শংকর ব্রহ্ম
মন ভাল নেই
এমন সময় , কি
আর কবির
মনটা ভাল থাকে?
অসভ্যতা ,
মুখোশ যখন সভ্যতারই ঢাকে।
অসুস্থ দিন ফুরিয়ে যায়
তবু সুস্থতা ফেরে না ,
কবির মনে কষ্ট বড়
শুধু ব্যথার আনাগোনা |
রাত্রি ফুরায়, যে
দিন আসে
রাতের মতো কাল ,
এর চে' ছিল
আদিম যুগের
অন্ধকারই ভাল
অনেকে যখন স্বার্থ লোভে
মুখোশে মুখ ঢাকে ,
তখন বল ,কি
করে কবি
মুখটি বুঁজে
থাকে,
আর মনটা ভাল রাখে ?
কবির জীবন
একটি কবিতা আমি পেয়ে গেছি
ভোরবেলা,পাখির
কূজনে,
একটি কবিতা আমি পেয়ে যাই খররৌদ্রে,
শীতল জলের স্নেহে,দুপুরের
রমণীয় স্নানে।
একটি কবিতা আমি খুঁজে ফিরি
সন্ধ্যায়
গড়িয়ায়, পিক্লুর
চায়ের দোকানে,
একটি কবিতা এসে ধরা দেয়
অকস্মাৎ গূঢ় রাতে, মোহময়
টানে।
একটি কবিতা ভুলে কাছে আসে
দাগা দিয়ে চিরতরে সরে যাবে বলে,
একটি কবিতা শুধু দূরে গিয়ে
অনায়াসে,ভালবেসে কাছে আসে চলে।
কবির জীবন কাটে কবিতার সাথে,
এইভাবে বিষাদ-সুখে, দিবসে
ও রাতে।
বুকে প্রেম জাগে
কবিতা কবিতা করে কেটে যায়
দিন মাস বছর বছর,
শব্দের পিছনে ছুটি ছন্দময়
তবু তাতে কাটে না যে ঘোর।
চোখের সামনে ঘোরে
কত পরী সুন্দরী,
দেখি না তাদের
সেই দিকে দিই না নজর।
চুল পাকে দাঁড়ি পাকে
বুদ্ধি তবু পাকে না যে তোর,
চারিদিকে ধান্দা এত,
কিছু কর
শুধু তোর
কাটে না যে কবিতার ঘোর।
সামনে জীবন দেখ
বয়ে যায় নদীর মতোন,
ধূসর মন্থর বেলা নেমে আসে
ছন্দ মোহে জীবনে যে তোর
বুকে প্রেম জাগে কি তখন?
সত্তরে স্বাধীনতা
( কয়েকটি অবান্তর দৃশ্য )
আজও অন্ধ কানাই সত্তর বছরে
দাঁড়িয়ে পথের মোড়ে
বাটি হাতে ভিক্ষা করে |
বস্তিতে রাস্তার কলে
জলের জন্য আজও কাড়াকাড়ি
মারামারি
বালতির আঘাতে মাথা ফাটে
মঙ্গলার মার
তাতে কিবা এসে যায় কার ?
বন্যায় আজও যার ভেসে যায়
ভিটে মাটি , ঘর
বাড়ি সব
তারা বুঝি স্বাধীনতা করে অনুভব ?
[ বাহাত্তরমত স্বাধীনতা দিবসের
দিনে আমাদের সকলের প্রার্থনা হোক ]
( ১৫.০৮.১৮)
প্রার্থনা
এখন কবিতার শব্দগুলি
সরাসরি উঠে আসুক বুলেটের মতো
দাঙ্গাকে বিদ্ধ করে,
এখন কবিতার ছন্দ
আচমকা বেজে উঠুক ডুগডুগির মতো
সাম্প্রদায়িক পিঠের চামড়ায়।
এখন কবিতার রূপকল্প
বুকের ভিতর জ্বলে উঠুক
মশালের মতো
যাতে অন্ধ সংস্কারগুলো সব
একসঙ্গে দাউ দাউ করে পুড়ে যেতে
পারে।
এখন আর কোনো কথা নয়
আমাদের একমাত্র জপের মন্ত্র হোক,
অন্য কোন অমৃতলোকে নয়
এই মর্তলোকেই মানবতা মূর্ত হয়ে
উঠুক।