সোমবার, ২১ মে, ২০১৮

মিঠু নাথ কর্মকার


মিঠু নাথ কর্মকার

অঙ্গীকার

মন্দির মসজিদ চার্চে জ্বলছে লাল তরলের মঙ্গলদ্বীপ,
আত্মার দীর্ঘশ্বাসে হয় ধর্মের আরতি।
গোপন বৈঠকে তুমিও ধর্মের ঘুঁটি সাজাও...
চেতনে বা অচেতনে।
খোলাবাজারের আঁশটে জল সাবধানে ডিঙিয়ে এলেই
তোমার নিশ্চিন্ত যাপন।
ঠান্ডাঘরের আরাম কেদারায় ম্যাগনিফাইং গ্লাসে দেখ শৈশবের রক্তের রঙ,
নাকে রুমাল চেপে দুধদাঁতে লেগে থাকা ধর্মের গন্ধ শোঁক,
কলঙ্কিত মনুষ্যত্বকে, ওয়ালেটে রেখে,
আগামীর চোখে টেনে দাও স্বপ্নিল কাজল।
হয়ত শেষবার...
'হতভাগা' মানুষটার মতো!
কামনার লেলিহান শিখা যেকোন সময়
নিঃশব্দে ঢুকে পড়বে সুরক্ষিত বলয়ে,
তোমারই অজ্ঞাতে।
'হতভাগা'র দলে নাম লিখিয়ে,
কুন্ডলী পাকানো মাংসপিন্ডের ভিতর
তুমিও আঁতিপাতি খুঁজবে একটা জড়ুল।

এইভাবে তুমি আমি আমরা সবাই ভিড় বাড়াব
 'হতভাগা'র তালিকায়,
সৃষ্টির মুখে এঁকে দেব অজস্র জিজ্ঞাসা চিহ্ন।

অতীতের স্মৃতি হাতড়ে দেখ ...
তোমার অপত্যকে এই 'সুন্দর পৃথিবী'
আলো দেখানোর সঙ্কল্প নিয়েছিলে কি?
পচনধরা সমাজের ফাঁসে এখন শ্বাসরুদ্ধ মহাকাল,
অবক্ষয়ের দেওয়ালে পিঠ রেখে এখনও  নির্লিপ্ত !
কতদিন আর দৃষ্টিহীন দর্শক হয়ে থাকবে?
নির্বাক বক্তা হয়ে বাতাসের মঞ্চে আর কত ভাষণ দেবে?
সূর্য অস্ত গেছে ভেবে ,এখনও ঘুমিয়ে আছ নিশ্চিন্তে?
জানো,সূর্য অস্ত যায় নতুন সকালের অঙ্গীকার নিয়ে?
কালশিটে পড়া চামড়ায় আঁচড় কেটে জাগিয়ে তোল বিবেক,
কণ্ঠে লাগানো সাইলেন্সার খুলে গর্জে ওঠো "ধর্ষকের চাই মৃত্যুদন্ড"।
ভেঙে ফেল রঙিন চশমার আড়াল,
ছানি পড়া চোখের রেটিনায় জ্বলে উঠুক প্রতিবাদের আগুন।
সেই তাপে ঝলসে যাক ধর্ষকের গোপনাঙ্গ,
শুকিয়ে যাক ক্ষরিত হরমোন।
ভেঙে গুঁড়িয়ে দাও ধর্মের প্রাচীর,
মানবতার সুনামিতে ভেসে যাক আসমুদ্রহিমাচল।
আমাদের আসিফা নির্ভয়ারা নিরাপদ আশ্রয়ে নির্ভয়ে বেড়ে উঠুক,
মুষ্টিবদ্ধ অঙ্গীকার হোক...
"এ পৃথিবীকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব।"