হরিৎ
বন্দ্যোপাধ্যায়
দাঁড়াবার জায়গা
যেখানেই পা রাখি
সবাই সরিয়ে দেয়
সরতে সরতে সরতে
এখন আমার দেওয়ালে পিঠ
আমার তো কোনো দেওয়া নেই
আমি দাঁড়াব কোথায় ?
দুঃখ
যে তোমাকে দুঃখ দিয়েছিল
তাকে তুমি আজ আলো বলো
একটা দুঃখের হাত ধরে
যখন তুমি চৌকাঠ পার হলে
দেখলে কতো কতো দুঃখের ঘরে আলো
জ্বলা
সে সব আলোর রঙ গাঢ় নীল,
কোনোটা আবার হালকা, কোনোটা খুব আবছা
তোমার ঘরের আলোটাও কখন যেন
বদলে গেছে
সেই আলোয় তুমি আয়নার মতো
স্বচ্ছ
অনেককেই তুমি এখন তোমার বন্ধু
বলে ভাব ।
আজকের তুমি
" কেমন
আছো দিতি ? " ----- বলতেই উঠে এলো
সুদিন, অবিনের মা ----- আমার কবিতার আধার
এখন ৮বি বাসস্ট্যান্ডে
ফাগুনের রোদে দাঁড়িয়ে
আমি ওদের পাড়া ছেড়ে চলে
যাবার পর
দুপুরগুলোকে ও আজ আর ঠিক
চিনতে পারে না
গৌড়প্রাঙ্গণে আমিই ওকে
শেষবার আবির দিই
তারপর কতদিন ও আর দোলে
শান্তিনিকেতন যায় না
শীতের দুপুরে কোনো নির্জন
স্টেশনে বসতে
ও আজ আর মনের থেকে ঠিক জোর
পায় না
কতদিন ও নদীকে বলে নি, " তুমি আমার বোন,
এসো, কষ্ট
কষ্ট কথায় আমরা ভেসে যাই ......"
কেমন আছো মানে শরীর পেরিয়ে
আরও অনেক কিছু
মনের সঙ্গে জুড়ে থাকা হাজার
ডালপালা
পর পর সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে
থাকে আজকের তুমি ।
বাঁকের মুখে
একবারও তাকাও না কোনোদিকে
ভাবো না তোমার দিকেও কেউ
তাকিয়ে আছে
তোমার জন্য তুমি যেন একাই
দাঁড়িয়েছ
পথ একটু একটু করে জমিয়ে
রেখেছে মাটি
তোমার জন্য সকাল থেকে চেয়ে
আছে পথ
একদিন দু'হাতে জড়িয়েছিলে মাটি
মাটি আঁকড়েই ছুটে গেছ গন্তব্যে
আজ চারপাশ নিরুত্তর দেখে
কৃতঘ্নতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে
অভিসম্পাত করো
কী করে ভাবো বাঁকের মুখে
এগিয়ে আসবে হাত !
পায়ের তলার মাটি
কোন দিক গোছাবে ?
সবদিকই তো অগোছালো
তার মধ্যে নেমে আসছে অন্ধকার
ভালো করে দেখাই যায় না কারও
মুখ
আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে
পায়ের তলার মাটি ।