তাপসকিরণ
রায়
বিদ্রোহ
বিদ্রোহ, তবু কবিতার মাঝ খানে
এক ভুখা
মানুষের মন থেকে রং খসে যেতে যেতে
সেও ঘষে-মেজে
নিচ্ছে তার লেখনী।
কবিতা
বিদ্রোহী হতে হতে তার আস্ফালন দুহাত
আকাশে উঠে
আসে।
তার
সন্ধিক্ষণ'
ভেঙে বেরিয়ে আসে কিছু শব্দের বীজ।
সূক্ষ্ম
জীবনের মাঝে লুকিয়ে থাকে শব্দের ঝাঁক
অনর্গল
বেরিয়ে আসে সে সব রহস্যময ভাষ্য,
ভেঙে
গুড়িয়ে যাওয়ার আগে
গান হয়ে উঠে আসে সংগ্রামী কবিতা।
পাখি
সমুদ্রের
দ্বীপে দ্বীপে যে পাখির বাস
জৈব সে
ভালবাসার এক পথিকঘর--
বারবার
ভেঙেচুরে আবার তৈরী হচ্ছে।
পানপিক
সে তার
বসন্তের পলাশ তুলে নেয়--
খোঁপায় গুঁজে
নেয় কৃষ্ণচূড়া,
পানপিকের লাল
ঠোঁট তুলে ধরে--
ভালবাসা
কোথায় কোথায় যে গজিয়ে উঠছে !
রাজহাঁস
তুমি আমি কেউ
বুঝি তার ঠিকানা রাখিনি।
উতাল নদীর এই
দুর্দম বয়ে যাওয়ার মাঝে
এক রাজহাঁস
ভেসে যাচ্ছে দেখো--
জলে থেকেও
জলে তার শরীর ভিজছে না !
ভালবাসার রেসিপি
আলোকিত
পাখাগুলি জ্বলে যাচ্ছে--
দুরন্ত
রাখালের মুখে ফ্লুট,
মাঝরাতের
শিকল ছেঁড়া প্রেমিকার এক দঙ্গল প্রেমিক
নাচের দমকে
ছুটে যাচ্ছে শরীর, পিচ্ছিল ময়লা ডুবে
এক নারী তার
যথার্থ অর্থহীনতায় ভুগতে ভুগতে
তারপর এক
অচিন পথিকের গলে মালা দিয়েছিল।
সংসারে সুখ
চাই,
ভালবাসার অনর্গল ভাষা চাই,
তীব্রতর
বাতির সম্মুখে চুপচাপ তোমার মুখের বলয়
অসময় জ্বলে
ভস্মীভূত হতে দিও না--
একটা শর্তের
বশীভূত কিছু মন্ত্রপূত উচ্চারণ ছিল,
গভীরতায় বিরহ
ও ভাঙনের মুখ ছিল,
সহ্যের চরম সীমায়
যদি তুমি
হেসে দিতে পারো--সে সফল একটা জীবন সংসার--
একটা লালিমা
মুখের বেদনা ধরে আছে শয্যার আলেখ।
কিছু মুদ্রার
বিনিময়ে দেহ খুলে দিতে দিতে ভালবাসা নিমজ্জমান
ভালবাসার রেসিপি
থেকে কিছু বেছে নিতে নিতে তুমি বল--
ভালবাসি, ভালোবাসি, আই লাভ ইউ
সবুজ ঘাস
শোনো আমিও
কবিতা লিখি,
খালাসী হয়ে
ট্রাকের দড়ি ধরে ঝাপ দিই নিচে
পিঠের বোঝায়
নতজানু দেহ
মাটির বড়
কাছাকাছি থেকে গন্ধ পাই কবিতার বুনুনির।
সেখানেই
বীজবৃক্ষ,
সময় প্রবাহে শুকনো ডাল,
কি ভাবে জন্ম
নেয় এক মৃতদেহ থেকে পুনর্বার সবুজ ঘাস
রিকশার
প্যাডেল চেপে
ঘাম
রোদ্দুরের শরীর পেরিয়ে
শেষে ফিরে
আসি আপন ঘরে। .
নির্জনতার
আড়ালে সেও চোখ রাখত
সেও আঁচড়
কাটত কাগজে,
আর সেখানেও
ফুটেছে ভাষা,
মনের ভুখা মাটিতে
কোথাও তো
কবিতা গাছ হয়ে জন্ম নিচ্ছে
তার কঠোর
পাজরেও অনাহারী সংগ্রাম চলছে।