শীলা
বিশ্বাস
প্রবাসী চোরাস্রোতে
নদীর নিজস্ব তরঙ্গে নৌকা ভেসে
যায়
নিভু আঁচে সেঁকে নেয় চাঁদের
এপিঠ ওপিঠ
নীল জ্যোৎস্না এসে ঢেকে দেয়
যা কিছু পার্থিব
গাছের শাখাটি ঈষৎ হেলে থাকে
উন্মুখ নদীর বুকে
কেঁপে ওঠে গোলাপি ঠোঁট
প্রবাসী চোরাস্রোতে
কবোষ্ণ স্তনবৃন্ত থেকে চুঁইয়ে
নামে গ্রহনের সুখ
ভালোবাসা আর হিংস্রতার প্রভেদ
জানে নখের দাগ
খননের চিহ্নটি ঢেকে রাখার
প্রকরণ শেখায় মেঘ
সংগোপনে তার সমগ্র আকাশ মেলে
ধরে নদীর কাছে
চলে যাওয়ার পর
প্রত্যাশা ছিল একদিন
শুভসন্ধ্যা ভেসে উঠবে আলোকিত জলে
এখন ভেসে ওঠে শুধুই নিকষ
অন্ধকার
বন্ধুত্বের কখনও কোনো বয়স হয় না একথা তুমি বোলতে
তুমি চলে গেলে বন্ধুত্ব বয়সী হয়ে উঠল
নৈঃশব্দে পরিযায়ী প্রেম ঘিরে
ছিল কবিতার মধুচন্দ্রিমায়
এখন উচ্চকিত বিরহ নামে
নিঃসঙ্গ কবিতার শরীরে
উপজীব্য
আমার কোনও গল্প বহুদিন তোমাকে
ছোঁয় না
অসম্পূর্ণ পড়ে আছে নীল
মানুষের গল্প
লাঞ্চটাইমের ডেকার্স লেন, চলন্ত ট্রাম,
কলেজ স্ট্রীটের পুরানো বইয়ের
গন্ধ,
কফি হাউসের ভিড়, তুমি নেই কোথাও !
দোকানের ছিটকাপড় থেকে বুদ্ধ
হাসলেন
চৈএসেলে ফাঁকা পকেটে
অজাতশত্রু
ফুটপাথে রেলিঙে বাধা রঙ চটা
কাপড়ের দোলনায় বুদ্ধ কাঁদেন
কোলে নিয়ে কে কান্না থামাবে ?
কোনও মহামায়া নেই কোথাও !
বৈরাগ্য নয় , কৃচ্ছসাধনও নয় ,
বোধির আশ্চর্য বৃক্ষ থেকে টুপ
টাপ ঝরে পড়বে তুমি
আমার গল্পের প্রধান উপজীব্য
হয়ে
আমি সুজাতার পরমান্ন হব ।
গন্ধমাতোন
রজনীগন্ধা ভোর পেরিয়ে গেলে
সকাল বেড়ে দিই সুগন্ধী চায়ে
স্নান ঘরের জুঁইয়ের ফেনায়িত
বুদ্বুদ
গিলে ফেলে রাত্রিকালীন ঘাম
দ্বিপ্রাহরিক সূর্য ছায়াগন্ধ
মেখে
বৈকালিক নদীর কোলে মিলায়
বকুলগন্ধী উড়ুক্কু একঢাল চুল
চিনে নেয় কানামাছি বিকেল
ঘুমোবার আগে বুকের গন্ধটুকু
শুষে নেয় খুশমেজাজি হাওয়া
সুখি বিড়ালের মত আঁশগন্ধ মেখে
খুলে দিই আকাশের বন্ধ দরোজা
প্রথা ভাঙা
উজাগর রাত্রি রাখা আছে
নিষ্পাপ ভোরের কাছে
গন্তব্যে পৌঁছানর আগেই পথ সরে
যায়
নিষিদ্ধ গ্রাফিটি শহরের
দেওয়াল জুড়ে
চিত্রকরের নাম শুধু দেওয়াল জানে
ভেসে আসে শৃঙ্খল ভাঙার শব্দ
প্রথা ভাঙার নিয়ম চালু হলে
পেরিয়ে যায় দশদিক