মন্দিরা ঘোষ
কবিতা নয়ঃ এক বিপন্ন সময়ের
কথকতা
এক বিপন্ন সকাল
আমাদের সামনে
আমরা কথা বলছি
কি বলছি না
বিষয় থেকে সরে
যাচ্ছি ক্রমশ
অসুখের কথা
বলতে গিয়ে আমরা
জিএসটির
মুন্ডুপাত করছি
হকিং এর পরজন্ম
নিয়ে
তুমুল হট্টগোলে
গলা মেলাচ্ছি
মানুষটি কবি না
বিজ্ঞানী
এই মতান্তরে
জড়িয়ে বেশ
জটিল বিতর্কে
নেমে পড়ছি
মোড়ের মাথায়
কলার তুলে
সাংস্কৃতিক
গালগল্প
চায়ের আসরে
ধর্ষণের রাজনীতি
বাড়ি ফিরে জি
বাংলা সিনে এওয়ার্ড
দেখতে দেখতে
পারিবারিক
হয়ে উঠছি বেশ
সকালে ধোঁয়া
ওঠা চায়ের কাপে
গলা ভিজিয়ে
ব্যস্ততার নামাবলী চড়িয়ে
ডুবে যাই খবরের
পাতায়...
খবর গুলি পাশ
কাটিয়ে চলে যাই
ফ্লোরিডার ক্লাসরুমে মুখ থুবড়ে
পড়ে থাকা
রক্তমাখা নরম
শরীরগুলি টপকে
যাই অনায়াসে
অস্ত্র ধরো
শিক্ষক, গুলির বদলা গুলি
রাষ্ট্র
প্রধানের বিধান
মেনে নিলে
শিক্ষাক্ষেত্র হবে রণক্ষেত্র
একথা তো দুধের
শিশুও জানে!
দেখতে দেখতে
গিলে নিচ্ছি সব
কোথাও না কোথাও
কোন না কোন
শরীর রক্ত
মাখছে প্রতিদিন
রক্ত মাখছে
শিশুমন,
আসিফার মত শত
শত অপুষ্ট
বিক্ষত যোনির
প্রতিবাদগুলি
লুকিয়ে ফেলছি
ধর্মের পতাকায়
কুমুমমৃত্যুর
রথ সাজাচ্ছি নির্বিকারভাবে
শিশুর চোখে
পুরে দিচ্ছি অস্ত্রের জেহাদ
আমরা আসিফাদের
জন্য
গুছিয়ে রাখিনি
রূপকথা আর
রাজকন্যার হার
বলিনি
প্রজাপতির পাখনা দেবো তোকে
স্বপ্ন এঁকে
দিইনি সাত সুমুদ্দুর
তেরো নদীর
পারের....
কোথায় গেল সেই
রঙিন ঘুড়ির
লাটাইয়ে চড়কা
কাটা বুড়ির হাতছানি!
,চাঁদের পাহাড় আর টেনিদা ম্যাজিক
শ্লেটপেনসিল
জুড়ে খেলার মাঠ!
ডুবে যাচ্ছি
স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিকতায়
এক বিপন্ন
অভ্যস্ততায় আমরা
স্রেফ পাতা
ওল্টাচ্ছি
ভূমিকাহীন
নিকৃষ্ট জীবনের
অংশীদার
হয়ে.....
বরং এসো আমরা
আসিফাদের
নতুন ছড়া
শেখাই....
কেমন করে চিনতে
হবে আদর
কোন আঙ্গুলে
কেমন আদর লেখা
পড়তে হবে
লেখাপড়ার আগেই
আঙ্গুল চিনেই
নামতাঘরে ঢোকা
মেঘ না চিনে
মেঘের বাড়ি গেলে
হারিয়ে যাবি
সন্ধ্যে নামার আগে
আমিও তোর পড়শি
মেঘের মত
ভয় পাস না
ডাকলে পরে কাছে!