বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১৮

শাহানারা ঝরনা


শাহানারা ঝরনা

লাল টিপ

কবিতা প্রহরে হাসে বিবেকের মাঠ
দেখি, নক্ষত্র আকাশ, রাশি রাশি ঝরা ফুল,
বিতর্কের ঝড়ে নাচে অসহিষ্ণু মানবতা --
পান্ডুলিপিতে সাজানো হয় লাল টিপের ইতিহাস।


লাল টিপ ভালবেসে একদিন-
ঘর ছেড়েছিল সুরমিলা
পরিত্যক্ত মাঠে বুনেছিল অন্তর্দ্বন্দ্বের বীজ
পায়নি সে ত্রিতাল প্রশান্তির আমেজ


নিয়মের অস্থির নিষ্পেষণে
ক্রমাগত পাল্টে যায় সব
গলে যায় মেধার পাহাড়, জমাকৃত স্বপ্নের মোম
নিষেধের প্রাচীর ডিঙিয়ে সে যেতে পারেনা কোথাও!


রোদঘুম ভেঙে ডানা ঝাপটায় পাখি মন
বিবর্ণ কুয়াশার ভেতর ভাসে তার আপন প্রতিচ্ছবি
কত ঋতু বর্ণালি হয়, বসন্ত আসে যায়,
রোদে পোড়া জীবন নিয়ে
সুরমিলা তবু লাল টিপ ভালবাসে!
বুকের ভেতরে আঁকে লাল টিপের স্মৃতিচিহ্ন।






বসতি চিরন্তন

কবিতা বোঝেনা বাঁশরি বালক শুধু চিনে নেয় ফুল
সমতার পথে আশা মালা গেঁথে আমি থাকি মশগুল
বিরহি বাতাস কলস্বরে মাতে পাখিরা সুরেতে গায়
মন নদী তীরে জমা কত কথা কখনো তো ভেসে যায়!


কবিতা বোঝেনা বাঁশরি বালক তবু খুনসুটি দিন
অনুভূতি নিয়ে মিলেমিশে থাকে হয়না তো পরধীন
হৃদয় বেদিতে ফুলেল-আরতি আকুলতা মায়াময়
একাত্ম হয়ে কাটে কত যুগ বুকে জাগে বিস্ময়,,!!


কবিতা বোঝেনা বাঁশরি বালক তবু কবিতার জয়
কাল মহাকাল কবিতার পথে হেঁটে চলি নির্ভয়
কবিতায় মেশা নেশা ভরা মন আবেশিত সারাক্ষণ
ভালোবেসে মোহে কবিতা বাড়িতে বসতি চিরন্তন!!






তোকে ভেবে

ওই যে আকাশ সাগর পাহাড় বুকে জাগায় প্রতিধ্বণি
তুই বললি ভয় পাস্ না এনে দেবো মুক্তো ..মণি ..
সেই আশাতে থেকেই আমার বুকের বাগান যাচ্ছে পুড়ে
মন মাঝি তুই আমায় ছেড়ে কেমন আছিস অনেক দূরে..??
পুঁইলতাটা ডাগর হলো মিষ্টি হাসে গোলাপ কলি
ইচ্ছে বাতাস দুরন্ত খুব কেমন করে তোকে বলি ..!
ডালিম গাছে ফুল ফুটেছে ফাগুন এলেই কোকিল ডাকে
বৈধ অনুভুতির রঙেই হৃদয় আমার স্বপ্ন আঁকে..
প্রজাপতি দিনগুলি যায় পরিযায়ী পাখির মতো
বুক দেউলে শংখ বাজে ..পালন করি মৌনব্রত
মৌরি বনে অভিসারে গিয়ে ও হঠাৎ থমকে দাঁড়াই
বনপলাশের গন্ধে মেতে গভীর রাতে একলা হারাই
সন্ধ্যাতারার হাতছানিতে দিকবালিকা যেমন সাজে
তোর জন্যই তেমনি সাজি সময় জুড়ে সানাই বাজে
বার্তা নিয়ে বন কবুতর অঙ্গনেতে যখন আসে .
মন দীঘিতে মুখখানি তোর কোন মমতায় তখন ভাসে?
পদ্মপাতার নৌকো বানাই রাঙা পায়ে আলতা পরি
তোকে ভেবেই নীরব রাতে চাঁদকে বুকে আগলে ধরি
অলক খোঁপায় যেদিন দিবি কৃষ্ণচূড়া ফুলটি গুঁজে
ঠিক সেদিনই আমার সকল পাওনা যতো নেবো বুঝে
মনমাঝি তুই সময় হলেই নৌকো ভিড়াস আমার ঘাটে
জানিস না কি তোর অপেক্ষায় দিন ক্ষণ মাস বছর কাটে..??






হয়তো একদিন

বুকের ভাঁজ ভেঙে একদিন
উড়ে যাবে পাখি মন.....
হয়তো কেউ তার সন্ধান পাবেনা কোনদিন ।
তবুও কতকিছু খুঁজে ফিরি গেরস্থালি গোধূলির
রকমারি ডট. কম এ ...!
সদ্য প্রয়াত কোন স্বপ্নের নিলাম দেখে
কখনো থমকে দাঁড়াই . দুচোখ আটকে যায়
নামাওঠা সূচকের তামারং মানদণ্ডে ।
নিষেধের ছায়াপথ ডিঙিয়ে আমিও জলপথে হাঁটি
অবচেতন চিত্রের সাথে নিজেকে তুলনা করি বাববার ।
কিছু কিছু প্রীতিকথার কলেবর আনন্দে নাতিদীর্ঘ হয়....
.পৌরাণিক স্মৃতিতে জাগে মৌসুমী আবেশ ।
ব্যবধানের সীমানায় শুনি নিঃশব্দ সানাই ।
জনশ্রুতির বিবর্তন হয় |
বোঝা না বোঝার টানাপোড়েন নিয়েই
জাগতিক ভাবনা সাজাই |
বিষাদের পুঁতিতে গাঁথি লোকাচারের মালা ।
মালার সুতোলিতে বিবর্ণ অনুভূতির ছায়া পড়ে...
পালাবদল হয় বিপ্লবী মুহূর্তগুলোর !
সহসাই বিশ্বাসের তাপমাত্রা নেমে যায়
জিরো সেন্টিমিটারে ...
বুকের ভেতরে বাজে আবহমান তীর্থযাত্রার সুর !






নির্মল আকাশ দেখি

আগুন বাতাসের ডানায় উড়ে চলি

বুকের মঞ্চে জ্বলে অনাবশ্যক প্রেম

হয়তো কেউ পাশে দাঁড়াবেনা আর ,

তবু আমি নির্মল আকাশ দেখি

শরীরে মেখে নিই আস্থার রেণু !