চৈতালি
ধরিত্রীকন্যা
আমার কক্ষপথে
আসলে ফুলটি ফুটিয়াইছিলো
সুগন্ধ ও ছাড়াইয়া ছিলো
যাহারা গন্ধ পাইয়া ছিলো
তাহারা ইতিউতি খুঁজিয়াও
তার সন্ধান পাইলো না
আর যাহারা নিকটে আসিলো
নাসিকা ডুবাইয়া আরো গন্ধ
লইতে গেলো
তাহারা পুষ্পকীট দংশনে
সুড়সুড় করিয়া পলাইলো
আর যিনি গোটা ফুলটি ছিঁড়িয়া
ঘরে তুলিলো
বদ্ধ ঘরে দম বন্ধ হইলো ।
ফুলটির কাণ্ড লইয়া যিনি কলম
করিলো
তাঁহার বাগিচায় উদ্ভিদ
জন্মাইলো
উদ্ভিদকুল আরো ফুল ফুটাইলো
অত:পর পুষ্প সুবাসে পৃথিবী
মধুময় হইলো ।
বিপর্যয়
অস্থিরতার ভিতর ঝর্ণাকলম
জন্মলগ্ন খসে পড়ে প্রতিদিন ।
একুশের রোদ
একুশের দামাল ছেলেরা কত কথা
বলতে
চেয়েছিলো
সেদিন
ওরা তো কোনোদিন ঠোঁটে পাইপ
রেখে
সাদা শরীরে
আপোষ করতে যায়
নি
চুমু খায় নি কোনো উলঙ্গ
বুদ্ধির মানব সত্ত্বায়
জাব্বার সালাম বরকত ওরা সুকান্তের মতোই
ভয়ানক উদার
ওরা বলতে চায় নি ,
কি করে আকাশ থেকে খসে পড়ে
উল্কা
ধনুকের ছিলায় টান পড়লে কিভাবে
তেড়ে
বেড়িয়ে আসে
তির
ওরা যে বলতে চেয়েছিলো
নতুন শিশু এ মাটির বুকে কী
অসহায় হাত পা
ছোঁড়ে
তীব্র চিৎকারে বলতে চায় মায়ের
কোলের
অধিকার
ওরা বলতে চেয়েছিলো
এক বর্ণের থেকে অন্য বর্ণের
পথে কি করে
হাঁটতে হয়
বর্ণের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে
কখন যেনো
অস্পষ্ট ভাষায়
বেড়িয়ে আসে কিছু
সে কি প্রথম বুলির ফুটফুটে
আত্মস্বর !
উল্টোপাল্টা অভিধান থেকেই ওরা
বের করতে চেয়েছিলো
মানুষ শব্দের প্রথম অক্ষরই যে
' মা '
ও আমার মায়ের ছেলে
দেয়ালে কী এঁকেছো আঁকিবুকি রং
তুলিতে
ভালবাসার গান এঁকেছো ?
বর্ণমালার বৃষ্টি এঁকেছো ?
আজ একুশের রোদ উঠেছে আকাশে
আমাকে একটু জায়গা দাও
আমি এঁকে রাখি ফেব্রুয়ারি কী
করে কাঁদে
গুমরে গুমরে
কি করে মুঠি উপরে তুলে রফিক
বলছে
তুমি আর কেউ নও
তুমি আমার মাতৃভাষা ।
ছিন্ন
আকাশজলে ভাসছে মেয়ের শরীর
ছেঁড়া নগ্নতা
কান্না তেজে কুল সে নাভীর
যৌনমাখা ভগ্নতা ।