শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯

পৃথা রায় চৌধুরী


পৃথা রায় চৌধুরী

এখন কবিতা

তোমার তাতে কিই বা এসে যায়
যখন দেখো, সমস্ত শব্দেরা আমার শহর ছেড়ে
তোমার সাথে ঢুকে পড়েছে
স্বেচ্ছায় বেছে নেওয়া তোমার একাবাড়ি।

কার মনে পড়ার কথা নয় প্রশ্নের উত্তরে
আমার নাম আসে নি তোমার মনে...
ধন্য ধন্য বর্ষা নামে বারুদ সমেত

যে গান শুনতে চেয়ে চলে গেছ
সে গান ঠোঁটে রাঙিয়ে বেড়াই
কানে পরে থাকি, তোমার প্রিয় 'নন্দর মা'
তোমার দিয়ে যাওয়া স্বরে;

এখন ছাতার নিচে হাঁটি
রোদ পেরিয়ে বৃষ্টি নেয়ে
তোমার থুতনিতে কটা সাদা গোনার অপেক্ষায়...
দিনক্ষণতারিখের গল্প,
তুমি এলে হবে।








ব্রেকিং নিউজ

বর্ষা লিখেছিলে এক খোলা খাতায় বিরহী প্রেমিক
মুখোমুখি চেয়েছিলে ঝাপসায়, ঝড়সঙ্গিনীর প্রাচীনে
টুকে রেখেছ মৃত্যুজুয়ার ফলাফল দৈনিক;
কখনো শূন্যে, কখনো কাঁধের ওপর মন্দিরে
বহু মিথ্যাচারের পলি চেপে সোনালি বামন শরীরে,
আগুন! তবু আতসকাঁচ ধুয়ে রাঙায় সূর্য জন্মসন্ধানে...

অজানা প্রহরকাঁটা ক্ষরা বোনে শ্বেতজমিনে
কাহিনী নবছলনার
খোলা জিভ মৃত কলম, চলকে পড়া চা-দাগবালিশে
চাটে সমুদ্র গড়ার দায়

আজকের পেয়ালা শিরোনামে একক সংবাদ,
জুড়িয়ে জল হওয়া চা আজও তার প্রিয় পানীয়।








বৃষ্টি শেষে

মানুষ জঙ্গলে বুনো ঘোড়া
আকাশী পোষ না মানা ক্ষণ,
ভাঙ্গা অক্ষর দেখা যায়নি।

চোখের তারার নামে লেখা
সন্ধ্যের আঘাটা, বর্ষা নামার সময়
জান্তব শ্বাস বেড়াল চলনে।

শোধের নাম ছুঁড়ে দেওয়া;
রক্তকরবী ফুটে ওঠে...
নয়া রিংটোন, শাসন,
থইথই সমুদ্দুর।

মেঘেরা বিষাদ ঝরিয়ে
শিউলি হেসে ভালোবাসি বলে,
সাদা পাতায় দখলদারী।

এই প্রথম... তোমাকে...







অ-বোধ

এখন চাঁদ দেখা যায় না
বৃষ্টিতে আমার শব্দেরা ছিঁড়েখুঁড়ে অক্ষর
কিভাবে নিজের কষ্ট লিখেছো নষ্ট পাতায়...
শেখাবে?

অন্ধত্বের আলাদা অহংকার হয়
ওরা জানে না
ওরা কৃষ্ণ আলো না বুঝে ব্যঙ্গ করে,
কেড়ে নিতে চায় যষ্টি

ওই ওরা শুধায়, তুমি কেন... তোমারি কেন?
ওই ওদের টিপটিপ ফিসফিসে আবছা শীলপত্র

জলসই রাতেদের ভিড়ে
তোমার যাপন মেখে থাকি...
বেড়ে চলে মেঘ ভাঙ্গা অট্টহাস।








ধমনীর বর্ষণ টান

কচি কচি বৃষ্টি পরিস্কার করে দিচ্ছে জমানো রদ্দি। এই যে ধুয়ে যাচ্ছে চারিদিক, শত শত পাথরকুচিকষ্ট শেকড় ছড়িয়ে দিচ্ছে ভাঁজে ভাঁজে। মাঝে মাঝে বেশ রক্তবর্ণ ফুটে উঠছে কান্নাফুল।

বিষাদ লিখবো না ভেবেছি। ভেবেছি আমার রাস্তার মোড়ে বসে থাকবো অনন্তকাল। সবার আলাদা রাস্তা থাকে। তোমার রাস্তার সাথে বুড়িছোঁয়া খেলতে খেলতে ভুলে যেতে বসেছিলাম, গন্তব্যে ছাদ থাকেনা। যে যার মোড়ে পৌঁছে খালাস! খালাস?

আমি ভেসে থাকি এক মহাবুদবুদে, যেখানে মাটি, মাটির ঘরদালানছাদ, শখ করে দেওয়া ফাঁক ফোকরের রোদের বেড়া। বেড়ার ভেতর অনেক গল্প, ঝুটঝামেলা, তুলকালাম... তবু ডেকে ওঠা সেই আদরের ডাকে। তখনই ঝমঝম, তখনই অকালেই শরৎ বসন্ত আর তুমিআমি ঋতু।

সেদিন জানলাম, ভয়ানক প্রতিবাদী জানলায় দাঁড়িয়ে থাকি, ভেতরে শুধুই প্রেম নিয়ে। এতো প্রেম! জ্বালালে দেখছি। এ প্রেম তোমাকে দিতে দিতে, বেড়েই চলে।

বৃষ্টি এলে চারপাশ আয়না করে পারদ মাখিয়ে দেয় আমায়। আমার রাস্তার ঢাল বেয়ে স্বেচ্ছাচারী স্বৈরিনী জলের ঢল নেমে আসে মোড়ে... মাটি গুলে জন্মায় সাঁঝবাতি জন্মের পাঁক।

সন্ধ্যেভোর আসছে আবার...