শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

মন্দিরা ঘোষ


মন্দিরা ঘোষ

চিত্রনাট্যের  আদলে
একটি মুগ্ধসময়ের ক্যানভাস

একটি মুগ্ধসময়ের ক্যানভাসে
সাদা জ্যোৎস্না রঙের ছায়াপথ
ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইটে
সত্যজিতের পথের পাঁচালীর কাশবন
মাথার ওপর সাদাকালো মেঘ
শরতের কিনা বোঝার উপায় নেই
একটি কাঠের রেলগাড়ি
যেটি  ভেসে চলেছে
পুরনো রাজবাড়ির দিকে






ধরা আছে আমার হাত দূর্গার হাতে
ব্যাকড্রপে শরতের সাদা মেঘ
আমবাগান রাজারপুকুর
ছাড়িয়ে আরো কিছুটা দূরে
সেই বকুলের ছায়া
দূর্গার জন্য এবার শাড়ি নয়
নিউ মার্কেট থেকে কেনা
শালোয়ার কামিজ
তাতে শিউলি ফুল আঁকা অ্যাপ্লিকগুলি
হাত মুখ বের করে জানান দিচ্ছে
তাদের উপস্থিতি
কাঠের রেলগাড়িতে
চাকার বদলে শঙ্খচিলের ডানা






সেইসময় দাদু বন্দুক নিয়ে
শিকারে গেলে
পিছন পিছন আমরাও
আকাশের দিকে টিপ করত যখন
শঙ্খচিলের দল উড়ে উড়ে
লাল নীল রঙের পালক
ছড়িয়ে দিত ডানা খুলে
আর মাটিতে আছড়ে  পড়লেই
রঙিন  পালকগুলি
সব সাদা কালো হয়ে যেত
পথের পাঁচালীর আকাশে
সেদিন শঙ্খচিল উড়েছিল
কিনা মনে নেই আর
মৃত্যু মানে এক রূপান্তর
এমনি জানতাম তখন







দূর্গাদালানের মাথার ত্রিশূলে
আটকে আছে আমাদের
কাঠের রেলগাড়ি
আমরা নামছি ভেসে ভেসে
পিঠে শঙ্খচিলের লাল নীল ডানা
যেগুলি রেলগাড়ি থেকে খুলে নেওয়া
দূর্গার হাত আমার হাতের ভেতর
ভোলাদাদুর মাটি মাখা হাতে
খড়ের কাঠামোটি সেজে উঠছে
ধীরে ধীরে
আর আমি হাত ছাড়িয়ে 
অবাক হয়ে দেখছি দূর্গার মুখ
আর সেইসময় দিদিঠাকরুন
নারকোল নাড়ু হাতে
ঘরের দাওয়ায় অপেক্ষায়








চারিদিকে পূজোর গন্ধ
এক আঁচল শিউলিফুল কুড়িয়ে
দূর্গার হাত ধরে
শেষ তুলির টান দেখছি
সেই সাদা জ্যোৎস্না রঙ
কাশফুলের ছায়া চাতালে
আর আমার হাত ছাড়িয়ে
দূর্গা একটু একটু করে
মিশে যাচ্ছে খড়ের কাঠামোয়
বাইরে কাঠের রেলগাড়ি দাঁড়িয়ে
হুইশেলে কাঁসরঘন্টার শব্দ!
আর আশ্চর্য!গাড়ির চালকের আসনে
পথের পাঁচালীর অপু না!