মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯

সৌরভ বর্ধন


সৌরভ বর্ধন

যে-মানুষ নুনের পুতুল


তাকে কাছে ডাকবার আগে, অশ্বে চড়াবার আগে   ভালো
'রে দেখে নিই তার বাহ্যিক গঠন - সুললিত অসৎ, দেখি
চোখের অর্ধেক জানালা ঢাকা। আলো উড়ে যাচ্ছে ক্রমশ।
আমের গুঁটি, কাঁঠালের ছড়িয়ে ছিটিয়ে। তার ফোনের ওপর
চমক এসে পড়ছে। দুটো পাল্লার মাঝে তারার মুখ যেভাবে
আবহাওয়া দপ্তর হয়ে উঠছে, সেভাবে নারকেল গাছ আর
সেভাবে স্মৃতির তালগাছ নাচছে। অন্ধকার হয়ে আসা লেবু
গাছে জলের এঁটো লেগে আছে। তবু বারবার চমক চমক।
অনর্গল লবন পড়ছে।








বান্ধবী বলেছিল নতুন চার্জার লাইটে গভীর আঁধার পেতে
কবিতা লিখো আমি চলে গেলে, আমি না থাকলেও লিখো
চড়ুইকে ভুল করে হামিং বার্ড। তবু লিখো দিনের বেলায়ও
তোমাদের উঠোন-পুকুর কাঁঠাল আর আমের ছাতায় ক'রে
নেমে আসে আকাশ, আকাশেই নৌকা চলো। গর্জন হলেই
সে কি ভয় পায়, ফোনের ওপর চমক এসে পড়ে! সন্ধ্যায়
ঘরের জানলা দিয়ে ইলেকট্রিকের আলো, কোল বিছিয়ে
শুয়ে থাকে জমা জল, তার ওপর আলো, তার ওপর ব্যঞ্জন
বৃষ্টির ছাঁট। আমি ঠান্ডা অবকাশ কানে মেখে নিই। কানেরা
ভীষণ কথা শুনতে পারে, যেকোনো বকটিয়াশালিকচড়ুই।









মেঘের গায়ে শ্যাওলা জমতে দেখলে আমি আধুনিক অথচ
মেঘের শরীরে যে এতো শাপ লেপ্টে থাকে তাকে তো অন্ধ
বলছে না কেউ, সুদূর থেকে হেঁটে আসছে যার হাঁড়ির শব্দ
আজ তার হ্যারিকেন জ্বালার সন্ধ্যা, পোকা উড়বার আলো,
তাড়াতাড়ি শুয়ে শুয়ে না ঘুমানোর রাত। পাতা আটকে যাবে
আজ সারা গায়েগাঁয়ে। সারারাত পৃথিবী গঠনের পার্বণ হবে।
তারপর রাতের পিঠ থেকে হঠাৎ পড়ে যাবো খুব সকালে!









-- এমন ছোটখাটো ভবিষ্যৎ আমি দেখতে পাই আকছাড়।
এবার তার ভেতর দ্যাখার গম্ভীরা। খুব মজা হবে সারাদিন।
ঠাকুমা উঠে গ্যাছে কাক ভোরে, এগারো কাঠা বাড়ির থেকে
একটা একটা পাতা, খুঁটে নেয় তারা ঠাম্মাকে, ঝুড়ির মধ্যে
ভেজাভেজা শুকনো প্রাণ জড়ো হয়। চুল্লিতে দেওয়ার আগ
পর্যন্ত শুয়ে ঘুমন্ত ঘিয়ের গন্ধে ঠান্ডা ভাত - বেমানানরকম।
আমি উঠে আসি এরপর, আমার সাথে ওঠে না কেউ, পক্ষী
না, ঘোড়াও না। পতঙ্গদেরও এসময় দেখি না কোথাও।









আমরা যেমন ঘরের মধ্যে গাছ গড়ে তুলি, গাছের মধ্যে খুঁজি
ঘর। আমরা কেমন তুলোর পুতুল, নুনের পুতুল গাঁধার পিঠে।
আমরা যেমন কাছে ডেকে ঘোড়াকে বলি অশ্ব হতে। তেমন
আমি বসে আছি তো বসেই আছি শূন্য কৌটোর কাছে। যেন
তাকে গলাধঃকরণ করা খুব সহজ, খুব শান্ত পুতুল সে।