বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৯

সবর্না চট্টোপাধ্যায়


সবর্না চট্টোপাধ্যায়

নদী ও সাগর

প্রতিটা ঘুমের পর যেমন জড়িয়ে থাকো আলস্যে
আমি ভাবি, রাত হল বোধহয়
খুলে গেল হাজারদুয়ারী।
লালবাগে ফুটেছে আগুন

তুমি চেখে নিলে ভোরের উত্তাপ।
পিচুটির জট,
হাই তোলা বাসি মুখ,
ঘেন্না হল না এতটুকু।

অথচ কোথাও ফাঁকা হয়ে আছে ধ্বংসস্তূপ
সেখানে বিষধর ফণা তোলে শুধু
হাত দিলে ছোবল বসায়!
যে আলস্যে তুমি বারবার  ' তুমি ' হয়ে ওঠো
তাকে আমি নদী বলে চিনি।

ঘুম কেটে গেলে ধীরে ধীরে পাল্টে যাও ক্রমশ
' সাগরে '






মটরগাছ

১.
বেঁধেছিল খন্ডযুদ্ধ। খটখটে রোদ...
ঘুমের ভেতর শুনি মোরগটা ডাকছে মুরগীকে।
স্নান সারি। ডুবিয়ে দিই ঘটি।
বুদবুদ ওঠে রোজ নতুন।
পুকুর ছেড়ে উঠে এলে পিছু নেয়
হাঁসের দল...ঠিক যেন বাধ্য শিশু
বাড়ি ফিরছে মায়ের পিছুপিছু!

২.
ভাত রাঁধি। ধানি লঙ্কা শক্ত হয়ে থাকে।
ফোড়নে ফোড়নে ধোঁয়া
চিমনি চালিয়ে দেয় গৃহ স্বামী।

৩.
রোজকার ঝড় জল। কাদা মাটি মেখে
সোজা হয় গাছ। সালোকসংশ্লেষে
সাজে খাবার টেবিল।
তারপর নিঝুম দুপুরে, বই খুলে বসা।
অ্যালবামে জমা ধুলো
মশাদের সানাই। 
ফোনটা আসতেই উড়ে পালায় শালিকের ছানা।

৪.
বোতামে হাত রাখি। ঢেউ বড়ো চেপে ধরে।
ঘন হতে হতে জড় হয় তলপেট।
ভূমিকম্পে ভাঙি আবার।
ধ্বংসস্তূপের মতো দাঁড়াই...তুমি ধরা দাও
অলক্ষ্যে

৫.
হাঁ মুখে শব্দের জট। এরপর নিভৃতে
জন্ম নেবে কত বেজন্মা অক্ষর।
আমি শুধু পরপর গিলে যাব আইপিলস্।

৬.
সময় মৃত হয়ে আসে। নিঃশ্বাস পড়ে ধীরে
গুগলি তুলতে আসা কালো মেয়েটাকে
জোঁকে ধরেছিল গতকাল
এখন আর রক্ত ঝরে না।
শুধু নুনজল

৭.
আমার তারামন্ডল।
ধনুকহীন ভুট্টারক্ষেত...সাজায় পান্ডুর শরীর।
চাষির মৃত্যুর পর বদলেছে মালিকানা
এখন ধানের বদলে ফলে মটরগাছ


 



অবিনশ্বর

এবার একা নয়।
অর্থের সংসার ছেড়ে বিজরা নদীর তীরে
মাছেদের জলকেলি
জলে ডোবা তরুণী পা….
আর সমস্ত অসভ্যতা

গোধূলির বাঁকা কোমর
ধরে তুলে দেব
ছিনিয়ে আনব তারা
থরথর করবে নাভি, জলের শব্দরা!

হে বিদ্যুৎযাম, ভ্রূপল্লবে কিঞ্চিত
অগ্নিফুলকির ঢেউ
ঠেলা দেব বন্ধ দুয়ার!
বেহায়া বাতাস আর ঝুলন্ত আপেল গাছে গাছে

সাঁতরে চলেছি দুটি...রামধনু ভোরে
দেখো নিও ঠিক বুঝবেন ঈশ্বর!