তৌহীদা
ইয়াকুব
সহনশীল কবিতা
এইসব দিন রাত্রির ভিতর
অনায়াসে কিছু
আত্মগ্রস্থ মুখের আদল জুড়ে
যায় ,
পূর্বাপর অপসৃত তাচ্ছিল্যের
বেধে দেয়া অন্ধকার ফিরে আসে
লিখে রাখে স্পর্ধিত ঝড়ের
ইতিবৃত্ত।
সারৎসার জীবনের নিঙড়ানো
অপ্রতুলতায়
নামহিন ফসলের মাঠে ঝিমায়
কুয়াশা ।
স্তুতি , আয়োজন সরগোলে, নিবিড়
বসন্তপাঠে
টুপটাপ ঝরে পড়ে পুষ্পদল, বিপুল জলশব্দে অকাল
পঞ্জিকার পাতা উল্টে ভেসে চলে
ক্রুদ্ধ স্রোতের সাথে।
তীরের তূণের মত বিঁধে ফেলে,
বিভক্ত করে যাবতীয় আন্ধকার ।
সহ্যপ্রবণ জড়তা দূরে ঠেলে
দক্ষিণে যেতে যেতে
অবিশ্বাসের ঘুঙুর ভেঙ্গে
ভেঙ্গে বাজে।
আর বাস্তবিকই ওদের নির্ভার
গল্পে
পিঠ আর দেয়ালের সংকোচ
(দূরত্ব) কমতে থাকে ।
প্রিয় নাম
কোন গন্তব্য ছিল নিশ্চয়ই
দ্বিকবিদিক উড়াল ডানা থামেনি
কি ?
কষ্টের দৌড় শেষ করে ভেবো
ওটাও বুঝি মজার এক ধরন
...উমমম--
কিংবা ছিল সঞ্চয়ের আগে
স্বপ্নের বোঝাপড়া
পথের সাথে পথেই দেখা
বিনিসুতো তুলে আনে আজস্র মুখ
।
গমন , অতিক্রমন, যাপন এর ভিন্ন উচ্চারণ
শুধু চলে যাওয়ার আন্দোলিত
স্মৃতি কথা ।
এইসব প্রকোট জীবন ঘেঁষা
চুড়ান্ত প্রবাহে ক্লান্ত সময়
এসে থামে শিয়রের ওমে ।
ঘাসের শৈশবে
শিউলি কথারা ভেজা গন্ধে বুদ
হয়ে থাকে।
অন্ধকারে দূরবাসে
ঝরা পাতা আর হিম হাওয়া মিলে
কোন নাম বলে যায়, সে কি?
কোন নদী কিংবা মানুষ !
কেউ শুনে বিভ্রমের সামান্য
বাইরে থেকে
যে চায় শুনে নিতে, যেভাবে ।
কেউ কখনো তার রাখে নি খবর।
যাপনের কথকতা
কিছু প্রশ্নও অবান্তর
এই ধুলো-খেলা আঙিনা ,
বৈরি বাতাস, শ্বাস-কষ্টেরা
দোলখায় অনায়াসে ।
সময়ের আচ্ছাদন ছিঁড়ে ছিঁড়ে
জেনে গেছি -
নির্ধারণ হয়ে আছে অনেক আগেই ,
যেমন - প্রকারন্তরে
এখানেই কেন পড়ে আছ ?
যখন চেয়েছি রোদ্দুর ছুঁতে
করতলে ঢেলেছো আরও জমে যাওয়া
হিম।
তত্ত্ব জ্ঞান সম্বলিত সামাজিক
মন -
আজন্ম এই বদ্ধ স্নানঘরে আটকে
থাকে।
তাই নির্বিকার এই চলে যাওয়া -
তাই তুচ্ছ ঝড় জল এসে ফিরে
গেছে ।
আমার থাকা না থাকা জুড়ে
এক পৃথিবীর দিন-রাত্রির
কোলাহল।
তবুও মোহ মুগ্ধতার কাছে পৌঁছে
গেছি বারে বারে,
দুর্বোধ্য নীলিমার কাছে ছুঁড়ে
দিয়ে
ব্যক্তিগত অস্থিরতা ।
অনিশ্চয়তা এসে মৌনতায় মিশে ,
তন্দ্রাগত হই, আদুরে তন্দ্রা মুছি না দু-হাতে
সন্ধ্যামালতীর মায়া জড়িয়ে
দেখি
সূর্যমুখী নত হয়ে আছে ।
ধুলোর উঠোন
প্যারিস তুষারে যখন আমি
ক্লেহাপল্লিতে
শূন্য এর নীচে হিম ফেব্রুয়ারী ।
পুঁই ডালিমের ঝাড় , কোন এক চেনা উঠোন জাগে।
অগণিত ভাঙ্গা মন দেখি,
রাতভর প্রান্তিক স্বপ্নের
অভাস জড়ো করে।
জাগে সৈনিক,ধুলোর শ্লেটে লিখে জীবন!
তার ধরন ও বর্ণন কিছু বুঝা
গেলো না।
সংসার
সেই শুরুটা অদম্য ছিল, প্রজাপতি দিন, জোনাক
রাত
হাওয়া এলেই প্রশান্তি জড়ানো
সুবাস,
বারান্দার রশিতে ঝুলানো গোলাপি ওড়না,
ষোলোর আবেগ, প্রণবন্ত , উচ্ছল ।
একা হলেই আড়াল মনে তুমুল
পাগলামি।
ভেসে যাওয়া, ভাসিয়ে নেয়া ।
তারপর দিনপঞ্জির হিসেব,
পাখ পাখালি , শস্য দানার
উঠোন । এবং
মণিকাঞ্চনযোগ গেরস্থালীর মুখে
জ্যোৎস্না ঢেলে দিবে বলে
একটা গল্প অন্য গল্পের ভিতর
ঢুকে যেতে থাকে,
একটা স্রোত অন্য স্রোতের গায়ে
ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে,
সেই থেকে ঠোকাঠুকি করে
কিছুতেই জলজ স্রোত
সমদ্র থেকে বের হতে পারে না।