শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯

তনিমা হাজরা


তনিমা হাজরা

আজ বৃষ্টি হলে

আজ বৃষ্টি হলে প্রেমের কবিতা হবে,
 সাথে ফ্লেভারড দার্জিলিং,
শোন, দুটো বেগুনী ভাজিস প্লিজ,
 আচারের তেল দিয়ে মাখিস মুড়ি,
একখানা কাঁচালংকাও দিস সাথে।
আজ বৃষ্টি হলে ছাতে উঠে যাব
সেই আগেকার মতো,
যতোই ঠাণ্ডা লাগে লাগুক
তুই শাসন করিস না।
আজ বৃষ্টি হলে আমার সোনামুগে
তুই সুগন্ধি আতপ হবি,
দারুণ আঁচে ফুটে ফুটে
গলে মিশে যাব দুজনেই।
আজ বৃষ্টি হলে তোর পুকুরে
জমে উঠবো কানায় কানায়,
মাটিগুলো সব গলিয়ে ভাসিয়ে
নিয়ে যাবো তোর।
আজ বৃষ্টি হলে হবো
হাপিত্যেশ মানুষের মুখের হাসি,
জমির ভেতর রজ:স্বলা ধারাস্রোত।
মেঘমল্লারে মল্লারে বাজব
সারা শরীর জুড়ে তোর।
আজ চাইছি খুব জোরে একটা ঝড় উঠুক,
বিদ্যুৎ নিনাদে নিনাদে কেঁপে যাক
পৃথিবীটা আরো একটিবার।
থেমে থাকা কাহিনীটা শুরু হোক
তোর আর আমার।।।।







মেঘের নাও

মেঘ করছে ঝড়ের স্মৃতিচারণ,
তোমার কথা ভাবা আমার বারণ,
তাই বৃষ্টি লিখি ভুঁয়ে,
সোঁদামাটির বাষ্প ছুঁয়ে ছুঁয়ে।

হাঁটতে গিয়ে অনেক রুক্ষ পথ,
কেমন  করে হারিয়ে গেলি তুই,
আয় না জীবন, বোস না আমার পাশে,
আলতো হাতে তোকে একটু ছুঁই।

এই রাগিণীর আলাদা এক নাম,
এই জীবনেও অনেক খানি সুখ,
তবুও যে কেন বারংবার,
রক্ত ঝরায় গোপন ক্ষত মুখ।

এক জীবনে এত ঝড়ের পর,
চাই না তো আর কালবোশেখির ঝড়,
এখন, ডিঙি আমার একটু নোঙর চায়,
তবুও যে অবুঝ মনের নাও
জোয়ার পেলেই কোথায় ভেসে যায়।।








মেঘমল্লার

বজ্রমাণিক, বৃষ্টি হবে?
আমি তোমার কাছের নারী,
দাও, শব্দভাঙ্গা দুফোঁটা জল,
আপাদমস্তক ভিজতে পারি।

গর্জনে দাও দুরত্বটাই,
কৃপণতার পাঁচসিকে,
হাত পাতো, দিই জমিদারি
তোমার নামে আজ লিখে।

উজান বাইতে নাও এনেছি,
ছাউনি চিবুক চুপটি ঘুম,
সিগন্যালে আজ দেদার ছাড়
ছুটছে গাড়ি হুড়ুদ্দুম।

একটু হাসি পার্শ্বসুখে
হালকা ফাঁকি নিটোল গাল,
একটু মিথ্যে স্বপ্ন দেখায়
ডিপোজিটে ইহকাল।

বৃষ্টিভেজা লেবুপাতার
মাদকতায় তোমার ঠোঁট,
নিজের মৃত্যু নিজেই খুঁড়ি,
চুম্বকীয় অহংবোধ।

বজ্রমাণিক, বৃষ্টি হয়ো,
ট্র‍্যফিক জ্যামে একটিবার,
হেডলাইটেই জ্বালবো আলো,
ষ্টিয়ারিং এ অঙ্গীকার।।।।







জোনাকিচরিত

মেঘের শরীরে আজ নিঃশব্দ ভাটিয়ালি,
মানস সরোবরের জলে ভাসিয়ে দিলাম
আমার হৃদয় কমল,
একটা অচিন পাখি পাড়ি দিচ্ছে আকাশগঙ্গা
তার ডানায় পাঠালাম আমার অনাঘ্রাত মন।

তুমি ঘ্রাণে অনুভব করে নিও
আমার ব্যপ্ত অস্তিত্ব।

তোমার স্পর্শের দরজায় আমার চিরকালের পদশব্দ থমকে দাঁড়িয়েছিল বহুদিন।
আজ আমার সব অস্তিত্বেরা বাহ্যিক আড়ম্বরের নূপুর খুলে রেখে এগিয়ে চলেছে অন্তিম অমরাবতীর দিকে,
পৃথিবীর সুরেলা নারীদের ভেজাচুলের গন্ধ মেখে জোনাকি হবে বলে।।