দেলোয়ার হোসেন
আড়ালে আবডালে
ঘড়ির কাঁটায় বিদ্ধ রাত
ডোবার কটু জলে সাঁতার দিয়ে বাঁচে!
হোগলা-নলখাগড়ার বনে নিশাচরী
পেত্নী-পিশাচেরা
আলেয়ার আলো জ্বেলে মানুষের ঘুম
ভেঁজে খায়!
নির্ঘুম মানুষের চোখে প্রেমহীন
লজ্জা,
দায়-দেনা
দুঃস্বপ্ন আর বিবেক ভাঙার হাতুড়িকাঁপনে
ভোর আসে
রাতের কোন প্রহরে পদ্ম শাপলারা
ফোটে,
তা চোখেই পড়ে না!
মানুষরা কেমন যেনো অধোমুখ নতমুখ
গণতন্ত্র-স্বৈরতন্ত্রের বিভেদ
এড়াতে এড়াতে
জানালায় পেরেক ঠুকে, শিশুদেরও
আকাশের আড়ালে রাখে!
গর্ভিণী
বাপের ভিটা থেকে
জাত বংশের তালুক থেকে
উলু ধ্বনির সাথে মেশে সন্ধ্যা আযান
প্রশ্নে আজো আহত হই
প্রাকৃত জনেরা কোন যৌনানুভূতি
নিবৃত্তে ঘরে আনলো আর্য-যবন?
আমার জারজ জন্মে গর্ভিণী হলো গঙ্গা
যমুনার এক বুক ঘোলা জল?
আমার শহর
ছেলেগুলো আবার আসবে কাল
সাত রাস্তার এই মোড়ে ;
বসে বসে চা- সিগ্রেটে কাকদের
অংশীদার হবে
ভীরু রিক্সায় আলগোছে চড়া কোনো
রেশমি যুবতীর
টালমাটাল বেসামাল শরীর গোগ্রাসে
পড়ে নেবে তারপর !
স্যাঁতস্যাঁতে জিনসের গোপন কোঠরে
অকথ্য শ্লীষ্যের বেজাত উৎপাতে
ভর সন্ধ্যায়ই তারা হেঁটে যাবে একে
একে নর্দমার দিকে
পরদিন ভোর হবে কোনো চিপা গলি বা
ঝোপের আড়ালে
কোনো কোনো যুবতীর লজ্জা আর
সভ্রমভূক আতসী সূর্য কিরণে !
আগুনপাখি
ভিজে চুল তোমার নিতম্ব ছুঁয়ে যায়
আমি ওসব দেখি না
বুকে আগুনপাখি পুষি আর ভিজে চুলে
ফু দিয়ে পাল উড়াই!
তুলোটে কাশফুল সে ছুঁতে চায় নৌকোর
পাল
কালো আর সাদায় মাখামাখি নদী চায়
মেঘের পালক!
কিন্তু কোথায় নদী?
এখন তো না নদী - না নৌকো- না পালের
সময়
বালি আর ধুলোর ন্যাপকিনে তিস্তার
যৌবন কোন কালে খোয়া গেছে !
আমি ওসব ভাবি না
শুধু তোমার নিতম্ব ছোঁয়া ভিজে চুলে
ফু দিয়ে পাল উড়াই আর বুকে পুষি
আগুনপাখি!
বিসমিল্লার সানাই
খুব ঘুম আসে
খুব কাছে চলে আসে ঈশ্বর
অমরাবতী ভেঙ্গে পড়ে পাতার কুঠিরে
মানবিক প্রেম আসে সানাইয়ের সুর গলে
গলে!
আর কি চায় বলো জগত সংসার
আর কোন ক্ষতি নর্দমায় ফেলে বয়ে যায়
নদী
পাখিদের কোমল আত্মা
কোন জাত কোন ধর্ম কোন ভাষা ফেরি
করে যায়?
রোজ রাতে লালনেরা ঘুম নিয়ে আসে
বড়ে গোলাম আলী আসে নক্ষত্র ঝরাতে
সানাইয়ের সুরা ঢালে বিসমিল্লাহ খান
কবিতারা হয়ে যায় মানবিক ফাঁদ!