পিয়াংকী
পরস্পর
ছায়া আর মায়া ...
বড় অদ্ভুত দুটো নাম
বিষমবস্তুও বটে
দুটি বিপরীতধর্মী অনুষঙ্গ
একজন কাঁদলে অন্যজন হাসে
আমি নিরাকার অবয়ব সেজে ওদের সাথে নাচি
খুলে রাখি ঘুঙুর
পা মেলানোর অজুহাত খুঁজতে খুঁজতে
একদিন ওরাও সুর তাল লয় বুঝে যাবে ,
মিশিয়ে নেবে দৈহিক সত্ত্বায়
আমি সেদিন
শরীরে নক্ষত্র গেঁথে নিয়ে উর্ধ্বপাতিত হবো
পেরিয়ে যাবো ভৌগলিক সবকটা স্তর
মোক্ষলাভ ছেড়ে যাবে মায়াকে
ছায়া কাটিয়ে উঠবে নির্ভরতা
আমি মহাকাশ বুনে নেবো খোলা নগ্ন পিঠে ।
নিমকাঠ আলতা চুবিয়ে
সময় থমকে যাচ্ছে বারবার বরাবরের মতো
তুমি আগুন চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছ সেই কতকাল হলো
উল্কি আঁকা আমার মায়ের পাদুটোতে আজও রংয়ের
শব্দ শুনি
আলতার চোখরাঙানী ভয় ধরায় বুকের ওই কোণের খুপড়িতে
বাবা নিমগাছ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে উঠোনের ঠিক মাঝখানটায়
কোনো তাপ নেই উত্তাপও প্রায় ভঙ্গুর
আমি ভুলগুলোকে জড়ো করি
প্রায় নিশ্চুপ কান্ডের গোড়ায় চোখের জল ঢালি
মাটি স্যাঁতসেঁতে হয় কিন্তু ওর ডালপালা শুকনো
তবুও হলুদ বিকেলে কাঠের গন্ধে আমার গা গুলিয়ে ওঠে
নিমকাঠে বাবাকে পোড়াই
রজনীগন্ধায় মা
কাঠ পুড়ে ছাই হয়
ফুল শুকিয়ে ঝুরঝুরে বালি
বাবা পোড়ে না মা ভেজে না ওরা আজও জীবিত ॥
অক্ষরে মুক্তি
নিয়মমাফিক একটা ঠোঁট খুঁজি রোজ
প্রেমিকের নয় কোটিপতি কোনো ব্যক্তির নয়
এমন একটা ঠোঁট যেখানে লেখা আছে কালের ঠিকানা
উপড়ে তুলে আনবো কয়েকটা অক্ষর
প্রত্নতাত্ত্বিক ডাকবো ঐতিহাসিকরা আসবেন
বিস্তর আলাপ আলোচনা হবে
বৈঠক হবে মুহুর্মুহু
সভা সমিতি জন্ম নেবে ,
খুঁজবে সবাই অক্ষরের অর্থ
অকৃতকার্য হবার উৎসবে
সবাই সুস্থ সুন্দর হয়ে উঠবে ক্রমশ
চিকিৎসা মুলতুবি করে হায়ারোগ্লিফ লিপি নিয়ে
বেদম অট্টহাস্য হবে
ফেটে পড়বে পৃথিবী
তারপর সমস্তরকম নিয়ম
উনুনের গনগনে আঁচে বিসর্জন দিয়ে
ঈশ্বরের বর্ণপরিচয় নিয়ে বসবো সকলে
খানিকক্ষণ স্বরবর্ণ আর ব্যঞ্জনবর্ণ
কচলে নেবার পর যখন উঠে দাঁড়াব
দেখবো পাখিটা বসে আছে বাঁ কাঁধে ,
ওর ঠোঁটে লেগে আছে মুক্তির অক্ষর ॥