শ্রাবণী সিংহ
ছিন্নমূল ভালোবাসা
অচেনা নেই,সব
জায়গাতেই চিল-চড়ুইয়ের সংসার,
অদ্ভূত কিচিরমিচির
তোমার মধ্যে অন্য মানুষ দেখি যেদিন
সীমানা ভাগ হয়
বাস্তুভিটেয় ঘুঘু চরে নি, একটাও
পাতা ঝরে নি সেদিন
জলভরা তালশ্বাস চোখে চেয়েছি শুধু
দুটো নদী মনসহ মানচিত্রে এক হয়ে
যাক্
জাল
ছো্টোখাটো বৃষ্টি চেলোর সুরের মত
শোনাচ্ছে,
কাদের মন্ত্রগুপ্তি, ফিস্ফাস
কাঁচ-ঘেরা অন্ধকারে?
ঈশ্বর মানুষ তো এঁকেছেন, তার
নোংরামি মুছে ফেলেন নি
মাটির তৈরী উর্ণনাভ দেয়ালে
জালে জড়িয়ে গেছি কখন টের পাই নি
অন্যের বোনা
সাধাসিধে হওয়াটাই অমন
এক নয় বহু’কে
সুযোগ করে দেওয়া।
রঙিন মানুষের কোলাজে
ইচ্ছেহয় ভেঙে ফেলি
সমস্ত পরিভাষা
ট্যাবু ও টোটেম
ছুৎ মার্গের গলি ছেড়ে ছুটে যাই
রাজপথে
বিচ্ছিরি মদ-গাঁজার গন্ধ
প্রতিটি মুহুর্ত্ত যেন পলাতক
প্রজাপতি!
নিয়ন ঘাসে
ভেঙে যাওয়া মদ্যপের সোরাহি
টুকরো টুকরো বিলাপ, মনোবেদনা
প্রার্থনা ও ঈশ্বরের মধ্যে
কে কাকে কতটা নিঃস্ব করে গেল জানে
শুধু রাতের সরাইখানা
অদেখা চোখের তারায়
চোখের ভেতরও আর এক অদেখা নদী,
নিষ্পলক তাকালে চোখের কর্ণিয়া জলে ভাসে,
আর এও সত্য যে সুন্দর পাখির দিকে
বারবার তাকালে
ভেতর ভেতর এক আদিম শিকারের নেশা
জাগে
কতটুকু হিংস্র তারা!
বৈরাগ্যের হাত ধুয়েছে যেদিন
পশুরক্তে
বিবেকের উঠানে দাঁড়িয়েও
দলবদ্ধ অথবা
এককভাবে
মানুষই এখন মানুষের সর্বশেষ শিকার!
জীবনের মানে এখন
সুন্দরের স্পর্শ পেয়েই তুমি নেচে
গেয়ে উঠো মিনারে
ভেবেছিলে পৃথিবীর সব ক’টা
ফ্লাইওভারে,
ফাঁকা রাস্তায় অর্গ্যান বাজাবে
একদিন
সুযোগ বুঝে করতালি,সালসা
নাচ
ব্যস্ এতটুকুই খুঁজেছিলে জীবনের
দামে!
তুমি জানতে না
উড়ালপুল মানেই মাথার উপরে টাঙিয়ে
রাখা মরণফাঁদ!
তুমি জানলেও না দু মিনিট নীরবতায়
তোমার স্মরণে শোকসভা হচ্ছে কোথাও
মোমবাতি মিছিল
আর তুমি তোমার হারানো পা খুঁজছ
নগরীর ধ্বংসস্তূপে!