মণিজিঞ্জির সান্যাল
একজন সাধারণ নারীও
মায়ের কথামতো বাগান থেকে কুড়োনো ফুল
ঠাকুর ঘরে সাজানো স্তরে স্তরে
কোনওদিন হলদে কলকে , কোনওদিন রক্তকরবী
কখনও বা সাদা রজনীগন্ধা ।
চোখের সামনে ভেসে ওঠে বৃদ্ধ পুরোহিতের
দীপ আরতি , কর্পূর আরতি
বড় পদ্মফুল দিয়ে ক্রমে
শ্বেত চামর আরতি ।
একজন সাধারণ নারীও
নির্বেদ বৈরাগ্যের সন্ধান পান
শোকের সময় ।
হায় শোক ! হায় অনুভূতি !
সবকিছুই আজ
শুকনো হলদে কলকে , রক্তকরবী বা
রজনী গন্ধার মতো ।
কোনো কাজ নয় ,
কোনো কাজের মধ্যেও নয়
সমস্ত শূন্যতাকে সেদিন
নিজের উপস্থিতি দিয়েই ভরে তুলতেন
কোনো প্রিয়জন ।
আজ শূন্যতার কোনো অবকাশ নেই
অবকাশ নেই সেই শূন্যতাকে ভরার ,
প্রত্যেকে আছে তার
নিজস্ব শূন্যতাকেই সঙ্গী করে ।
কার্শিয়াং পাহাড়ের কোলে
সেদিন গিয়েছিলাম পাহাড়ের কোলে
চা বাগান ছাড়িয়ে অন্ধকার অবশেষে
জোনাকির খেলা আশেপাশে,
নিস্তব্ধ পাহাড়ে হিম মাখানো সোঁদা গন্ধ
সারা শরীর জুড়ে,
হিমেল বাতাস আমার প্রশ্বাসে নিশ্বাসে,
কার্শিয়াং পাহাড়ের কোলে অবশেষে,
কাঠের পাটাতনের ওপর সাজানো ঘরবাড়ি
অভাবী সংসার
অনাবিল মুখের হাসি
অভাব নিয়েই যেন এদের পৃথিবী
তবুও মাটি কামড়ে পড়ে থাকা,
একই আকাশের তলায় আমরা সবাই
তবুও ভাল থাকা আর না থাকার
কত ফারাক !
খাবার, কথা , পোষাক , জীবন
সব যেন অন্য কথা বলে
সুখের পেছনে ছুটছে অসুখ
জন্মের পেছনে মৃত্যু
বাকি থাকে হাসি কান্না
আমি যেন অনাগত অতিথি
সেই পৃথিবীর,
চেনা আর অচেনার
কোনো এক জন.........
ভালোবাসা
গোপনীয়তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে কিছু
শূন্য খাম
বহু যুগের ওপারে যে আমার উত্তরপুরুষ
খুঁজে দেখবে কি আমার গোপনীয়তাকে
আমার ভালোবাসাকে
ভালোবাসা কি জানে বিবর্তনের তত্ত্ব !
দেরাজে লুকিয়ে আছে গোলাপী পাতাগুলো
সলজ্জ ভঙ্গীতে
নিজের মতো করে
বিবর্তনের ইতিহাস বহন করে।
আমি নিশ্চিত নই তাই জানতে চাই বারবার
ভালোবাসা কি বিবর্তনের তত্ত্ব
জানে
বহু যুগের ওপারে যে আমার উত্তরপুরুষ
সত্যিই খুঁজে দেখবে কি
গোপনীয়তা বেঁচে আছে কিনা......