তৈমুর খান
সমস্ত
দিন শিকারির উল্লাস
জল
উঠছে না জল নামছে ?
নিজস্ব
সংশয়ের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকি
পাখি
মরে যায়
আজ
শিকারির দিন
আবেগে
ঝাপটে ধরি জলের নকশাকে
কিছু
নরমুণ্ড দিব্যি গড়ায়
কথা
বলতে থাকে , দুর্বোধ্য কথারা সব
আদিম
গুহার নিরিবিলি থেকে বেরিয়ে আসে
দম
নিতে থাকি । এরই নাম বাঁচা ?
পোশাক
খুলে ফেলতে ইচ্ছে করে
জোয়ার
না ভাঁটা ?
ভেজা
কুসুমের মতো রমণীর গাল
মনে
মনে সারারাত চাটি —
তাতেও
কি স্বাদ আছে ?
বিষাদ
এসেছে সব ঘরের চৌকাঠে
আর
রোদ্দুর মাখা হাসপাতালে
নার্সদের
মসৃণ ত্বকের উল্কি আঁকা প্রেরণায়
আমারও
জাগরণ পায়
এখানেই
বিহ্বলতা নাচে
নরম
কোনও অন্যমনস্কতার ভেতর
আত্মদ্রোহের
বাজনা শুনতে থাকি
বিশ্বাস
হয় না জল ওঠানামা করে
মুকুন্দ
ফুলের বাঁশির আয়োজনে
বসন্তের
জানালা খুলে যায়
দেখতে
দেখতে খণ্ড খণ্ড মানব জমিনে
শস্য
ঘ্রাণ ওঠে
বাতাসে
উড়ন্ত গান , স্বধর্ম বিলাস
সমস্ত
দিন শিকারির উল্লাস...
আগুন
আগুন
ছুটে আসছে
কত
দূর যাব আর ?
বাঁচানো
যাবে না কিছুতেই
দুইপাশে
সন্ধ্যামণির বাগান
ছোটো
ছোটো ঘর
জানালা
থেকে আলো আসছে
সাপের
মতন ফণা তুলে আছে স্বপ্নেরা সব
লম্বা
সরু হাতগুলি প্রণয়ের গলা ধরে ঝুলে আছে
আকাঙ্ক্ষার
দেশ ভরে আছে নতুন জাতকে
আর
হাওয়ায় মেশাচ্ছে স্বর বাসন্তী বৈরাগী
আগুন
আসছে দাউদাউ
নিজের
ক্লান্তির ছায়ায় দাঁড়িয়েছি
আমার
পার্থিব আচ্ছাদন টুকু নির্বেদ প্রহর গোনে...
আপেল
বাগান
আপেলগুলি
গড়ে আসছে
গড়ে গড়ে আসছে
লাল ঠোঁট মুগ্ধতা নিয়ে চলে
যায়
দেখতে
দেখতে বাগান পেরিয়ে যাই
হরিণেরা শিং ঘষে নেয় ডালে
লাল সূর্যের আলো চুপচাপ বসে আছে
পাতার ফাঁকে ফাঁকে
এক একটা অলৌকিক নদীর মতো
যদিও
মায়াবনে আছি
যদিও গার্হস্থ্য বিষাদে পোড়া মন
তবু হরিণীর মতো আমারও তীব্র
এক ভাষা জেগে ওঠে
ভাষারা প্রকাশ হতে চায়
আপেলগুলি
চেয়ে থাকে
সিঁদুরে আভাস চোখে মুখে —
একটু ছুঁয়ে দেখতে
পারি ?
কে
দেবে অনুমতি ?
বিবাহিত জীবন জুড়ে নষ্ট মধুমাস
আচ্ছন্ন আঁধারে শুধু ব্যর্থ
কোলাহল.....
অশনিসংকেত
মেঘ
করিল
অশনিসংকেত
দেখা দিতেছে
আমি
কি করিয়া স্থির থাকিব ?
চরাচরে
আমার আশ্রয় নাই
দিগন্তে
আমার স্নেহচ্ছায়া নাই
মর্মবিদারক
একটি মাটির হৃদয় লইয়া
এখানে
আমি অতিথি আসিয়াছি
ফাগুন
মাসে কোকিলের ডাক শুনিয়া
ঝরনার
নূপুর শুনিয়া
আমার
আসক্তি বাড়িল
বলিয়া
এখানে থামিয়াছি
বড়ো
ইচ্ছা হইল তাহাদের সুমধুর বাজনা শুনিয়া যাইব
আকাশ
এমন শাসন করিবার কে ?
তাহার
অশনি আছে বলিয়াই কি
এমন
সংকেত দিতেছে ?
আমি
প্রেমে পড়িয়াছি
বলিয়াই
কি তাহার অন্ধকার সমাজ এমন গর্জন করিতেছে ?
আমি
আজও প্রহর গুনিতেছি নিরুত্তর ঈশ্বরের কাছে
ধ্বংস
ধ্বংস
দেখিতে আসিয়াছি
একে
একে সব ধ্বংস হইতেছে
গোরুগুলি
সাঁতার কাটিতেছে
হাতিগুলি
শূড় উঁচাইয়া রহিয়াছে
গর্ধবগুলি
চিৎকার করিতেছে
অন্যান্য
বহু জন্তুর সমাবেশ
কী
প্রকারে বর্ণনা করিব ?
প্রলয়ের
জোয়ার বাড়িতেছে
তরণি
নাই , স্টিমার নাই
কোথাও
একখণ্ড ভূমি দেখিতেছি না
ইহার
ইতিহাসই বা কে রচনা করিবে ?
দু
একটি পানকৌড়ি দিব্যি সুখে ডুব মারিতেছে
আহা
কী মৎস্যই না উঠিতেছে !
আমরা
দয়াবান বিজ্ঞলোক
পুরাতন
একটি ধারণার বৃক্ষে উঠিয়াছি
আমাদের
বিশ্বাস এই বৃক্ষ অটল রহিবে
এসব
দেখিয়া সংকট হাঃ হাঃ হাসিতেছে
এসময়
কাহার হাসি ভালো লাগে !
পুজো আসছে
_____________
কেউ লিখছে।
কেউ লিখছে না।
তবু পুজো আসছে।
দেবতাকেন্দ্রিক সবা।
কাকে কাকে ভরে যাচ্ছে তীর্থক্ষেত্র
তার মাঝেই কিছু বৈধ ধর্ষণ
কিছু নষ্ট ভ্রূণ
হারিয়ে যাচ্ছে ভিড়ে।
চোরকেও বসতে বলছি
একাকী মেয়ের ঘরে....
সাময়িকী
দুধওয়ালির হিসেব ভুল হয়
ঘুঁটে কুড়োনির সন্তান জন্মাবার সাধ
মাছওয়ালির শরীর বিজ্ঞাপন
রোজ রাতে দেখি সেও মাছ হয়
প্রচার
আমাদের হরিহর দাঁড়াচ্ছে ভোটে
নিপুণ যোদ্ধা।
নেতাকেন্দ্রিক আমাদের জয়
পতাকা উড়িয়ে চলো
শ্লোগান ছড়াই..
এই মরশুমে
চকমকি পাথরে আগুন জ্বালাত কারা ?
ঘরবাঁধা শস্যচাষ আর সঙ্গম
কারা কারা নিয়ে এলো ?
এই মরশুম শুধু খরা
ধর্ষণের উৎসবে ভরে গেল পাড়া
সভ্যতা
নীচে নামা, উপরে ওঠা একটাই সিঁড়ি
এর নাম সভ্যতা!
যত খুশি হোক মরীচিকা
মানুষকেন্দ্রিক সব —
বিজ্ঞানও হেরে গেছে
ধর্ম আজ হয়েছে বিধাতা!
রেওয়াজ
যদিও সহজ গান.....
কেউই গাইতে পারে না
অথচ দীপক রাগ অথবা মেঘমল্লার প্রস্তুতি নিচ্ছে সবাই
মূর্খ আকবরও জানতেন না
তানসেন কীরকম গাইয়ে ছিলেন!
সহজ গানেই গোপন থাকে
আমাদের স্বপ্নসহজিয়া।
--------------------