শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বনশ্রী রায় দাস


বনশ্রী রায় দাস

অন্বেষণ

অনন্ত তৃষ্ণায় আধপোড়া চাঁদ
বাহানায় ডুব-দেয় অন্য নদী জলে।
অবিন্যস্ত চুলে কাঁধে ঝোলা ,
ঝুল-পাঞ্জাবির পকেটে রেখে রক্ত চক্ষু
নিরুপায় সাঁতারু
ভেসে যায় অক্ষর-কুসুম
জীর্ণ ক্যালেন্ডারে কঙ্কালসার-প্রহর ।
পাঁজরে আঁকিবুকি বাতাস
সাফল্যের সাঁকো, মাঝ বরাবর
দুঃখ থাকে প্রতিক্ষায়।






অভিমান

মোরগ ডাকা ভোরে সূর্য পাপড়ি মেলে
আলোর সংরাগে লাজুক ঝুমকো লতা
নরম ঘাসে শিশির মাখে গঙ্গা ফড়িং
সাহসী হয় চেনা আঙুলের চঞ্চলতা।

নীল ঢেউয়ের বুকে অপরাজিতা রঙ্গ
দিন যদি ব্যাকরণ হীন ওড়না ভেজায়
অজন্তা ইলোরার মতো শৈল্পিক বিভঙ্গ
সহজিয়া ডানায় অভিমান ধুয়ে দেয়।

তোমার সহজ চোখের ঢেউ অন্তরঅন্ত
পানাফুলে হেঁটে যাই দ্বিধাহীন কথাকলি
ধ্বনি লোকে তরঙ্গ তোলে স্বরলিপি
কূল ভেঙে নদী হয় বৈষ্ণব পদাবলী।






সহজিয়া সুর

পালক খসিয়ে ময়ূরের মেঘলা দিনে
বাউলপনা চিঠির বিন্যাসে
কবিতা বলে নবীন- ডাকঘর।
কলাবতী মেয়ের নূপুরের-  আশ্লেষ,
জলের ছলাৎ বাজে
সোহাগী পায়ের পাতায়।

বৃষ্টি অঝোর ধারায় ,বৃষ্টিও
ঋতুর নিয়মে, মাটির ফাটলে হাত রেখে
ফুটবে ফুল নিজের অধিকারে।
এ সময় কালো বিড়াল- --
প্রতি দিন আর মরবো না জন্মের আগে
অর্ধেক আকাশে দেখ স্বস্তিক জাগে।
    





অন্ধকার দিক

রাতের অন্ধকারে এভাবেই বিক্ষত হয়,
নৈঃশব্দ্য বুকে হাঁটতে থাকে
পরাজিত সৈনিক ,
ধর্মীয় নৌকা ভাসে কালের বাতাসে ।

সূর্যাস্তের শেষ আলোয় নাড়ির টান,
রথের চাকায় ধর্মই লিখেছেন
বীর কর্ণের পরাজয় কিংবা
দ্রৌপদীর নীরব সহানুভূতি ।

ন্যায়ের নম্র স্বরলিপি গাথা মহাকাব্যে
আজও বাজে পাঞ্চজন্য শঙ্খ।







হৃদয়নগরী

ফুলের বুকে চেপে মধু চুষে নিচ্ছে
                               মৌটুসি-পাখি।
টুকটুকে আলতা রাঙা পা দুখানি
যমুনার জলে ডোবালে
খিলখিল হাসে বাঁশি ।
আরণ্য হৃদয়- বৃত্ত জুড়ে
"সুগন্ধিং পুষ্টি বর্ধনং" মন্ত্র,পাতায় রোদ,
মনুসংহিতায় পবিত্র প্রেম ধারা।