অন্তরা
সিংহরায়
বসন্তের প্রথম চিঠি
দিনগুলো
কাঙ্ক্ষিত ছিলো,তবুতো
ফিরতে হয় শেকড়ের
টানে।
বলতে পারো সেই
বাজপাখি,
ঠোঁট-নখ পাথরে
ঠুকরে ঠুকরে ভাঙছে,
নখরে তার সেই
আঁকড়ি কোথায়!
বাঁচতে হবে শুধু
আরো কয়েকটা বছর।
ডানা ছিঁড়ছে,লেপটে থাকা পুরাতনের
নির্মূল চায়,যন্ত্রণাদায়ক জেনেও শেষ চেষ্টা।
জানি পরিযায়ীর
বাসা হয় না ,
ডানায় সময় বেঁধে
সে আসে বাঁচার তাগিদে ।
উড়ে গেলে তটে পড়ে
থাকে তার পায়ের চিহ্ন টুকু।
ঢেউ-তোলা পাড়ে মুছে যাবে সে সব একদিন
তবুও তো আঁচড়ের
খাঁজে ক্ষত দগদগে ।
ভুলতে পারিনি আজও,
আমার আগুন ছোঁয়া
বসন্তের প্রথম রঙিন চিঠি।
বৃষ্টি ও কবিতা
বেশ কয়েকদিন হল ,
প্রখর রৌদ্রের
ঋতু
বছরের মতো
ফুরিয়েছে।
বিষন্ন সত্য
কিছু ,বর্ষার আকাশে
জমাট বেঁধে ঘোর
হয়ে আছে।
ভিটামিনের অভাবে
লাল গোলাপের চারাটা
দিন দিন নিস্তেজ
হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে কবির
শব্দগুলো এখন আর
নীলিমার চাঁদ
ধরতে যায় না।
বেঘোরে ঘুরে ঘুরে
বেড়ায় ।
চোখ বুঝে ডুবুরীর মতো
কথা কাহিনীর দেশে থেকে একটা নিঁখুত
প্রেমের গল্প
লিখতে চাইছে কাদম্বরী।
এই সবের মধ্যে
হঠাৎ মেঘদূত এসে,
বেলকনিতে গোলাপী
রঙের খামে
আঁটা একটা চিঠি
ফেলে গেলো ।
তারপর,,
কী হল ?
কী আবার হবে ,,,,
সজোরে বৃষ্টি
নামলো বারান্দায়
আর একটা কবিতার
জন্ম হল।
বাঁশিওয়ালা
বাঁশিওয়ালা,
এখনো কী তোমার
বাঁশি বাজে ।
অচিন মায়াপুরের
কোন এক বৃক্ষশাখা
এখনো কি বাতাসে
ঢালে সেই সুর মন্ত্রণা ।
আর সেই সুরে জীবন
মরণ এক হয়ে যায়,
কিশোরীর বুকে
জাগে কুসুম কুসুম প্রেম ,
জীবনের সব হারিয়ে
এতটুকু সুরের খোঁজে
এখনো কী ঝোড়ো
বাতাসে নীল রং লাগে ।
চির দুঃখীর
পাঁজরে আঁচড়ে পড়ে সুপ্ত ব্যথা ,
ঘোর বর্ষার পর
আবার বসন্ত সেজে ওঠে
এখনো কী সুরের
মূর্ছনায় শৃঙ্খল ছিঁড়ে
রাধারানীর নূপুর
বেজে ওঠে ঐ যমুনার তীরে ।
বাঁশিওয়ালা ,,,
ও ,,বাঁশিওয়ালা
এবার সে সুর
বাজাও,
যার ছোঁয়ায়
অভিমানী
কাদম্বরীর সেজে উঠুক নন্দন কানন
জীবনতরুতে আবার
ফুটুক অব্যক্ত প্রেমের কদম ।
বাঁশিওয়ালা ,,,
এবার সে সুর বাজাও,
ভূগর্ভে নিমজ্জিত
কন্যা ভ্রূণের নিদ্রা ভাঙুক
অথবা গণ ধর্ষিতা
নারী অন্ধকূপের চৌকাঠ ডিঙিয়ে
এিশূল হাতে আসুক
জন সম্মুখে ।
যুগ যুগ ধরে যে
নারী প্রেম বোঝেনি
শুধু মাতৃত্ব
বুঝেছে আর ঝাঁপ দিয়েছে
খিদে আর
প্রয়োজনের জহর আগুনে ,
এমন সুর বাজাও
বাঁশিওয়ালা ,,,
তলিয়ে যাবার আগে
সে নারী যেন
একবার হলেও জীবৎ
স্পন্দন অনুভবে শরীরে ।
এমন সুর বাজাও
বাঁশিওয়ালা ,,,,
এমন সুর বাজাও
বাঁশিওয়ালা।