কৌশিকা চক্রবর্তী মুখার্জী
হয়ত সময়
আজ যদিও বাতাস বড্ড ভারি
আজ যদিও কলম স্তব্ধবাক
আজ যদিও ঝড়ের অপেক্ষায়
আবেগ ঘিরে প্রবল নিম্নচাপ –
তবুও কিছু বলতে হবে আমায়,
তবুও কথা তোমার জন্যে আছে।
সময় কখন কেমন বয়ে যায় –
বলার কথা নাই যদি বা বাঁচে ?
কলম যদি খেই হারিয়ে থামে
দুপুরবেলা হঠাৎ সন্ধ্যে হয় –
হয়ত তখন ঘর গোছানো বাকী
সন্ধ্যে প্রদীপ হয়ত প্রতীক্ষায়।
হয়ত তখন শিউলি গাছের নীচে
শিশির ভিজে সময় থমকে আছে;
দেখার যদি না পাই অবকাশ
বলার কথা নাই যদি বা বাঁচে।
আজকে তবে বলতে হবে এখন
সন্ধ্যাতারার না বলা চুপকথা
অফিস ফেরত বসব মুখোমুখি
আমি এবং আমার নীরবতা।
কবিতা – তুমি কৃষ্ণা
আলো ঘিরে আঁধারের আঁকো আলপনা ।
যখন যেখানে জমে পাতা ঝরা আবর্জনা
স্তুপ-
তোমার অগ্নিশিখা সেখানে নিশ্চুপ
- দাহ করে যায় বারবার
মিথ্যা গর্ব , অহংকার , সমাজের অর্থহীণ
আস্ফালন ভার ।
নিয়তি নিয়মনিষ্ঠ ঢেউ তুলে আনে অভিশাপ
আজস্র – বারবার-
অথচ অবধারিত আবার –
তোমার মলিন সত্ত্বা ফিরে আসে একে
একে জয়-শৃঙ্গ ছুঁয়ে ,
ফিরে হাসে উদ্যতগ্রীব সম্রাজ্ঞীর
হাসি ।
কালের চেতনার মুখ বারবার করেছ বদল
জন্ম-যজ্ঞ থেকে যত জাগতিক চাওয়ায়
পাওয়ায় ;
যতবার ঝড় এসে ভেঙ্গেছে আগল –
তোমার অপ্রকাশ্য ক্ষয়
গড়ে গেছে সম্রাজ্ঞীর নিশ্চিত প্রাসাদ
।
তোমার আর্দ্র ভ্রুকুঞ্চনে বেয়াব্রু
হয়েছে বারংবার
ধর্ষকাম নির্লজ্জ পৌরুষ ।
যুগ থেকে যুগান্তরে নিয়ে গেছো বহতা
সময়
তুমি কৃষ্ণা –আত্মপ্রত্যয়ের অন্য
নাম ।
কি হবে
কালের চাকার ঘড়ঘড় শব্দে
কখনো আহ্নিক ,কখনো বা বার্ষিক পৌনপুনিক
তত্ত্ব।
আশ্বাসের হরবোলা কিচিরমিচির থেকে
হু-হুঙ্কারের নিদাঘী বার্তা –
কলিজায় দ্রিদিম বাজাল?
এই সব নিয়তি ধর্ষিত ঘটনার পারম্পার্যে
প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার আলোয়
যে বুভুক্ষু সংসার দেখেছিল গরম ভাতের
ধোঁয়া-
সেখানে শিরদাঁড়ায় টান পরে।
ঘুন পোকা শব্দ করে ফ্রেমে।
তীব্র দহনে গলে শিরদাঁড়ার মোম।
সাষ্টাঙ্গ আনুগত্যে –তরল যাপন।
অপারগ কর, নিজেকে জড়িয়ে বাঁচে ।
ক্লীব এই বেঁচে থাকা থাক, হে রাষ্ট্র
তোমার মুক্ত কারাগারে।