সামসুন্নাহার ফারুক
শেকড়ের তৃষ্ণা
চমৎকার ‘ভি’
ভঙ্গিমায়
পাখীরা যখন উড়ে উড়ে অদৃশ্য হয়
আকাশের নীলিমায়
কুয়াশার ইন্দ্রজালে ঢাকা পড়ে
পৃথিবীর বুক
হাওয়ারা উড়াউড়ি করে নক্ষত্রমেলায়
আন্মনে ডিনার সারে কৃষ্ণ বিবরে
আংরাখা পরা মেয়েটি নির্বাক চেয়ে রয়
উপেক্ষার আগুনে বুকে তার
ধিকিধিকি চিতার লেলিহান
পরিত্যক্ত জীবনের অবাঞ্ছিত আখ্যান।
নূতন সূর্যোদয় বদলে দেয় দৃশ্যপট
নির্জন সৈকতে মোমগলা জোছনায়
দলছুট পাখীর শেকড়ের তৃষ্ণায়
সোমরসে ডুবে প্রদীপ্ত অধ্যায়ে
বেপরোয়া অস্তিত্বে খোঁজে ঘনিষ্ঠ
সম্পাশ
স্পর্ধিত ইচ্ছেরা ষোড়শী শৈলীতে
অগ্নিবাসনায়
আকণ্ঠ পান করে
সময়ের মোহন বিলাস।
আবারও দেখা হবে
ভাবছ কেন?
আবার দেখা হবে।
বৃত্তের সীমানা ভেঙ্গে সুগন্ধী
স্বনন
আবারও দেখা হবে ইন্দ্রপুরে
কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে।
প্রভাতের ঊষসী আভায় বোহেমিয়ান
রোদ্দুরে
সেই গানে সেই সুরে
শরীরী সৌরভে মদির পেয়ালায়
সুচারু বাসনার মধুরিমা কম্পণে
ভিজবো দু’জন
ভিজাবো দুজনে।
জোনাক জ্বলা সন্ধ্যায় সান্দ্র
আঁধারে
ব্যাকুল তিয়াসার আবেগী উপচারে
থোকা থোকা অনুরাগ হাতে
আবার হবে দেখা
হেমন্তের জোছনা ভেজা রাতে
অন্য কোন স্বপ্নময় ছায়াপথে।
চাঁদনী
চাঁদনীর বন্যায়
পৃথিবী যখন ভেসে যায়
বসি গিয়ে ছাদের কিনারায়
চাঁদের শরীরে কলঙ্কের দাগে
অনেক কিছুই খুঁজি
তোমাকে জড়িয়ে আমাদের কথা
কানাকানি হয় বুঝি।
চিরায়ত অধ্যায়
বৈরী স্রোতে প্রবহমান তুখোড় সময়ে
সুখের পান্ডুলিপি পোড়ে
পুড়ে যায় কবিতার খাতা
বিক্ষুব্ধ কিছু মুহুর্তের কাছে
আত্মাহুতি দেয়
জীবনের চিরায়ত অধ্যায়
সুখময় সময়ের বর্ণিল হালখাতা।
একাকী প্রহর
ঘরের ভিতর অস্পষ্ট কিছু ছায়ার
নির্বাক ঘোরাফেরা
আমাকে ঘিরে ঈশারা ইঙ্গিতে
কিছু কি বলছে ওরা?
অথবা আবহাওয়ার কথা?
মাইনাস তাপমাত্রা হিটিং বন্ধ
গাঁয়ে কাঁটা দেওয়া অস্বস্তিকর
অনুভূতি
মোটামুটি জমে যাবার অবস্থা
ভীত সন্ত্রস্ত ভাবছি
আসছে কি সেই অনিবার্য নিয়তি?
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে ঝড়ো ঝাপটায়
বাইরে উড়ছে বরফকুচি
ঘুরছে হলুদ পাতা চক্রাকারে এমন
টুইস্টার ঘূর্ণিতে অজানা গন্তব্যে
ঘোরগ্রস্ত ছুটছে যেন সরব জীবন
বৃদ্ধ ওক বৃক্ষটির মত নই
ছাল-চামড়া আমার বিবর্ণ মলিন
গুণছি নিঃসঙ্গ প্রহর
একাকী বেঁচে থাকার দুঃখবন্তী দিন
জানি না যেতে হবে কত দূর
শুধু জানি চারপাশে এখনও
সীমাহীন রোদ্দুর।