অমিত পাটোয়ারী
ঘৃণা
তোমার কবিতাকে ঘৃণা করার সহজ কোর্সে
নাম তুলেছি। এখন বাড়ির ড্রেইনেজ় লাইনে
( যদি সম্পন্ন গৃহস্থ হও ) চোখ মুখ দেখে চিনতে পারি
আমার লেখাগুলো ভেঙে তুবড়ে কালো পাঁক চেহারায়
এসে দাঁড়িয়েছে , দেখে চিনতে পারো?
যশোর রোডের ছবিগুলো খুব যত্নে
আমরা মগজ বন্দি করে রেখেছিলাম—
এখন কী খেয়ালে তুমি নাৎসিতে যোগ দিলে!
আসামের ইহুদি মৌমাছিদের হুল
অযথা শরীরে গেঁথে নিলে কোন আনন্দে?
আমাকে তুমি রেশনের লাইনে থমকে রাখো
ইনসুরেন্সের দালাল হতে বলো
খিদিরপুরের কালো সমুদ্রে ডুবতে বলো
তোমার কবিতা কখনো দিয়োনা আর,
আমি ওই জঞ্জালে ঘুমোবোনা। কারণ
ভারতীয় নাৎসি হতে গেলে
আমাকে আত্মা বদল করতে হবে।
জাগর
এত সুন্দর তোমার গলা , গান শুনতে শুনতে
শেকসপিয়ারের জন্য হঠাৎ ভীষন দুঃখ বোধ হলো।
তোমাকে ডেসডিমোনা ভেবে দুই দুইবার
অনুবাদ করার ইচ্ছে হয়েছে। থমকে গেছি—
খুনের লিপ্সা ছিল প্রবল!
দামী পার্কার পেন টা পর্যন্ত
রাগে টুকরো টুকরো করেছি।
রাতের পর রাত অনিদ্রায় ভাঙতে ভাঙতে
শাওয়ারে , আয়নায় দেখলাম
ফ্রাংকেনস্টাইনের তৈরি সেই দৈত্যটাকে;
আর সমস্ত মানুষের কন্ঠ যেন অভিনয় করছে
উৎপল দত্তের চরিত্রে!
আমাকে অতল থেকে বাঁচাবার জন্যে
মঞ্চে, এখনো ঘুমিয়ে আছো কি?
আদালতনামায়
একজন কলেজপড়ুয়া , যে কখনো কবিতা লেখেনি
একজন কলেজ পলাতক , যার বাবা
মাধ্যমিকের আগের দিন হারিয়ে গেছে
একজন ফুচকাপ্রেমী , যাকে প্রেমিক ত্যাগ করেছে
চিরচেনা ফুচকাওয়ালা — যার দেশ
এই আলোকমালায় সজ্জিত পথ দ্যাখেনি
একজন প্রৌঢ় ড্রাইভার , অক্ষর নেই কিন্তু আলো চেনে।
একজন অফিসবয় , অফিসের আনন্দ দেখে
হঠাৎ বেসিনে গিয়ে অকারণ মুখ ধোয় যে লোক
আমি আরও বছর পাঁচেক সময় নিচ্ছি
গাছ আর করাতের শুভাশীষ পেলে
আদালতনামায় কথা দিলাম —
জলের ছিটেয় আয়না কখনো ভিজিয়ে রেখে ফিরবো না
ফুচকাস্টলে দাঁড়িয়ে থাকবো বেকার বেকার
কলেজফেস্টে আর কাওকে গান শুনতে ডাকবোনা।