শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯

মঞ্জিমা গাঙ্গুলী


মঞ্জিমা গাঙ্গুলী

অমলতাস

যেমত তুমি রোদরঙে মিঠে হতে পারো
সে ছাদে ফোটে একটা আরামের ঘুম
নিদাঘ রোদ টকটকে পাপড়ির রঙ আর
কামরাঙা পাতা।
গড়িয়ে পড়ে ভারী বুকে কান্নাফোঁটা
বোঁটার নিচে লেগে থাকে শুকনো কালবৈশাখী
এ ফুল কানের দুলে দুধগন্ধের নরম লতি
গান শুনছি চোখ মেলছি মিছিল হয়ে গেছে
অমলতাস এক অপর্যাপ্ত অপত্য রঙ
বুক কেমন করা বিকেলের ছেলে।








নিষাদ

যাকে নিষেধ করে কবিতা আয়োজন
এ বর্ষার সময় কাঠগোলাপের আদর এঁকে দিল
নিষাদ।
তার বর্ষার প্রবলিনী আর দারুণ চৈত্র মেয়ে
কাঁচে ঘষে মুছে নিয়েছে নীলকমল
আফিম রঙের দুপুরবেলা অবাক বক
সারস আর শামুকখোল
দেখে রাখো বিষণ্ণ দুই পুরান
বাংলা আমার বেহুলা হয়ে কাঁদে
সে নদীর জল নিষাদ আর তার কাঠগোলাপ
পায়ে মাখে।







ইকরিমিকরি

ছোটবেলায় কাগজ নৌকার বৃষ্টি আসত
সারা উঠোন ছাপিয়ে যেত পুকুরজল
লোহার গেট পেরিয়ে পুকুর আর উঠোনধুলো
ঘুরতে যেত সবুজ মাঠ
কাগজ মুড়ে মুড়ে নৌকা চলত অবাক দেশে
সে দেশের পাহাড় নীল জল বেঁধে শোয়
কারুশিল্প গাছগাছালির নরম বাড়ি
পেঁচা বসা সুতোয় সুতোয় বাঁধা মেঘে
অবিচল একটি অনুরাগ নিয়ে চলতে
থাকে ইকরিমিকরি নৌকা।







টুকেছি

আমাকে বলা হয়েছে বারংবার
টুকে নিতে এর তার অপাপবিদ্ধ জীবন।
আমি চূড়ান্ত হেসে অনাবিল টুকেছি
একা আমার অর্জিত জীবন।
আমাকে বারবার তারা বলে গেছে
গাও গাঁথা গান
আমি চড়াই আর বুলবুলিদের বুলি ছাড়া
আর কিছু গাই নি কোনোদিন।








ছাদ

একটি আজন্ম দরজার বাইরে পারলে বেরিও
ভিক্ষু আঁজলা ভরে গেছে ছাদের সুগন্ধি জলে
ডুবুরি নামিয়ে নিয়ে অনেক আদর ছেঁকে
ঝড়ের পর বৃষ্টি আর মৃত মরশুমি ফুলের দেহ
সে আমি সমাধিস্থ করে
লাগিয়ে দিই চাঁপা সবেদা আর হাঁসনুহানা
ছাদ দেখে বুদ্ধমূর্তির পাশে বাড়ছে কামিনী
আমরা সে অপূর্ব বাড়ি ফিরব।