শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রীনা তালুকদার


রীনা তালুকদার

শরৎ সিঁথি

তোমরা বলো শরৎ এলো উঠোন কোণে কাশের বনে
খোজা খুঁজি সারাবেলা এখান সেখান খোঁজ কতবার
পাইনি খুঁজে সেই শরৎটা আবছা আকাশ ছায়া আঁধার
আয়নায় গিয়ে দাঁড়াতেই ভাসলো সিঁথির কোণে কোণে
রাতের কালো চুলে এলো মেলো শরৎ আঁকা ছবি
অসাধারণ দক্ষ হাতে বুনছে বীজ কোন্ সে তুলির কবি ?
কোন্ সে শরৎ বাঁধে বয়স চুলে চুলে মাঝ গগণে

ছায়া ছায়া শাদা মেঘের ফাঁকে একটু আলোর রেখা
আদিম গাছে বসন্তটা পূর্ণ হলো শাখায় শাখায়
দূর গ্রামে খাগড়া বিলে কুচুরি ফুলে শরৎ মাখায়
কাশের সাথে গভীর প্রেমে বকের দলে শরৎ দেখা
সেই ফুল শাদা শাদা ফুটলো বনে বনে শরৎ নামে
পায়রা পাখে লেখা চিঠি পাঠালো কে সে শরৎ খামে ?
নিরানন্দ শরৎ আছে বসন্তেরই হৃদয় কোণে।






দূরত্ব

এত কাছে তবু ছুঁতে পারি না
এই অক্ষমতার ক্ষমা নেই কখনো জানি
এই কথা সেই কথায় ফুরিয়ে যায় দিন
আলঝেইমার্সের আক্রমণে ইদানিং
ভুলে যাই কত না পাবার কথা

কত কিছুই হবার ছিল কথা
ওঠেনি হয়ে কিছুই চাহিদায়
কেবল হবার মধ্যে হয়েছে দূরত্বের বালুচর।







সাহসী একা

মাঝে মাঝে আমারওতো অভিমান হয়
অভিমানের কাঁটা গুলো বিদ্রোহী হয়ে ওঠে
মন বলে থাক কেউ নেই কিছু নেই

স্বার্থান্বেষী চিন্তার বাঁকে ভুলে যায় মানুষ
চলমান জীবনে কেউ কারো নয়
বিক্ষত সময়ে সামর্থের কাছে শুধুই একা

পিছন ফিরে লাভ নেই এমন
অপারশেন থিয়েটারে বাধ্যগত রোগী
নিশ্চিত ভয়ঙ্কর পথ জেনেও যেতে হবে
সামনের দিকে সাহসী একা !






মুক্ত পাখি

দায়িত্ব কমিয়ে দিলাম যাও ঘুরে বেড়াও
যেখানে যখন খুশি সেখানে
কলাপাতার পেলব শির ছুঁয়ে বৃষ্টি নামাও
পদ্মার উত্তাল ঢেউ দিয়ে
বলবো না কোনো অভিযোগের কথা
প্রাণের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা;
খর্ব করে অভিযুক্ত হবো না কোনোদিন
মানুষ অধিক ভালোবাসে
নতুন খনি আবিস্কারে ব্রতী হও গবেষক

বসন্ত এখন কল্যানময় চারিদিকে
ভালোবাসতে হয় ডাকাতিয়ার সাহসে
বহ্ম্রপুত্রের মৃত কঙ্কাল দেখতে ভালো লাগে না
রোজই আমাজানের আঁধার ভেঙ্গে
ছুটে যেতে চাই জাপানের দেশে।






শতাব্দী পোড়ানো আগুন

ভাল আর থাকা হয়নি কখনো
এমন নির্বিচারি বাধ্য জীবন যাপন কেনো ?
প্রগতির সাথে মৌলবাদ একঘরে থাকে কখনো ?
বড় বিবেকী যাতনার বিধ্বংসী বিষ

বলতে হয় যা মানি না,
স্বাধীনতা মানে যা খুশী তা নয়
বলতে হয় তবুও মনে যা আছে
সদা শালীন শব্দের আভাসে
বলো নির্ভীক, কেউ শুনুক না শুনুক
বাঁচা মরা জীবন নিয়ে শংকা করে কি লাভ
মৌলবাদের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে মানুষ
ঘরে বাইরে লেবাসের ভিড়ে
মানুষ আকৃতির মৌলবাদ মস্তিস্ক, চোখ, মুখ
চালনা করে বিক্ষত করে স্বাধীন ঘর দোর সমাজ

নেই কোনো সহজ পথ জানা
কি ভাবে যায় ভাল থাকা
কে আছো বলে যাও আজ
না হয় কিন্তু প্রমিথিউস হবো ভীষণ জেদে
বলবো এই নাও ; হাত ভরে মন ভরে
ঘূণে ধরা শতাব্দী পোড়ানো আগুন।