মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯

সুমন দিন্ডা


সুমন দিন্ডা

রাজনীতি

কাকতাড়ুয়া যখন ফসলের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে
আমি তখন সভাসদ নিয়ে বাজার খুঁজি
ইলিশের মড়ক লাগলে যাতে পুঁজি নষ্ট না হয়
ধর্ষিতা ফসলের যোনি বেচে ডলার আনি
আর পাবলো নেরুদা আবৃত্তি করে মহান সাজি
আমার নিজস্ব কোনো রং নেই, আকারও নেই
কেবল একটা মিশ্রণ যা বিস্ফোরণ ঘটাবে না
তার সাথে মিশে নিজেকে আপডেট করি
শিশিরের সবকটা দ্রবণ আমাকে সমীহ করুক
মাথা নীচু করে গলিয়ে দিক সমস্ত পাপগুলো
আমার উদার বুকে এসি বারান্দায় সবাই স্বাগত
কাকতাড়ুয়া হয়ে ছড়িয়ে পড়ো বাগানে বাগানে
ছিনিয়ে আনো সমস্ত ফসলের প্রতিরোধ
একটার পর একটা আগুন জ্বেলে ছাই বানাও
আমি নীরো হয়ে বেহালাতে উৎসাহ দিতে থাকি।







এ বসন্ত চাই না

যে বসন্তে পলাশ ঝরে যায় শব্দহীন
গাঢ় রঙ মেখে রাজপথে ডোবে লাশ
পাশ করার পরও চাকরি না পেয়ে
দুধের শিশু কোলে অনশনে বসে মা
মন রাঙানো বুদ্ধিজীবীরা ফিরিয়ে নেয় মুখ
সততার দম্ভ বাতাসে হারিয়ে একরোখা
সে বসন্ত আমি চাই না

যে বসন্ত রাজাকে স্বেচ্ছাচারী বানায়
মাথা নীচু করে আগলে রাখে অপরাধ
দিনের পর দিন আলো নিভিয়ে ভাবে
কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না
গাছেদের অত্যাচারে যখন পাখিরা ঘরছাড়া
কোকিলকে বোঝাতে হয় আচ্ছে-দিন আসছে
সে বসন্ত আমার জন্য হতে পারে না

নদীর পাড়ে দাঁড়ানো বালিগুলো
যেদিন ঝড় হয়ে ছড়িয়ে পড়বে ঘরময়
পথের পিচ দারুণ আক্রোশে বইতে থাকবে
প্রতিবাদী নালা বরাবর
সেদিন যে আগুন জ্বলবে পর্দা সরিয়ে
সেই আনবে চূড়ান্ত কৃষ্ণচূড়া সুখ
সেই বসন্তের আশায় গাছ হয়ে আছি ঘাসের বনে।







অরাজনৈতিক

অঙ্কুরোদগম হওয়া পোস্টারে সবুজ পাখির ঝাঁক
মিলের চিমনি বেয়ে নামছে ফেলে দেওয়া আকাশ
দূরে ঘুমন্ত লাঙলের বউমেয়েরা অনাহার ছেঁচে
স্মার্টফোনের বারান্দায় ইজিচেয়ার পাতছে
সময়ের ডাক পাঠানো হাতঘড়ির জানলায়
কয়েদ হয়েছে সোনাঝুরি রোদ
কাকের বুকে ঘর হারানো সংশয় কাটছে না
কারা যেন মাঠটাকে তুলে নিয়ে গেছে ডাস্টবিনে
কদিন পরে ওখানে বড়ো পক্ষের একটা সভা হবে
ফ্রি তে এত এত খাবার, মাছিরা ভিড় করবে নিশ্চয়

সব ফিল্ম শেষ হলে রাতের স্টেশন বসে দেখছে
জ্যোৎস্না মেখে উড়ে যাচ্ছে কয়েকটা জোনাকি।