বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
হাততালি
এই যে আমি এতক্ষণ ধরে বকছি
গান করছি, কবিতা পড়ছি
আর তোমরা চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়েছো,
কেউ হয়তো শূন্য সিলিং এর দিকে তাকিয়ে
প্রেমিকা কখন আসবে
ভেবে ভেবে আকুল হোচ্ছ
গলা শুকিয়ে যাচ্ছে
আমি এক কাপ চা দাবি করছি না
কপাল নেমে আসছে ঘামের নদী
আমাকে সরবত দাও এরকম কোন ইচ্ছে নেই আমার
জিভ সাদা কাগজের মতো খসখস করছে
তবু আমি এক গ্লাস জল চাইনি
শুধু হাততালিতে ভরিয়ে দাও আমার সমস্ত শুষ্কতা ।
বিপ্রতীপ
যুদ্ধের পক্ষে রোজ হেঁটে যাই নিরন্ন রাস্তায়
ক্ষুধার আকাশ ছুঁয়ে গর্জে ওঠে বোমা
ফুটপাথে শুয়ে থাকে ন্যাংটো দ্রাঘিমা
থালাতে ময়লা রুটি ছেঁড়াখোঁড়া, সাত
বাসি পরিত্যক্ত হাওয়া ।
আমি কি শান্তির পক্ষে কথা বলতে পারি?
শান্তি মানে স্থবিরতা, শান্তি মানে
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত
পাকা করে যাওয়া।
আমাদের যুদ্ধে নেই কালোদাগ
হাতের মুঠোয় ভর্তি স্বপ্নের কামান
ওদের যুদ্ধ মানে পুঁজির মহিমা , তাদের যুদ্ধ মানে মুক্ত বাজার
খোলামেলা করেকম্মে খাওয়া
বিজ্ঞাপন ক্রমাগত পণ্যের বারান্দা সাজায় ।
কেন এই ছদ্মযুদ্ধ ? কেন শুধু মুনাফার
খেলা ?
বাণিজ্যিক এই যুদ্ধ কান্নাজলে মুছে ফেলা নয়
যুদ্ধের বিরুদ্ধে হোক সত্যি সত্যি যুদ্ধের প্রস্তুতি
অন্নজল স্বপ্নের সংগ্রাম।
নিষেধরেখা
চারপাশে এ আমির আলিঙ্গন
টপকে যেতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ আয়োজন
ফিরে আসে ব্যক্তিগত জ্বর
স্বপ্ন ধার দাও তুমি সরোবর ,
বলে হাত পাতি যে তুমুল জলের বিভ্রমে
সে ও কোনো আমি , আমিই তো ,
উগরে দেয় আমার মতন এক প্রতিবিম্ব
অবিকল আমার মায়াবী ক্লোন
চৌকাঠে নিষেধরেখা অতিক্রমহীন ।