সবর্না চট্টোপাধ্যায়
তোমার বাড়ির পাশে
তোমার বাড়ির পাশে
ঐ যে এক পথ, কতযুগ
চেনা..
দেখছি দাঁড়িয়ে দূরে
আজ বড় একলা অচেনা...
পথ যেন হাত ধরাধরি,
এখানেই ছিল আমাদের
চুপিচুপি অভিসার
সে পথ আজও একা
স্মৃতিতে একাকার...
কথারা তবুও বলেনা কথা
কথাদের অভিমানে
কোথাও ব্যথারা বিষাদেই ভরা
কিংবা অশ্রু জানে...
তোমার বাড়ির পাশে ঐ এক
রাস্তা আজও আছে
শুধু আমরাই দুইপথে হাঁটি
দেখা হয়ে যায় পাছে!
সেজ দাদু
সারা মুখে ধূ ধূ মাঠ
ফ্যাকাশে সংসার
ঘেমো ঘেমো
কানে জড়ানো পৈতে
খালি গায়ে হাতপাখা ঘোরায়।
কাকভোরে লাল আকাশ আর
পূর্বপুরুষের তর্পন।
মিটমিটে চোখ যেদিকে যা দ্যাখে
অঙ্ক কষে কষে, শেষমেশ
চারআনা বেশি হলে চোখ বুঝে
দিকশূন্যে হনহন
বাপের জন্মে রিক্সা না চড়েও
চলে গেল হঠাৎ, সেজদাদু।
প্লেনে করে উড়ে গেল বহুদূর
লোটাকম্বল ছেড়ে
ছেলে বলেছিল, ওদেশে
গেলে ক্যান্সার সেরে যাবে।
আর দাদু
মনে মনে ভেবেছিল
'আবার দেখতে পাবো তো
ভিটেটুকু?'
সোঁদাচিঠি
ছায়ার আক্ষেপে ভাতঘুম সারি,
কখন বৃষ্টি নামে প্রবল!
জাপটে ধরছে নিঃশ্বাস
সাঁঝের আড়ালে
উড়ে যাবে জানি!
এভাবেই বারবার
আলগা হবে গিঁট...
ব্যাঙাচি শরীরে শুধু বিষ
হত্যার আগে
তুলে নেব ঠিক
শ্যাওলা জড়ানো সোঁদাচিঠি..
দাদু
জানি থেমে যাবে,
তবুও এভাবে ক্রমশ….
ধীরে ধীরে দেখি
একটা অবাধ্য বাতাস ঘুরে ঘুরে
খইয়ে দিচ্ছে আস্ত শরীর।
ডাক্তার বলেছিল, ' বেশিদিন নেই'!
আমরা পেরেছি তবুও বেশিদিন, বেশিমাস
আরও বেশিবছর...
তবে যে হঠাৎ?
কিডনিতে জন্মালো বিষগাছ….
ধীরে ধীরে থেমে যাবে সব।
শোকের সাগর।
শুধু ঘন কুয়াশার ঘুমে
লাঠি হাতে তুমি চিরকাল বসে থেকো
বারান্দার আরামকেদারায়…
আগুন
নদী হতে পারিনি
বৃষ্টিও না
ঝরতে পারিনা পাহাড়ি ঝরণার মতো।
শুধু মাথা পেতে
বুকে হাত রাখি,
কখন জাপটে ধরবে একটা আগুন।