রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
শ্রাবণের জল
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি
একটা একটা করে পালক খসতে দেখি ,
আর একটু একটু করে বাড়ে শরীরী আগুন
শরীরের ঢেউগুলো আছড়ে পড়ে দেওয়ালের
ছায়ায় ,
কেবল অন্য শরীরে বাসা বাঁধতে চায় ,
তোমার আঙ্গুল খেলা করে সেতারের
তারে
ছায়ায় ছায়ায়....
কেমন অনায়াসে সেতু গড়ে নাও ,
পাড় হও তলদেশ , ভরা নদী
রাত ডুবছে , গাঢ়
হচ্ছে নিঃশ্বাস ,
উপত্যকা জুড়ে -
গোপনে বাড়তে থাকে শ্রাবণের জল ,
দেহে দেহ মিশে যায় , একাকার
,এক তার
পোতা হয় বীজ , ফসলের
আশে ৷
পাপড়ি
এই শেষবার তোমার ঠোঁটের ওম গড়িয়ে
পড়ল
আমার বিহঙ্গ চিবুকে ,
নিজেকে নিরাভরণ করে নাভিগাছে
বেঁধে নিই কলঙ্কের জাল কাঠি ,
রূপালি স্রোত শরীরের নাব্যতা খোঁজে ,
জাহাজের মাস্তুল ডুবতে ডুবতে
জন্ম দেয় অনাড়ম্বর সোহাগ ৷
শেষ রাতের আমিষ বাতাসে
একটা গোলাপ বৃন্তচ্যুত হয়ে
বিছানায় একটা একটা করে
খুলে রেখেছে তার পাপড়ি ,
তোমার আঙ্গুলের স্পর্শে
পাপড়িগুলো নদী হয়ে যায় ,
নদীগুলো শরীর আর -
শরীর বাঁশি হয়ে বেঁজে ওঠে ৷
জ্বর
আগুন পেড়িয়ে যেতে যেতে
আমার জননাঙ্গ প্রজাপতি হতে চেয়েছিল
,
সহস্র শ্রাবণ বুকে নিয়ে তোর ছায়া
শরীর লুকিয়ে রেখেছিলাম আমার গর্ভে ,
সেই রাতের কালবৈশাখীর উদ্দাম
নৃত্যে
একটা একটা করে ডানা খসে পড়েছিল ,
হার ,অস্হি
, মজ্জায় সরীসৃপ চলন ,
তোর পুরু ঠোঁট দিয়ে চুমুক
দিচ্ছিলিস উষ্ম প্রস্রবণে ,
আমি বাঁশ পাতার মত তির তির করে
কেঁপে উঠি ,
রমণের ঘ্রাণে তীব্রে জ্বরে পুড়তে
পুড়তে ,
সমর্পণের পান্ডুলিপি লেখা হল
নৈকট্যের রতিজলে ৷