মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯

শর্মিলা ঘোষ


শর্মিলা ঘোষ

কিংশুক সাজ"

জরায়ুর অভয়ারণ্য থেকে বেরিয়ে এসেছি
তৃতীয় বিশ্বের দেশে,
বসন্তবিকেলে সেজেছি কিংশুক সাজ,
যজ্ঞসম্ভূতা কোনো একলা নারী
যেমন দেহে তপ্ত আগুন ধরে,
তেমনই জ্বলন্ত কোনো
হিসেব নিকেশের হাত ধরে
কাটিয়েছি ঋতুকাল,
মহাকাল এসে ফিরে গেছে শূন্য হাত,
আধুনিক বিশ্বজুড়ে শিকড়ের নির্যাস নিয়ে
বেঁচে থাকা নারী,
সর্বগ্রাসী সময় কে দূরে ঠেলে
কর্পূরের মতো স্বপ্ন উড়ায়,
নারী একলা চিরন্তন চিরকালীন সত্য শৃঙ্খলে
সংসার বাঁধার ইতিহাস।






পাণ্ডুলিপি

আবার আঠাস বছর পর রূপনারায়নের তীরে
বালির চড়ায় অভিসারে এসেছে চাঁদ,
পূর্ণিমার আলোর সাথে
চুম্বন সোহাগে কিছু কাঁচা পাকা মিলন,
বড় কঠিন এ রাত,
কতদিনের বিচ্ছেদ
আঁকা ছিল কলেজ ক্যান্টিনে ,
আর কিছু কবিতার খাতায় কালো অক্ষরে,
হঠাৎ এতবছরের কবিতা রক্ত মাংসে পরবাসে,
একলা বাতিঘরে প্রদীপ শিখার মতো জেগে আছে,
আবার আঠাস বছর পরে
জীবন মরণের সীমানা ছাড়িয়ে
দুটো প্রাণ বেঁচে থাকে কবিতার পান্ডুলিপিতে;
ছক কাটা  এক্কাদোক্কা ঘরটা ফিকে হতে হতে
ঘুঁটির ওজন মাপে,
সময়ের কাঁটাটা গির্জার ঘড়িতে
জোয়ার ভাটা নির্দেশ করে।







 জৈষ্ঠ্য

রোজ সকালে সূর্য ওঠে
সহজ সোজা রোদ
কিন্তু যেন ক্রোধ জমেছে
জন্মের শোধবোধ।

পাতাবাহার ফুলের টবে
একটু বুঝি ক্ষোভ
তেষ্টার জল অন্য মেটায়
সুদ আসলের খোঁজ।

প্রখর জৈষ্ঠ্য ভরা আগুন
সর্বগ্রাসী বিজ্ঞাপন
এমন দিনে রক্তকরবী
শূন্য খাঁচায় প্রেম যাপন।

কংক্রিটেতে ঝলসানো রোদ
ভিন্ন স্বাদের মরুদ্যান
এমনি করে সভ্যতা মাপে
আধুনিকতার পূন্যস্নান।

যেদিন আকাশ গাইবে
আবার সবুজ প্রেমের জয়গান
সেই যজ্ঞে আমিও হোতা
শেকল ভাঙা পরিত্রাণ।