শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯

দেবযানী বসু


দেবযানী বসু

মীরাকুঞ্জের শাওন

বৃষ্টিতে মেসেজ সব ধুয়েমুছে সাফ। বৃষ্টি হতে দেখলে তাকে আবহসঙ্গীতের সঙ্গে মেলাই নি কভু। প্রতিভূ ও প্রতিভাবানদের বিজলী চমকায়। ছাউনি খুঁজি কোনো কবির ঘরে সারমেয় হৃদয় চেপে ধরে। বৃষ্টির গলা কেন ফ্যাঁসফেসে লাগে অতীতের ধোঁয়ালু ট্রেনের মতো... ইঙ্গিতে হাত ধরি। স্বীকারোক্তির কবিতারা কাঁচা রসগোল্লা। ওড়না বৃষ্টিশীলা। বৃষ্টি জমে ওড়নায়। বারান্দায় পিঠ খোলা রেখেছি। ওড়নার ভাঁজে বৃষ্টি লুকানো সহজ বলে অলোকপুলক কদম্বের পায়ে নূপুর উঠে এলো নীলঝরন শেষে। নিজেকে ঝুঁকিয়ে দিতে দিতে দেখে নিই ছাদের পথে কতো কামিনী সাদা রাগরাগিনী ফুটে আছে। বুকে রয়ে যাচ্ছে কুকুরের নখের আঁচড়। জলফোঁটার আঁচড়।









বাতায়ন ও বারিষ

কতো রাত করে বৃষ্টি আসে ঘরে। বারান্দায় দোলনা জানে খিলখিল ঠান্ডা ছোঁয়া। কাল সকালে পড়ে রবে ভোরজাগানিয়া বকের আদরভারি ডানা। বছরবিয়ানী হয়ে থাকে সে আপনমনে। নোনতা প্রথম সঙ্গমের মতো বৃষ্টি। জানলার কাঁচে ফোকাস পড়ে বর্ষা গোত্রের মোটরগাড়ির। তিতিছে মোটরগাড়ি সঙ্গমের আগে। হাওড় পেরিয়ে তোমার গ্ৰাম থেকে আমার গ্ৰামে আসে নৌকমেঘের  প্রাণ। ছাতা আলো মেলে ধরে। ছাতাবন্ধু পা ঘষে ঘষে হাঁটে। তার জামচোখ থেঁতলে বিছানা পিছল। আকাশবাড়ির মাথায় মাথায় জামগাছ চুমু দেয়। কিছুটা লালা। কিছুটা গোঙানি। কিছুটা বাদারিয়াঘন হিন্দি গান।









বর্ষামঞ্জিল

গুলমোরের ঘষা খাওয়া তারে তারে। বোবা বৃষ্টিকেও ঘর্ষনের আওয়াজ দিই। সে ভুলে গেছে আমাদের কবেকার বিদ্যুৎ - শর্ট সার্কিট কথা। স্তরে স্তরে খুলে আসা টালমেটালের রাগিনী। বৃষ্টি পড়বে বলে উঠোন বাড়িয়ে যাই। বৃষ্টিলাগা পুকুর উপুড় কুম্ভের শীৎকার শোনে। হাটখোলা সাঁতার। বালক প্রেমিক সোনাব্যাঙ তুলে দেয় হাতে। কাঁচের তাজমহল জল শুষে ভারি হয় না আর। ঋতুমতী  তাকে  মাটি ছেনে বর্ষাপুরুষ তৈরি করে দিই।জানাজানি চোখ ফোটে দেয়ালের। বার্বিহাত মুচড়ে আঙুলের সন্ধি খুলে দিই। নেমে পড়ে ছয়লাপ তরঙ্গ অঙ্গসমেত। বিগত সমস্ত প্লাবনের পলি একটি বৃষ্টিবিন্দুতে এসে দাঁড়ায়।