শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

তাপসকিরণ রায়


তাপসকিরণ রায়

ক্রমশ পুড়ে যাচ্ছে

দিনের আলোর আড়ালে রাত্রিকে প্রার্থনা করি

জীবনগুলিতে রাত্রিতে হারিয়ে ফেলার রোদ 

লাল আলোর অন্ধত্ব ছিঁড়ে যাচ্ছিল

অথচ একটা হাত ছুঁয়ে আছে তোমার জঙ্ঘা

আদুর গায়ে এই পৃথিবী ঘুরে যাচ্ছে

আসলে মাটির গন্ধ মাটিতে হারিয়ে যেতে-যেতে

সমস্ত দুর্বলতা রেখে গেছে একটা ঘর

তারপর বালিয়াড়ি ঘর, তার কালিমাখা কাঠামো 

আবারও নিয়ম উল্লঙ্ঘন হল। তোমার গামছা বেড়

একটা নিয়ম-শৃঙ্খলার বাইরে যেতে যেতে

তোমার কামশাস্ত্র ধুয়ে যাচ্ছে জলের গড়ানে

জন্মান্তর হচ্ছে, ক্রমশ কথাগুলি চরিত্রহীন হয়ে আসছে

সেখানে ভালোবাসা ছড়িয়ে যাচ্ছে পাত্রে পাত্রে

তুমি মুছে গেলও জন্ম নিচ্ছে শেওলা

রঙ মাছের পালকে ছড়িয়ে যাচ্ছে স্ফুলিঙ্গ

তুমি উড়ে যেতে যেতে এক বিন্দু

তখনই উড়ে গেলে তুমি

আর একটা পিপীলিকার পাখা ক্রমশ পুড়ে যাচ্ছে






আবাহন

একলা হলে কখনও রাতে একাকী শুয়ে থাকতে ইচ্ছে হয়

কিছুটা দূরত্ব রেখে আমি গন্ধ নিতে চাই

সোঁদা গন্ধ ও শ্যাওলা মাটি,

একাঙ্ক নাটকের একটা চেহারা, নিশি ডাক স্বপ্নের মাঝে কিছু মোহ ঘ্রাণ পাই।

প্রেতিনী ছায়া তবু ধরে রাখি মনের কন্দগহ্বর। 


ভিজতে ইচ্ছে হয়. গরম শুষে নেয়,

তবু ভাব শরীরে আমি নাচি নাচি, অদ্ভুত নেচে উঠি

হাত পা ছুড়ে, আসলে তোমায় ডাকি--এই হাসি বা কান্না যাই বলো--

আসলে এ সবই আবাহন।







বর্ষাশরীর

বর্ষার গা থেকে আগুন বের হচ্ছে।

তুমি খুঁজে ফিরছ এক চাপড়া বরফ,

বরফের মাঝ থেকে ফেটে পড়ছিল উষ্ণতা, তারপর শ্বাস,

হঠাৎ শ্বাস উঠে গেল এবং সেখানেও একটা অস্তিত্ব !







সংস্পর্শ

সাগরের নিচে শঙ্খ বেজে উঠলো

আর তারপর থেকেই তার ঢেউগুলি উচ্ছলে উঠলো তীরে

সেখানে অসংখ্য প্রেমিক-প্রেমিকারা ডেকে উঠল

ঠিক সেই শাঁখের ধ্বনির মাঝে

একটা ঝিনুক শব্দের মাঝে খুলে গেল

তার পদ্মনাভ যোনিতে জন্ম নিচ্ছিল মতি

তার সংস্পর্শে এসেছিল সেই শঙ্খ

ঝিনুক তাই কেঁপে উঠেছিল,

সে ঝিনুকের মাঝেই এক জন্মবীজ ঢুকে গেল

তারপর থেকেই তার পেটে মতি জন্ম নিচ্ছে

আর একটা ঘরের রূপসী কন্যা অপেক্ষা করছে

কখন সাগর সেঁচে একটা মানিক উঠে আসবে

অপেক্ষাগুলি এভাবেই অস্তিত্বের জন্ম দিচ্ছে






শ্যাওলা

প্রেমগুলি শ্যাওলা হয়ে যাচ্ছে

রঙিন মাছের ঝাঁক এভাবেই গর্ভবতী হয়ে যাচ্ছে

হাওয়া ও মাটিতে আপনি আপনি বীজ বপন হয়ে যাচ্ছে

অযাচিত সমর্পণ ঘটে যাচ্ছে

নারীর জঙ্ঘাদেশ বদলে যাচ্ছে

আর সেগুলি উঠে আসছে হাওয়া ও মাটির স্পর্শে

একটা চুমু জন্ম নেমে। 

এমনি মোহে অজন্মা হয়েছিল

অকাল ও দুর্ভিক্ষের বন জ্বলে খাক হতে পারেনি।

তবু আগামী আছে, শরীরের গভীরে

একটা ভ্রূণ গেঁথে গেছে। 

আগাছা জন্মাচ্ছে,

একটা নর বীজ মাটিতে পুতে যাচ্ছে।

শত শত আগাছার মাঝে জন্ম ও মোহ

ঝকমারি ইলিগল এলিমেন্টস।