বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১৮

অন্তরা চ্যাটার্জী


অন্তরা চ্যাটার্জী

ভালো থাকার গল্প

মর্মে মর্মে গাঁথা শোক গিলে
বড় হচ্ছি একটু একটু করে।
নিরীহ মেঘেরা ভালো থাকার গল্প শোনায়।
মধ্যরাতে চাঁদ পাশ ফিরে শোয়,
অন্ধকার গুমড়ে মরে আমার উঠোনে।
মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ তরোয়াল নিয়ে নেমে এসে
ঘরছাড়ার হুমকি দেয়।
নিশাচরের কপাল বেয়ে চুঁইয়ে পড়ে
বিন্দু-বিন্দু ঘাম।
হাতের পাঁচটা আঙুল
বর্তমানকে খামচে ধরে
চুপিসারে পথ হেঁটে যায়।







হিসেব নিকেশ

প্রতি মুহূর্তে বিক্রি হই
জানা-অজানা একডজন মৃত্যুর অভিমুখে।
সত্যের মাথা চিবিয়ে খায়
ধূসর মরুভূমির ক্লান্ত বালুকণা।
অভিমানের স্তর বেয়ে উঠে আসে
ভাঙাচোরা অনুভূতির কাটাছেঁড়া গল্পরা,
ভেসে বেড়ায় শুকনো চিনির দানার মতো।
প্রহর শেষে বুকের তলে নীল যন্ত্রণার
পাহাড় চেপে হিসেব কষি----
কিছু ভুল হয়ে গেলো না তো?







নগ্ন সমাজ

তারপর আকাশ থেকে নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার,
রাত্রি উবু হয়ে মুখ গুঁজে বসে।
অনুভবে জাগে আলোকের অভাব,
বইয়ের পাতা থেকে কোটেশন খসে খসে পড়ে।
বিধর্মা বেওয়া নষ্ট ভ্রূণের মতো কুঁকড়ে ছটফট করে।
চিড় ধরে রক্ত-মাংস-মজ্জা।
বঁড়শিতে গেঁথে যায় বাঁচার আশা।
ক্ষণপরেই উঠবে চিতায়,
তবুও ছিঁড়েখুঁড়ে খায় লুব্ধ পিশাচ,
মেটেনা কিছুতেই ক্ষুধার জ্বালা;
বিমূঢ়াকে দূর থেকে দেখে যত
বিমূর্তের দল।
অবশেষে হলাহল জিভে চুষে নিয়ে,
মেকি ধোঁয়াশা ছেড়ে অবলার আত্মা পাড়ি দেয় নিরুদ্দেশে।
চিতাশহ্যায় গলে পড়ে----
জীবনের প্রতি শেষ ভালোবাসাটুকু।






মৃত্যুর কাঠগড়ায়

জীবন নামক বস্তুটার একশোটা ঢেউ অতিক্রম করে
মৃত্যুর কাঠগড়ায় যেয়ে দাঁড়াই।
হাওয়ায় চিনির দানার মতো ভাসতে থাকে
ছিটেফোঁটা অনুভূতিগুলো।
চোখ ঘোলাটে হয়,
জেগে থাকার অভিনয়ে বসাই চাবুক।
তার আগে পর্যন্ত কালবৈশাখী ঝাপটা মারে
না পাওয়ার কোটরগুলোতে।
সুখের মরীচিকার আঁচ চেয়ে
যতি-চিহ্নের বাঁধ ভেঙে আনা দু:খগুলো
যেন আরেকবার বলে ওঠে---
'জেগে ওঠ'






দর্পন

নিজেকে দেখতে যেয়ে
নিজেকেই ফেলে আসা বারবার।
ওপারের আমিতে অদৃশ্য
এপারের আমিত্বের বেরঙিন মুখচোরা গল্প।