ঝুমা
মল্লিক
বসন্তের শেষে
বসন্তে রাধা একাকী বসে
কৃষ্ণচূড়ার রঙে সাজিয়েছে বেদী
আলোঝলমলে শহরে আলোকিত রাধা
পলাশের মালা গাঁথে পলাশে
সাজে।
রাধা আজ পলাশের রঙে রঙিন
আঁচলে তার সুখের চাবি ।
কপালে লেপেছে লাল চন্দনের
টীকা
পায়ের নূপুর সুরে বাজে
রাধার প্রিয় বাঁশিতে আজ নতুন
সুর ।
পূর্ণিমার রাত আজ নদীর ঘাটে
একাকী রাধা
আলতা মাখা পা নদীর জলে ধুঁয়ে
যায় বেদনা।
পূর্ণিমার আলোতে খোঁজে আরো এক
নতুন বসন্ত ।
একদিন
একদিন পথভোলা
এক পথিক হব
হারাবার নেই ভয় আর পথে
যদি হয় ঘর।
পথের শেষে মিশে যাবো অন্য পথে
।
একদিন সুখ হব,বাঁধবো জীবন সুখে
সুখের চাবি রাঁখবো আঁচলে বেঁধে
মস্তবড় ফ্রেমে
বন্দী হবে সুখী জীবনখানি
একদিন সাহসী মন হবে প্রতিবাদ হবে ।
চোখের তারায় জেগে উঠবে
আন্দোলন
সম্মানিত হবে জীবন ।
একদিন চলে যাবো শেষে
শত তারার মাঝে তারা হয়ে
জ্বলবো হেসে
শেষ হবে জীবন যুদ্ধ যোদ্ধা
বেশে।
একলা দুপুর
সূর্যের আলোর ঝলকানিতে ঝলসে গেছে
আজ যেন আলোর উৎসব চলছে ।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে গড়িয়ে
পড়েছি ।
শরীর মাটি স্পর্শ করেছে চোখ
দূরে কোথাও
চোখ যতবার স্বপ্ন দেখেছে পুড়ে
গেছে ।
ঝলমলে পৃথিবীতে আমার চোখ আলো
খোঁজে
যতবার আলো চেয়েছি অন্ধকার
এসেছে কাছে
মনের অলিতে গলিতে উত্তাপের
খেলা ।
আমি শান্তি চেয়েছি শাস্তি
পেয়েছি অবিরত
অজানা জ্বরে আক্রান্ত আমার
শরীর
জানালার বাইরে যতদূর চোখ যায়
ক্যাকটাসের বন
শালিখ জানালার কাঁচে সংকেত
জানি
হারিয়ে যাচ্ছে মন একলা দুপুরে
হারিয়ে যাচ্ছি ,হারিয়ে
যাচ্ছি।
ঝড়া পাতার দিন
বসন্তের শেষে ঝড়া পাতার দল
হারাবার ভয়ে হেরে গেছে
ঝড় এসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে কোন
দূরের দেশে ।
পাতা ঝড়ার দিনে স্বপ্ন ভেসে
বেড়ায়
সবুজ পাতা ধূসর রঙ মেখে
লুটোপুটি খায়
মাটিতে মিশে যায় নতুন মন নিয়ে
জ্বলে যায় কখনো ছাই হয়ে ভেসে যায়
।
যাবার দিনে চলে যেতে হয়
নতুনের আগমনীর গান শুরু
পালাবদল ,দিন বদল
পাতার ও মৃত্যু হয় ।
আমার শহর রঙিন
আমার শহর রঙিন শহর রঙের খেলা
কত,
বসন্তের রঙ,পলাশের রঙ, আবিরের রঙ
আমার চোখে রঙ ,শহর রঙিন , রঙিন শহর
শহরের পথে পথে কত রঙ,রঙের খেলা ।
সাঝির বাবা নিখোঁজ যাত্রী,পেটে ভাত নেই কদিন
রোদে পুড়ে টুড়ে ছাই ছাই রঙে
রঙিন ।হয়েছে জীবন ।
ও পাড়ায় নতুন বউ স্বামী হারা
হল, স্বপ্ন রঙিন
লাল রঙ কেড়ে নিল ওরা সাদাটে
হল জীবন
নিধির মনে বিয়ের স্বপ্ন চোখে
রঙের বাহার ।
নিধির বাবার ক্ষমতা নেই বিয়ের
পিঁড়ি কেনার
রফিকের ছেলে গাড়ির ধাক্কায় পা
খোয়ালো
পা নেই তার ,মন সবুজ রঙে রঙিন ।
রীনা জন্মান্ধ সূর্যোদয়
দেখেনি কোনোদিন
তবুও কত রঙ মেখে জীবন রঙিন ।
সিধু বাবুর বাগান বাড়িতে চলছে
রঙের খেলা
কত রঙ কত রঙ রঙের মেলা যেন
খাবার দাবার হরেক রকম,রঙিন জলটল
সিধুবাবুর কাজের মেয়েও রঙে
রঙিন
শরীরে পেয়েছে রঙ রক্তের রঙে
রঙিন
আমার শহরে শতেক রঙ রঙ
মাখামাখি জীবন
ভিজছে শহর রঙিন শহর ,আমার শহর ।