য নালী
লক্ষ লক্ষ বিরহী মৌ এর
হুল ফোটানো যন্ত্রণাকাতরতায়
সীমাহীন প্রক্ষাপটে
আরও দীর্ঘ,বেতস
গড়িয়ে নামতে চেয়েও লকলক করে ওঠে
শানিত ধাতব শরীরের লাখান

তোমাদের দাবার বোর্ডের মত
নক্সাকাটা আনন্দ-অলিন্দের রোদে 
লাল তুলতুলে লেপ,
তোমার রাঙাবৌদি ঝুঁকে থাকে
হলুদ কাগজ আর কলমে
চিঠিপত্র বিনিময়ের
নেশায় বুঁদ
আমার চোখের ভেতর সে দৃশ্য সিল্যুট
সিল্যুট তোমার উশখুশানিও

মাছধরা নৌকোগুলো ফিরে আসে বিহানে
গলুইয়ের দুলুনি টের পাই আমি
শব্দ হারানোর ভয়ে
আমার নিঁখোজ মাতাল মন ছুট ছুট ছুট,
অদৃশ্য রূপনারায়ণের বাঁকে
ফিরে আসা জলতরঙ্গ
বুক কাঁপিয়ে
আছাড়ি বিছাড়ি খায়
কাঁদে,
আমার ভেতরে
তিরতির ছড়াতে চায় চুম্বনের মত

তবু শব্দভ্রমণ জারি রেখেছি আমি
এ আমার নিজস্ব অর্জন,
আদেশনামা এবং প্রতিটি রাত্রিবাস




মহামানব

প্রতিটা নিরুদ্দিষ্ট ভোরের জন্য
রাত্রি উষ্ণতা মাখে
তৈরি হয়
বিপন্ন করে নিজেকে
পালক ছড়ায় রাজহাঁস
কূপওয়াড়ার ভোর রক্তমাখা
শিষ দেয় চা ওলা
এখন আর চা নয়
গোপনে ও প্রকাশ্যে রক্তের স্বাদই
পরমান্ন যোগায় তাকে
আবহে বিউগলে কান্নার সুরই একমাত্র
যাপন তার

ওই মহামানব আসে




ভাগ্যবান

এখন আমার আইটিসি সোনার নেই
রূপোলি কোলাঘাট নেই
অভীপ্সা নেই,,হিংসে নেই
অপমান ফিরিয়ে দেওয়ার বাসনাও নেই
অকারণ সোরগোল তুলে
প্রেমহীন প্রেম নিবেদনের
নৌটঙ্কি মহড়াও নেই
কারণ
আমি খুব দুর্বল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার
তকমা এঁটেছি গায়ে
নিজ উদ্যোগে
অচল পয়সার মত
অবাধ অনুযোগহীণ
নিপাট অভিক্ষেপে
স্থির
তোমাদের মুখোশে দাগ কেন
ভয় ছড়িয়ে
বিজয়ী মুকুটের ছায়ায়
প্রতিবিম্বের ঘোর দ্বিমুখী অবস্থানে


ভাষণ,অধিগ্রহণ সমাচরেৎ