প্রদীপ কুমার পাল
যদি ...
টুপ টুপ করে ঝরে পড়ে
শিশির বিন্দু
গাছের পাতা বেয়ে
অঘ্রাণের হিমেল হাওয়া বয়ে যায়-
শির শির করে ওঠে আদুল গা
শিশিরের বিন্দুর সঙ্গে মিল আছে
আমাদের হৃদ্ স্পন্দনের ।
হঠাৎ করে যদি থেমে যায়
হৃদস্পন্দন
তখন ?......
নৈঃশব্দ
পাহাড়ে এসেছি
শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ
নিঃশব্দ উপুর হয়ে প্রসারিত
বনানীর সঙ্গে নিবিড় হতে -
কিন্তু এখানেও
টিলার উপর থেকে ঘন ঘোর
রাত্রি নেমে এলো
শিউরে উঠি, একাগ্রতা
ভগ্ন হয়
শুকনো পাতার উপর দিয়ে
কারা যেন হেঁটে যায় -
ঘাতকের পায়ের শব্দ শুনতে পাই...
বন্দি
সীমান্তে যুদ্ধ জয়ের পরে
টুপিতে পালক গুঁজে
ফিরেছি নিজের ঘরে
হারানো ঠিকানা খুঁজে।
দীর্ঘ পথের শেষে
গৃহে ফিরে গেছি ঠিক,
গৃহযুদ্ধে অবশেষে
আমি মৃত সৈনিক।
বিশ্বযুদ্ধ জয় করে
গৃহযুদ্ধে আমি --
চক্রবুহে ধরা পড়ে
বন্দি আসামি।
চৌদিকে সুউচ্চ
দীর্ঘ প্রাচীর --
উপরে আকাশ
আর মেঝেটা মাটির।
এইখানে সমাধিস্থ
এই দেহ মন।
এই খানে গৃহবন্দি
যাবজ্জীবন।।
বৃক্ষ-জন্ম
একটা চেনা নিঃশ্বাস আজও
আশ্বাসের মাঝে দীর্ঘশ্বাস।
ঝিরঝির বৃষ্টির সাথে আসে প্রেমের
প্রস্তাবনা নিয়ে --
এ-যেন কালবৈশাখীর পূর্বাভাস।
পরিযায়ী পাখির দল আসে শীতের
প্রাক্কালে।
আলাপচারিতায় বাসা বাঁধে নিজস্ব
নিয়মে।
স্বপ্ন কেনা-বেচার গঞ্জের-হাটে
তারা শুধু স্বপ্ন কেনে,
--
দিন শেষে রেখে যায় শূন্য-খাম
গঞ্জের নামে।
কবির নামে কোনো খাম আসে না।
পাতা ঝরে যায়,
ঝরা-পাতা উড়ে যায় --
কবির বৃক্ষ-জন্ম উদাসীন শাখা মেলে
দাঁড়িয়ে থাকে
এক হরিৎ ভবিষ্যতের প্রত্যাশায়।
স্মৃতিরা কবিতা হয়ে যায়
ভারাক্রান্ত উদাসী মন নিমগ্ন
কবিতার পাতায়।
ঝরে পড়া বসন্তের লাল পলাশ
আগামীর কাছে জানিয়ে দেয় আমি আসবো।
শিশুসুলভ মায়াবী হাসির মাঝে
স্বপ্নঘোর
অনিদ্রায় চেখের পাতায় পড়েছে কালির
দাগ।
হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির মাঝে খুঁজে
ফিরি কবিতা।
অতীতের কিছু যন্ত্রণা আজও নাড়া
দেয়।
ভাবতে ভাবতে তার মুখ ভেসে ওঠে --
স্মৃতিরা কখন কবিতা হয়ে যায়!