দেবযানী
ভট্টাচার্য্য
যে
কবিতা মেঘলীন
আজ
সারাদিন কোনো কবিতা লিখিনি
যদিও
হাওয়াতে খুব কবিতার গন্ধ ভাসছিল-
চরাচর
জুড়ে ছিল বৃষ্টিভেজা অক্ষরের রেণু ।
যাবার
কথা কি ছিল বৃষ্টির সঙ্গে আমার-
কদমের
ঘ্রাণে ভেজা কোন এক প্রান্তিক স্টেশনে!
বর্ষাতুর
নিমডালে ভিজে যায় একলা মৌচাক, সান্দ্র মধুর মত ঝরে যায়
সজল
প্রহর।
ভিজছে
শহর কোলকাতা- অ্যাকাডেমি
শিশিরমঞ্চ- মোহরকুঞ্জ- কলেজস্ক্যোয়ার
আবছায়া
সন্ধ্যায় টুপ্টাপ্ ঝিরঝির
দলছুট
একা একা,
কালো পরি নিঝুম নিঝুম।
কত
কথা ওড়াউড়ি -মেঘবতী পূবালী হাওয়ায় -তারারা ছুটিতে আজ
ঘুম
ঘুম মেঘের চাদরে- অনন্ত রাতের মঞ্চে
কথারা
জমালে আসর,
ঈশ্বরী আঙুল বোনে
স্বপ্নধান
, মেঘলা উঠোনে।
আমি
কি ওখানে কোনোদিন
কুড়িয়েছি
সোনালি শস্য ভ্রূণ!
আমার
অন্ধ ঘরে অবিরল নীরবতা-
আখরের
শূন্য করপুট ।
আজকাল
এমত আর্দ্রতায়
আয়নার
কাঁচে ঢুকে যাই-
জন্মহীন
কবিতার বাতাসিয়া ঠোঁটে বৃষ্টিজলে নিজেকে
ভেজাই।
স্বভাবদোষ
তোমার
জন্য কষ্ট পুষি
কষ্ট
পাওয়ার স্বভাবদোষে
হৃদ্-আবাদী
এমনধারাই
দুঃখ
ধানের জমিন চষে-।
মনখারাপী
আলপথেতে
জল
জমেছে ঘাসের বুকে,
ঘরছাড়া
সব পাগল নদী
ছুটছে
তবু তোমার দিকে।
কে
জানে কোন মেঘের ভীড়ে
ইচ্ছে
করেই খুঁজছো আড়াল
কন্ঠস্বরে
বাদল বাউল-
ভাঙচুর
এই ভিতর দেওয়াল
এমন
করে কেউ কি বলো
বিন্-নোটিশে
বৃষ্টি নামায়!
দুর্বিনীত রক্তবাহে
গর্ভিনী
মেঘ বজ্র শানায়!
জল
থই থই আকাঙ্ক্ষাতে
শরীর
জুড়ে মাতাল শিহর,
প্রবলধারে
ভিজব বলে
চাইছি
তোমায় আশিরনখর।
অঝোর
ধারে ঝরবো জেনেও
সুখ
সুখ এক কষ্ট পুষে,
মেঘলা
চিঠি সাজিয়ে বসি
জানোই
তো সব- স্বভাবদোষে।
বেড়ি
মেঘদুপুরে
ডাক দিয়েছ
নিরুদ্দেশের
দেশে--
যাচ্ছি
-বলেই যায়না যাওয়া
উল্টো
স্রোতে ভেসে ।
ডাকলে
যখন -কেমন করে
সে
দেশ যাওয়া যায়
তোমার
কাছেই উপায় খুঁজি-
চরম
নির্দ্বিধায়।
আমার
আকাশ মেঘলা হলেও
বৃষ্টি
নামায় কই !
প্রবল
ধারায় যে ঘর ভাসায়
সে
জন আমি নই।
আমার
পায়ে অনেক বেড়ি
পড়েছি
স্বেচ্ছায় -
চাইলে
যেতে নিরুদ্দেশে
তাই
কি যাওয়া যায় !
ডাকছ
তুমি অবিরত
রক্ততে
শোরগোল-
ঝড়
উঠেছে মন আকাশে
চোখ
ভরেছে জল ।
এমন
ভাবে ডাক পাঠালে
মেঘ
-পিওনের হাতে -
চিঠি
তোমার যত্নে রাখি
হৃদয়
-আঙিনাতে।
একটু
সময় পেতাম যদি-
অন্য
মেঘের ভোরে
ঠিক
দেখতে পৌঁছে গেছি
নিরুদ্দেশের
পারে ।