শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

শুভদীপ সেন



শুভদীপ সেন

মনে করলে, দৈববাণী

উত্তরাধিকারে,এ মেরুদন্ডের গোড়া কোথায়! তা অজানা,
নতুবা,গোড়া থেকে শুরু হওয়া হ্রদের উপাখ্যান। যে স্রোতেরও বৈভব
তাঁরও নাকি পুরস্কারমূল্য জোটে, আর মূল্যহ্রাসে গুপ্ত সরাইখানা--
যেভাবে ফ্যাসিস্ট শক্তির চিৎকারে চাপা পড়ে থাকে, আজমল কাসভ।

কিন্তু;রাজদন্ড প্রদান তো সহজাত প্রথা,শুধু শ্রেণিবিন্যাসে বিভক্ত
ইতিহাস ক্রমশ বৃদ্ধ,সে মুখোশে।তবুও প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানুক
বিপ্লব বিজ্ঞাপনের ছদ্মবেশে সাজে। বিদ্রোহ সদা সদ্যোজাত,
যেভাবে স্নায়ুতন্ত্রের শোকে,সবুজ নালিঘাষ ঈষৎ পরান্মুখ!

বেশ; এ দেহেই আগামী'র পক্ষপাতিত্বে, ভেসে ভেসে
মৃত্যুবরণ-যা কিনা অক্লেশে লাভ করা,পুনর্জন্মের বৈধতা!
এ দ্বিপদ জানোয়ার অবশিষ্ট রাত্রি পোহালে, তামাম ভারতবর্ষে
পুঁতে দেওয়ার সংকল্প করে; প্রাপ্ত পুরস্কারমূল্যের স্বেচ্ছাচারিতা।

কখনও কি পৃথক কিছু ছিলাম?বা অজানা শাসানি?
তবু,হে পাঠক; বুঝে নিতে হয়...কে গর্ভ, আর কে'ই বা গর্ভধারিণী!






মৃত মাছ ও কয়েকটা খোলা চোখ

মহত্ত্বের নালিশে আজও জেগে রয়েছে পূর্ণ ব্যর্থতা
যতদূর চোখ যায় অস্তমিত ভারত,
যতদূর ভগ্ন শপথ,তা আমার অযোগ্য কোলকাতা।
সুপ্ত মৃতদেহের নীচে জবুথবু,আদিম বর্ণপরিচয়!

বলাৎকারের মেঘে দেখেছি কণ্যা,কৃষ্ণকালো
যেন নিরুপদ্রব,এক পৌরাণিক পদস্খলন।
আর কতো বলাৎকার? আর কতো অমিমাংসিত কবিতা?
এ যেন পলায়নরত সৈনিকের রক্তশিশির।
তাই নিজেকেই সমর্পন করেছি অগ্নিবর্ণা,
তোমার শয্যাসুখ মাখা উচ্ছিষ্ট অবকাশে...

আমার বিদ্রোহ জুড়ে প্রেতাত্মা,প্রেতাত্মা জুড়ে ঈশ্বরেও
অথচ সেই-ই ঈশ্বরের দুর্নামে সাজিয়ে রেখেছি
ফুলদানি ভর্তি পশুর মুখ--
আর,'হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি'
জীবনানন্দ দা; তোমাকে যে খুব দরকার
আমরা কেউ সাহস করে মুখোমুখি দাঁড়াতে শিখিনি।






ইনসাহ্ আল্লা

শাস্তি হোক, বিশ্বস্ত মৃত্যু'র সেনানী।

এসো অ'প্রিয়; শরণাপন্ন করো,
ভ্রুকুটির অসম শক্তি অব্যক্ত স্রোত ছিন্ন করেছে--
যে প্রমানিত,
যে দুর্ভিক্ষুক,
অবহেলিত আত্মতুষ্টিও আজন্ম অস্তখচিত--
সমাপ্তে আর্ত,এ রাঢ়মৃত্তিকায় কৃষি করলে না কেন?

খাদ্য পাবে,বস্ত্র পাবে,চাইলে বসতি'ও পেয়ে যাবে।
কিন্তু মাতৃত্ব ফেরৎ পাবে না
আড়ষ্টে তোমার বিরহে চন্দ্রগ্রহন এঁকে
ইজেল হাতে চুবিয়েছি,মান্ধাতার বিলীয়মান পরী!

এসো অ'প্রিয়; শরণাপন্ন করো,নিষিদ্ধ কারসাজি।






অশনি

তোমার তেষ্টায় দেখি বিচ্ছিন্নতা,খুনেরও তো ছিলোনা প্রমান।
আক্ষেপ মিটে যায় ট্রাম-লাইনের ধারে, রুটি-রুজি পুরনো আতপচালে--
এ পথ বিড়াল সাজে; তাই প্রত্যহ আকাশবাণী, ম্রিয়মান।
হয়তো কখনও মুখোমুখি আলাপ হবে,চলমান ভারতীয় রেলে...

আমিতো শেষবার কলেজ পালিয়েছি,মেঘেদের বেলেল্লাপনায়--
অবকাশ রাস্তার বাঁকে;রক্তমুখী নীলা'তে কথিত অবৈধ অনুভূতি,
অন্ধেরা শূর্পনখাধীন ব্যর্থ আঁচলে; এ-অবগাহন সঙ্গীতরচয়িতায়...
যার বিয়োগে ধুয়ে যায় প্রকট-প্রচ্ছন্ন, জবাবে বঞ্চিত দম্পতি।

ততটুকু ঘুম পায়,যতটুকু অন্ধকার নামে শ্রীঘরে
ক্যানভাসে; আঁকি বদনামে আর নির্বাচনী প্রচারে।


 




মাত্র

রোদ্দুরের ব্যর্থতা শোনাও। ছটফটে প্রাণ আজ হন্যে
চাইলে ভেসে যাও; যৌবনসন্ধ্যে পান্থশালার বিদেশে
বা তুমি এসেছো নিচু গল্প ও কাব্যের মরূদ্যানে...
যেখানে ভিজে কাপড়ে আকাশ,সস্ত্রীক, অবশেষে।

কত চাঁদ গণিকা হয়, নগণ্য যোদ্ধার দুই পা-এ।
সবুজে পাল্টে যাওয়া সব ঋতু,দুঃখ গিলে নিলো-
মলাটের শরীরে লেখক, বাইশ বা চার-দুইয়ে দুইয়ে
প্রত্যহ,তুমি অভ্যাস করলে; আর,বৃষ্টি নিজেই পড়ল

জেনো;এভাবেই মন্ত্র নিয়ে,অচেনা সাক্ষাতে তাঁর
বিশ্রামের প্রাচুর্য চুরি করা কখনও হয়নি, নিশ্চুপে
অন্যের বিধ্বস্ত কর্মে বন্দী হয়েছে চিৎকার।
অথচ আজও ক্ষুদ্র, তবু,শেষ ইচ্ছা জীবিত;গোলাপে

নেশায় পুড়ে যাও ওগো জোনাকি, দেহে ছাই বোনো
                               পরাধীন পুরুষ', এখানে তাই,মানুষ নেই একটিও।