শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সৌরভ মজুমদার


সৌরভ মজুমদার

আমিগন্ধা

ও আমার না হওয়া মেয়ে আলুথালু আমিধংস, আমিগন্ধা আমার  
তোকেই স্নেহ শ্রম দিয়েছি ওম দিয়েছি দিলাম আমার ওঁ ব্রহ্মা -   
সাতজন্মের মা গন্ধময় দানব দুপুর, বাতাস স্তব্ধ পশু খামার      
আমার যৎসামান্য সৎমেয়েটা, অকারণে আকাশমুখো খিদেপুতুল         
তোকে দিলাম পুতুল রাজ্যে কষ্ট শরীর ঘামের ফোঁটা, জানিস ত মা    
শরীর তবু দিইনি তোকে, আমার কোলে শীতের ঘুমে মানুষ মুকুল           
আমার পুণ্যতোয়া শঙ্খমেয়ে, টেবিল ধোয়া তুলসীপাতা আইভিলতা   
আলোর কূপে ভাসান গিয়েও বাণে আসিস প্রাণে আছিস, ও আমার মুক্তধারা  
ফোঁটায় ফোঁটায় জীবন গড়ে, তোকেই আমি সব দিয়েছি
                                                          জীবন ছাড়া 






ক্ষুন্নিবৃত্তি

এবার লাইন এ এসে দাঁড়ায় সন্দেহ
জাবর কাটতে কাটতে নেশাগ্রস্ত যাযাবর গাছেদের মত
-           আমরাও কি লাইন এ দাড়াই নি কখনো !  

এ আর নতুন কি
শরীরে লেপটে নিয়ে সবটুকু আঁশগন্ধ  
প্রথম ঘণ্টার প্রথম হলুদ দুধেই পৃথিবীর যত আঃ ... 
সাঁতারলব্ধ দু এক ফোঁটা কাঞ্চনজঙ্ঘা

আকাঙ্খার আয়োজনে নীল ঘাম আর শাদা কবুতর
হরিতকি আমলকী বহেড়া গাছচিনির সুস্বাদ চিনে চিনে   
শেষমেশ ক্ষুধার্তের গোগ্রাসে সন্দেহ খেয়ে নেওয়া           
                                       আমি দেখেছি





১৮র বর্ষায় একদিন 

কে কত না ভালোবাসায় আছে, এই নিয়ে তর্কটা শুরু হয়ে
গুগুলআর্থ বেয়ে এপাড়া ওপাড়া এদেশ ওদেশ ঘুরতে থাকে 
শেষমেশ মাঝরাতের মানিকতলায় এসেও ফয়সালা হয় না
ইলিশ বেগুন-কাঁচালঙ্কায় না ভাপে...  

আর ওদিকে কেরালায় এয়ারলিফট হওয়া মা সুস্থ শিশুর জন্ম দিলেন
বাহিরে অন্দরে জল ভেঙে ভেঙে - আকুল প্লাবনে, আর
কে না জানে - পাখিসব করে রব 

এই সব কারণেই আজও কবিতা লেখা হয় । 






রাজ ঋষিকে

তোমার হাত টা ছুঁলেই সিলফ্রা ফিশার
দুই মহাদেশ আপন ও পর - 
তোমার পায়ের তলার গুল্ম বীজে
মেরু মরুর গোপন খবর । 

তোমার হৃদপিণ্ডের গভীর তালে
ঘুমায় যে দেশ - অতল জলে
তোমার হাতটা ধরেই আকাশ ঝাঁপায় 
অচিন কোনও নক্ষত্র অভিজ্ঞতায় ।

তোমার হাতের ছোঁয়ায় দেশে দিশে
ছোট্ট হৃদয় সাগর ছাঁচে - ক্লান্ত হেসে  
তোমার গায়ের নীচের মাছের ঝাঁকে 
তারায় ভরা ছায়ার পথও থমকে থাকে ।  

তোমার সকাল তোমার সন্ধে তোমার বিকেল
বেলার পারে - যোজন আলোকবর্ষ দূরের 
ক্ষুদ্র মানুষ তুচ্ছ মানুষ বন্য মানুষ অন্য মানুষ
প্রহর গণে, কখন তোমার হাতটা নেবে  
                              তাহার হাতে । 






হেরে যাওয়ার গান

নিজেকেই বারবার, টুকরো করে ভেঙে  
ট্রেনে চড়ে বসো ।
আপ্কী ইয়াত্রা সুখদ ঔর মঙ্গলম্যায় হো’ –  

ঘোষণার হাহাকার জড়িয়ে, নেচে ওঠো
হেরে যাওয়ার আনন্দে ।
আরো একবার   

হেরে যাও তুমি - 
শুধু হেরে যাও । আর হেরে যাও । আর হেরে যাও । 

আর প্রতিবার, উঠে দাঁড়াও - অবোধ ছন্দে 
আরো একবার হেরে যাওয়ারই জন্যে - 
                    জেনেশুনেই । অমৃত বাসনা ।   
আর ট্রেনে চড়ে বসো
আর আবারো ঘোষণা ...
                   ... মঙ্গল হোক তোমার ।