এ কে এম আব্দুল্লাহ
জলায়িত সুবাস
প্রিপারেশন নিতে-না নিতেই ডুবে যাচ্ছে
চোখ। আর নামহীন যে ঝড় বয়ে গ্যালো কাল। তার তান্ডবে ছিঁড়ে যাওয়া কারেন্টের তারে
যে গাভীটির মৃত্যু হলো,তার পাশ দিয়েই ভেসে যাচ্ছে
সুবাসিত ফুল, হিযলের পাপড়ি।
এখন মৃতগাভী,ডুবে যাওয়া খেত আর সুবাসিত হিযল : কম্বিনেশনটা ভাবতে ভাবতে মাথাটা ঘুরছে
জলকুন্ডলীর ভেতর ডিঙির মতো।
আর আকাশ থেকে টিনের চালে ঝরে পড়া বৃষ্টির
ছন্দে,
রবি ঠাকুরের বৃষ্টির গান নেমে এলে ঘরে ; অকস্মাৎ
ঝড়ের ধাক্কায় ভেঙ্গে যাওয়া সুপারিগাছ, জানালার কাঁচ ভেঙে
ঢুকে পড়ে বিছানায়। ঝড়ের ঝাপটায় আঙুল বেয়ে বেয়ে নেমে আসে রক্ত।ভেতরে ভেতরে শোনতে
পাই কৃষকের হাড় ভাঙচুরের শব্দ।
এভাবে আমরা বর্ষার চরিত্র ভেঙ্গে যখন ঢুকে
পড়ি হেডলাইন-রং পোশাকের ভেতর ; ডুবে যাওয়া সড়কের
পাশে— কেউ আমাদের টাঙিয়ে দ্যায় বিজ্ঞাপনি ভঙ্গিতে। আর ছন্দ ভেঙে কেউ গেঁথে
রাখে কবিতার পাতায়।
জন্মবিলাস
একদিন ষরিষাতেল মাখাতে মাখাতে মায়ের যে
দুটি হাত থেকে নামতো শৈশব ; সেই দুটি হাত পুড়ে গেছে
জ্বালানি কাষ্টের মতো। সেই উঠোনও হারিয়ে গেছে অদৃশ্য পেটের ভেতর।
এখন মায়ের চোখ থেকে ভেঙ্গে চুরে নেমে গ্যালে আমাদের সংসার ;
বাবার করোটি ডুবে যায় অন্ধকারে। আর বাবার শব্দময়ী বুকের পাঁজর
ভাঙ্গে— থৈ থৈ জলের
ঢেউ।
এইসব দৃশ্য কেউ কেউ তুলে রাখলে অদৃশ্য
আলমিরায় ;
মাঝে মধ্যে দুর থেকে খড় -কুটোর মতো ভেসে আসে, দোয়েলি সংগীত। এর ফাঁকে ফাঁকে কাকের ঠোঁটে কখনও নেমে এলে পাঁচ কেজি
প্যেকেট আয়ু ; আমরা ওয়েভ তরঙ্গে সাঁতার কাটতে কাটতে সেলফায়িত
হতে থাকি।
আর এই সুযোগে দুর থেকে কেউ কেউ জললিপিতে
লিখে ন্যেয়— আমাদের জন্মবিলাসের কাহিনী।
জললিপি
বাবার চোখ থেকে ভেসে গ্যালে খোয়াবগুলো ;
বেড়িবাঁধের চুড়ায় বসে-মা, জলের কুলায় সময়ের
কঙ্কর কুড়ান। আর, হাঁটু ভেঙ্গে আমরা— জলের
ছাদে তুলে রাখি,ভেঙ্গে যাওয়া সংসার। কেউ কেউ জলের নিরব গায়ে
অঙ্কিত করেন আমাদের মুখচ্ছবি। তারপর, পকেটে ভরে প্রদর্শনী
সূচী ; সহাস্যে খুলে দেন রাতের দরজা।
আর আমরা ; মানুষ
থেকে পণ্য হতে থাকি।