সুবীর ঘোষ
স্বপ্নসোনা নদী
আশ্চর্য আলোর দিকে বয়ে যায়
স্বপ্নসোনা নদী
এ নদীর তীর ঘেঁষে পড়ে থাকে আমাদের
ফসলসম্ভব জমিজমা
বাস্তুহারা চিন্তাবিদ ভাসিয়ে
দিয়েছে তার আড়বাঁশিগুলো
জীবনের কথা বলা কখন সমাপ্ত হয় তবে ?
প্রথম জীবনে দীপ্তি কিছু যেন বেশি
থাকে
ঝাঁঝ থাকে কড়া
নদীতীরে বসলেই রাখালি বালিকা এসে
রামধনু দেয়
এখন দড়ির মতো পড়ে থাকে নদী
যৌথপরিবার ভাঙ্গা শক্তিহীন
প্রান্তিকের কাছে
তার তীর তার গ্রাম তার গাঙচিল
একদিন সব ছিল আজ কিছু নেই
এখনও কী ''তাহার
ধূসর ঘোড়া চরিতেছে নদীর কিনারে''
জানা নেই ।
কফিহাউসের সিঁড়ি
এখানেই প্রথম ইনফিউশন দেখি
গৃহত্যাগী ভালোবাসা কাগজের টুকরো
হয়ে
সিঁড়ির ধুলোয়
পংক্তিজীবন থেকে যে রাস্তায়
প্রত্নজীবন
সেখানেই পঞ্চযজ্ঞ ভুক্তি বিচক্ষণ
বয়সে নিচুর মাটি পুষ্পময় হবে
আশা ও ভরসায় কত মেঘজন্ম ভাবি
ওদিকে আগুন দেখি সরবে ইশারা
তবু কিন্তু অথবা নতুবার ভিড়ে
তথৈবচ থেকে যায় হাওয়ার নিশান
নিঃশ্বাস
সেই উন্মুক্ত স্টেশনে সেদিন
আমরা দুজনই মাত্র ট্রেন ফেল
করেছিলাম
কোনো হতাশা দেখিনি বনকুলের ঝোপে
দুশ্চিন্তা ছিল না তোমার সোনালি
লেডিজ ঘড়িতেও ।
অম্লানবদনে বললে- হেঁটেই চলে যাবো
।
হেঁটে হেঁটে সাঁইত্রিশ কিলোমিটার !
--- কেন, রাস্তায়
কোনো না কোনো ট্রেন পেয়ে যাবো ।
--ট্রেন কী বাস যে হাত দেখালে
দাঁড়াবে ?
এ সব তর্কের কোনো মীমাংসা হয়নি সে
দিন ।
আমরা অন্ধকার গাছের ডালে উঠে
ঘুমিয়েছিলাম সারা রাত ।
কেউ টের পায়নি । না - কেউ না --
না ডাকাত না সাপ না প্যাঁচা না
বৃষ্টি ।
সেই বাহুসন্ধির খোঁজ পেতে গিয়ে
আমাকে গ্রাম থেকে শহরে আসতে হয়েছে
হাট ছেড়ে বাজারের পথ ধরতে হয়েছে
তুমি কোথায় ও কেন যে আমার হাত ছেড়ে
দিলে জানি না ।
কত বাসের জানলায় আমার নিঃশ্বাসের
বাষ্প লেগে আছে
আমি অনেক ঘুরেছি এই ঠিকানাবিহীন
পৃথিবীতে
কেউ তোমাকে দেখেনি তা কী হয় !
কত বাসের জানলায় এসে বসেই নেমে
গেছি
তোমার নিঃশ্বাসের বায়োমেট্রিক
মেলেনি ।